
কলকাতা: এসআইআর নিয়ে মতুয়াদের একটা বড় অংশের মধ্যে আতঙ্ক বাড়ছে। মতুয়া ইস্যুতে লাগাতার বিজেপিকে তোপ দেগে চলেছে তৃণমূল কংগ্রেস। আসন্ন বিধানসভা ভোটে এর প্রভাব কি পড়বে? এই প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে বঙ্গ বিজেপিতেও। এই আবহে মতুয়া ইস্যুতে বঙ্গ বিজেপির নেতাদের ভাবনাচিন্তা না করতে বার্তা দিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। মঙ্গলবার কোর গ্রুপের সঙ্গে বৈঠকে শাহ জানিয়েছেন, ভারতে আসা অমুসলিম সব শরণার্থী নাগরিকত্ব পাবেন। মতুয়াদের বিষয়টি তিনি নিজে দেখে নেবেন বলেও জানান।
একুশের বিধানসভা নির্বাচনে মতুয়াদের একটা বড় অংশের সমর্থন পেয়েছিল বিজেপি। এসআইআর ইস্যুতে মতুয়াদের পাশে দাঁড়িয়েছে রাজ্যের শাসকদল-সহ সব রাজনৈতিক দলগুলি। এই পরিস্থিতিতে বিজেপির মতুয়া ভোটব্যাঙ্ক অটুট থাকবে কি না, সেই প্রশ্ন উঠেছে। কয়েকদিন আগে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বাংলা সফরের সময়ও মতুয়া ইস্যুতে তাঁকে খোঁচা দিয়েছিল তৃণমূল। রাজনীতির কারবারিরা বলছেন, এসআইআর-র ভোটার তালিকায় মতুয়াদের নাম থাকা নিয়ে তাঁর বাংলা সফরে যে প্রশ্ন উঠবে, তা আগে থেকেই জানতেন শাহ। মঙ্গলবার সাংবাদিক বৈঠকে মতুয়াদের আশ্বস্ত করে বলেছিলেন, “বাংলাদেশ থেকে আসা শরণার্থীদের ভয় পাওয়ার কোনও কারণ নেই। কেউ কিছু করতে পারবে না। মতুয়াদের ভয় পাওয়ার কোনও কারণ নেই।”
কোর গ্রুপের বৈঠকে কী বার্তা দিলেন শাহ?
এরপর রাতে কোর গ্রুপের সঙ্গে শাহর বৈঠকে মতুয়া প্রসঙ্গ ওঠে। ওই বৈঠকে শমীক ভট্টাচার্য, শুভেন্দু অধিকারী, সুকান্ত মজুমদার ছাড়াও বাংলায় দায়িত্বপ্রাপ্ত বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতারা ছিলেন। সেই বৈঠকেই মতুয়াদের সংশয়, আশঙ্কা নিয়ে আলোচনা হয়। জানা গিয়েছে, মতুয়াদের সংশয়ের প্রসঙ্গ উঠতেই শাহ জানান, ভারতে আসা অমুসলিম সব শরণার্থী নাগরিকত্ব পাবেন। আর এই বিষয়টি নিয়ে বঙ্গ বিজেপি নেতৃত্বকে খুব বেশি মাথা না ঘামানোর পরামর্শ দেন তিনি। গোটা ব্যাপারটি নিজেই দেখে নেবেন বলে জানান।
কোর গ্রুপের সঙ্গে বৈঠকের পর সোশ্যাল মিডিয়ায় শাহ লেখেন, “অনুপ্রবেশকারীদের ভোটব্যাঙ্কে পরিণত করা তৃণমূল সরকারের এই বিধানসভা নির্বাচনে বিদায় নিশ্চিত। আজ কলকাতায় পশ্চিমবঙ্গ বিজেপির কোর গ্রুপ ও প্রবাসী কার্যকর্তাদের সঙ্গে আসন্ন নির্বাচন নিয়ে বৈঠক করেছি।” তৃণমূলকে নিশানা করে তিনি লেখেন, “‘মা, মাটি, মানুষ’ স্লোগান তুলে বাংলার ক্ষমতায় আসা মমতা সরকারের আমলে নারীরা আজ অসুরক্ষিত, মাটি অনুপ্রবেশকারীদের আখড়ায় পরিণত হয়েছে এবং দুর্নীতিতে অতিষ্ঠ মানুষ পালিয়ে যেতে বাধ্য হচ্ছে। বিজেপির কর্মীরা ঘরে ঘরে গিয়ে তৃণমূলের তোষণ ও দুর্নীতির মুখোশ উন্মোচন করবে এবং বাংলায় দুই-তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে বিজেপি সরকার গঠন করবে।”