Social Media Influencer: সোশ্যাল মিডিয়ায় মাত্র ১০০০ ফোলোয়ারে মাসে কত আয় জানেন?

Social Media Influencer earnings: সোশ্যাল মিডিয়া ইনফ্লুয়েন্সার মানে, ইনস্টাগ্রামে নিখুঁত পোস্ট, দুর্দান্ত সব পোশাক, প্রচুর প্রচুর উপহার - সব মিলিয়ে স্বপ্নের জীবন। তবে, বাহ্যিক সাফল্যের পিছনে একজন সোশ্যাল মিডিয়া ইনফ্লুয়েন্সার ঠিক কত টাকা উপার্জন করেন?

Social Media Influencer: সোশ্যাল মিডিয়ায় মাত্র ১০০০ ফোলোয়ারে মাসে কত আয় জানেন?
প্রতীকী ছবি
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Jun 27, 2022 | 2:56 PM

কলকাতা: সোশ্যাল মিডিয়া ইনফ্লুয়েন্সার – ইনস্টাগ্রামে নিখুঁত পোস্ট, দুর্দান্ত সব পোশাক, প্রচুর প্রচুর উপহার – সব মিলিয়ে যাকে বলে স্বপ্নের জীবন। আজকের সোশ্যাল মিডিয়া বিস্ফোরণের দিনে, সকলেই হতে চাইছে ইনফ্লুয়েন্সার। চলছে লাইকের লড়াই। ক্রমেই বাড়ছে ইনফ্লুয়েন্সারদের সংখ্যা। ফলে বাজার এখন আগের থেকে অনেক বেশি প্রতিযোগিতামূলক। তবে, এই সকল সাফল্যই বাহ্যিক। সত্যি সত্যিই কি প্রচুর উপার্জন করেন একজন সোশ্যাল মিডিয়া ইনফ্লুয়েন্সার?

অধিকাংশ সোশ্যাল মিডিয়া ইনফ্লুয়েন্সারদের মূল উপার্জন আসে ইনস্টাগ্রাম বা ইউটিউবের মতো সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্ট থেকে। এছাড়া, ব্র্যান্ড, বিজ্ঞাপন ইত্যাদি থেকেও বেশ কিছু অর্থ উপার্জন করে থাকেন তাঁরা। ২০২১ সালে ‘হাইপারঅডিটর’ সংস্থার পক্ষ থেকে সোশ্যাল মিডিয়া ইনফ্লুয়েন্সারদের নিয়ে একটি সমীক্ষা পরিচালনা করা হয়েছিল। সেই সমীক্ষা অনুযায়ী একজন ইনফ্লুয়েন্সার প্রতি মাসে গড়ে প্রায় ৩০০০ ডলার, অর্থাৎ, ভারতীয় মুদ্রায় আড়াই লক্ষ টাকারও বেশি রোজগার করে থাকেন।

তবে, বিভিন্ন অ্যাকাউন্ট ভেদে আয়ের ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য পার্থক্য রয়েছে। এটা অনেকটাই নির্ভর করে ফলোয়ার্স বা অনুসরণকারীদের সংখ্যার উপরে। যাদের ফলোয়ার্স সংখ্যা ১,০০০ থেকে ১০,০০০-এর মধ্যে, তাদের বলা হয় মাইক্রো-ইনফ্লুয়েন্সার। এদের আয় প্রতি মাসে গড়ে ১,৪২০ ডলার বা ১ লক্ষ ১০ হাজার টাকা। তবে, এদের মধ্যে মাত্র ২২.৯৯ শতাংশ জানিয়েছেন তাঁরা সোশ্যাল মিডিয়া থেকে অর্থ উপার্জন করতে পারেন। অন্যদিকে, মেগা-ইনফ্লুয়েন্সার, অর্থাৎ, যাদের ফলোয়ার্সের সংখ্যা ১০ লক্ষের বেশি, তাদের প্রতি মাসে গড় আয় ১৫,৩৫৬ ডলার বা ১২ লক্ষ টাকার বেশি।

কোনও ইনফ্লুয়েন্সার কোন বিষয়ে পারদর্শী, তার উপরও নির্ভর করে তাদের রোজগারের পরিমাণ। একজন গড়পড়তা ইনফ্লুয়েন্সার প্রতি ঘন্টায় ৩১ ডলার বা প্রায় আড়াই হাজার টাকা উপার্জন করেন। একই সময়ে একজন সৌন্দর্য বিশেষজ্ঞ ইনফ্লুয়েন্সার প্রতি ঘন্টায় প্রায় এর দ্বিগুণ উপার্জন করে থাকেন। দেখা গিয়েছে এই বিভাগের ইনফ্লুয়েন্সাররাই সর্বাধিক উপার্জন করেন। এই বিভাগের কয়েকজন মেগা-ইনফ্লুয়েন্সার তো প্রতি ঘন্টায় ১৮৭ ডলার বা ১৪ হাজার টাকারও বেশি রোজগার করে থাকে। সামগ্রিকভাবে দেখা গিয়েছে ইনফ্লুয়েন্সারদের উপার্জন বেশি হয় – সৌন্দর্য, প্রাণী, ব্যবসা ও বিপণন এবং ফিটনেস ও খেলাধুলা বিভাগে।

তবে, সোশ্যাল মিডিয়া ইনফ্লুয়েন্সাররা নিজেরাই জানিয়েছেন, শুধুমাত্র সোশ্যাল মিডিয়া থেকে হওয়া আয়ের উপর নির্ভর করে থাকাটা তাদের পক্ষে সম্ভব নয়। ‘হাইপারঅডিটর’-এর সমীক্ষায় অংশ নেওয়া ইনফ্লুয়েন্সারদের মধ্যে মাত্র ৪.২৭ শতাংশ জানিয়েছেন, তারা শুধুমাত্র সোশ্যাল মিডিয়া থেকে হওয়া আয়ের উপরই নির্ভরশীল। গড়ে, এই তারা তাদের সোশ্য়াল মিডিয়া অ্যাকাউন্ট থেকে প্রতি মাসে ৫,৯১২.৮ ডলার বা ৪ লক্ষ ৬২ হাজার টাকার বেশি উপার্জন করে থাকে। পাশাপাশি, ৪০.১৫ শতাংশ ইনফ্লুয়েন্সাররা জানিয়েছেন, বিভিন্ন ব্র্যান্ডের প্রচার তাদের উপার্জনের সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ উৎস। আর ১৪.৯২ শতাংশ ইনফ্লুয়েন্সার জানিয়েছেন, সোশ্য়াল মিডিয়া অ্যাকাউন্টগুলি ব্যবহার করে তারা তাদের অন্যান্য কার্যক্রমের প্রচার করে থাকেন।

কোভিড-১৯ মহামারিতে যখন বিশ্বের বেশিরভাগ ক্ষেত্রের চাকুরিজীবীদের উপার্জন কমেছে বা একই থেকে গিয়েছে, সেই সময় সোশ্যাল মিডিয়া ইনফ্লুয়েন্সারদের কাছে এই মহামারি প্রায় আশীর্বাদ হয়েছে। ‘হাইপারঅডিটর’-এর সমীক্ষায় ৪৭ শতাংশ ইনফ্লুয়েন্সার জানিয়েছিলেন যে, মহামারির সময়ে তারা আগের থেকে আরও বেশি অর্থ উপার্জন করেছেন। তবে, ৪৯.৬৮ শতাংশ ইনফ্লুয়েন্সার জানিয়েছেন, মহামারির সময়ে প্রতারণার শিকারও হয়েছেন তাঁরা।

তবে, সফল সোশ্য়াল মিডিয়া ইনফ্লুয়েন্সারের কাজটা কিন্তু মোটেই সহজ নয়। নিজেদের সোশ্যাল অ্যাকাউন্টগুলির পিছনে দিনের প্রায় প্রতিটা মুহূর্তই ব্যয় করে থাকেন ইনফ্লুয়েন্সাররা। কনটেন্ট পোস্ট করা, কনটেন্ট তৈরি করা, ফলোয়ার্সদের সঙ্গে চ্যাট করা – সব মিলিয়ে একজন গড় চাকুরিজীবী তাঁর কাজের পিছনে যতটা সময় দেন, তার থেকে অনেক বেশি সময় ইনফ্লুয়েন্সারদের তাদের কাজের পিছনে ব্যয় করতে হয়।