AQI
Sign In

By signing in or creating an account, you agree with Associated Broadcasting Company's Terms & Conditions and Privacy Policy.

India Alliance: ‘নিজেরা হারব আর অন্যের…’, তৃণমূলের ভিন্ন সুর, প্রশ্নের মুখে ‘ইন্ডিয়া’ জোটের ভবিষ্যৎ

India Alliance: ২০১৯ লোকসভা নির্বাচনে নজিরবিহীন ব্যর্থতার পর, একের পর এক বিধানসভা নির্বাচনে ভরাডুবি ঘটেছিল কংগ্রেসের। বিরোধী শিবিরে আওয়াজ উঠেছিল, কংগ্রেসকে বাদ দিয়ে বিজেপি বিরোধী জোট গড়ার। গত এক বছরে ছবিটা অনেকটা বদলে গিয়েছিল। কিন্তু, চব্বিশের সেমিফাইনাল, অর্থাৎ, সদ্য সমাপ্ত ৪ রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনের ফল, ফের বিরোধী রাজনীতির পরিসরে কংগ্রেসের অবস্থান নিয়ে প্রশ্ন তুলে দিল।

India Alliance: 'নিজেরা হারব আর অন্যের...', তৃণমূলের ভিন্ন সুর, প্রশ্নের মুখে 'ইন্ডিয়া' জোটের ভবিষ্যৎ
জোটের ভবিষ্যৎ নিয়ে প্রশ্ন তুলে দিল কংগ্রেসের ব্যর্থতাImage Credit: Twitter
| Edited By: | Updated on: Dec 03, 2023 | 7:44 PM
Share

কলকাতা: ২০১৯ লোকসভা নির্বাচনে নজিরবিহীন ব্যর্থতার পর, কংগ্রেস সভাপতির পদ ছেড়ে দিয়েছিলেন রাহুল গান্ধী। তারপর, একের পর এক বিধানসভা নির্বাচনে ভরাডুবি ঘটেছিল কংগ্রেসের। একের পর এক রাজ্যে প্রায় সাইনবোর্ডে পরিণত হয়েছিল হাত শিবির। সেই সময় বিরোধী শিবিরে আওয়াজ উঠেছিল, কংগ্রেসকে বাদ দিয়ে বিজেপি বিরোধী জোট গড়ার। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, শরদ পওয়ার, অরবিন্দ কেজরীবালরা নিজেদের মধ্যে এই বিষয়ে বৈঠকও করা শুরু করেছিলেন। কিন্তু, ২০২২-এ এই ছবিটায় বদল ঘটেছিল। নয়া সভাপতি হিসেবে তাজা বাতাসের সঞ্চার করেছিলেন মল্লিকার্জুন খাড়্গে। রাহুল গান্ধীর ঐতিহাসিক ভারত জোড়ো যাত্রায় মিলেছিল বিপুল সাড়া। এই সময়ে হিমাচল প্রদেশ এবং কর্নাটকের মতো দুটি রাজ্য বিজেপির হাত থেকে ছিনিয়ে নিয়েছিল কংগ্রেস। কিন্তু, চব্বিশের সেমিফাইনাল, অর্থাৎ, সদ্য সমাপ্ত ৪ রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনের ফল, ফের বিরোধী রাজনীতির পরিসরে কংগ্রেসের অবস্থান নিয়ে প্রশ্ন তুলে দিল।

কর্নাটক নির্বাচনে বিরাট জয়ের পর, বিরোধী রাজনীতির পরিসরে ফের নেতার ভূমিকায় ফিরে এসেছিল কংগ্রেস। কংগ্রেসের নেতৃত্বেই গঠিত হয়েছিল ইন্ডিয়া জোট। জোটের অভ্যন্তরে দাদাগিরিও দেখা যাচ্ছিল কংগ্রেস নেতাদের। সদ্য সমাপ্ত বিধানসভা নির্বাচনেও, আঞ্চলিক দলগুলি কংগ্রেসের সঙ্গে ঝোট বেঁধে লড়তে চেয়েছিল। কিন্তু, পাত্তাই দেননি কংগ্রেস নেতারা। অখিলেশ যাদবকে তুচ্ছ তাচ্ছিল্য করেছেন কমল নাথের মতো নেতারা। কিন্তু, রবিবার (৩ ডিসেম্বর), ৪ রাজ্যের ভোটের ফল বের হওয়ার পর, কংগ্রেসের এই দাদাগিরি নিয়ে ফের প্রশ্ন উঠে গিয়েছে বিরোধী দলগুলির মধ্যে। এই ফলাফল থেকে কংগ্রেসের শিক্ষা নেওয়া উচিত বলে মনে করছে ইন্ডিয়া জোটের অন্যান্য শরিকরা। কাজেই, ছব্বিশের লোকসভা নির্বাচনে রাজ্যে রাজ্যে এই দলগুলি কংগ্রেসকে আদৌ কটি আসন ছাড়তে রাজি হবে, সেই প্রশ্ন উঠছে রাজনৈতিক মহলে।

তৃণমূল কংগ্রেস মুখপাত্র কুনাল ঘোষ যেমন এই ফলাফলকে বিজেপির জয়ের বদলে কংগ্রেসের ব্যর্থতা বলেই চিহ্নিত করেছেন। কংগ্রেসের এই ব্যর্থতা থেকে আলাদা করতে চেয়েছেন তৃণমূল কংগ্রেস এবং ইন্ডিয়া জোটকে। এই ফলাফলের প্রভাব অন্তত বাংলায় পড়বে না বলে মনে করছেন তিনি। কুনাল বলেছেন, “বেল পাকলে কাকের কী? বেল ওপাড়ার গাছের পাকছে, তার সঙ্গে এ পাড়ার কাকের কোনও সম্পর্ক নেই। ওখানে কংগ্রেসের ব্যর্থতায় ওপাড়ায় দু-তিনটি গাছে কিছু বেল পেকেছে। তাতে বাংলার মাটিতে কাকের কোনও সম্পর্ক নেই।” কংগ্রেস সম্পর্কে তাঁর মন্তব্য, “এই ব্যর্থতা থেকে কংগ্রেসের শিক্ষা নেওয়া উচিৎ। কংগ্রেস দীর্ঘদিন ঘুমিয়ে ছিল। ঘুম থেকে উঠে দেখছে তারা হেরে গিয়েছে। আমরা ইন্ডিয়া জোট গড়েছি। তৃণমূল বাংলায় বিজেপিকে হারিয়েছে। কিন্তু কংগ্রেস তাদের গড় ধরে রাখতে পারছে না। এটা তাদের মানতে হবে।”

এদিন ফের একবার বিরোধী জোটের প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী হিসেবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম করেছেন তৃণমূল মুখপাত্র। তিনি বলেছেন, “যারা গ্রহণযোগ্য মুখ, তাঁদের এগিয়ে দিতে হবে। মমতার মতো মুখ রয়েছে। শীত ঘুম, জমিদারি মেজাজ ছাড়তে হবে। আমাদের ইন্ডিয়া জোটে এর কোনও প্রভাব পড়বে না। পশ্চিমবঙ্গে তৃণমূল বিজেপিকে রুখছে। আর কংগ্রেস বিজেপির দালালি করছে । তৃণমূলের ক্ষতি করছে। নিজের গড়ে হারবো আর অন্যের গড়ে কাঠি করবো । এটা হয় না।”

প্রথম থেকেই বঙ্গে ইন্ডিয়া জোটের আসন ভাগাভাগি নিয়ে সমস্যা ছিল। বামেরা, তৃণমূলের সঙ্গে আসন ভাগাভাগিতে নারাজ। মনে করা হচ্ছিল, এই রাজ্যে অন্তত দুটি আসন কংগ্রেসকে ছাড়তে পারে তৃণমূল – মালদহ এবং অধীর চৌধুরীর আসন। কিন্তু, পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে, এই রাজ্যে কংগ্রেসকে একটিও রাজ্য ছাড়তে চাইবে কি তৃণমূল? রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, সেই সম্ভাবনা খুবই ক্ষীণ। তবে শুধু এই রাজ্যেই নয়, দেশের সবকটি রাজ্যেই ইন্ডিয়া জোটের অন্যান্য শরিকরা এখন কংগ্রেসের দাদাগিরি নিয়ে প্রশ্ন তুলতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।