AQI
Sign In

By signing in or creating an account, you agree with Associated Broadcasting Company's Terms & Conditions and Privacy Policy.

সুশান্তের ব্যক্তিজীবন নিয়েও তো বহু চর্চা হয়েছে… কিন্তু সত্যিটা তো জানা যাবে না: সন্দীপ্তা সেন

Sushant Singh Rajput Death Anniversary: সুশান্ত মৃত্যু মামলা এখনও আদালতের আওতায়। এই এক বছরে সুশান্ত কি শুধু সোশ্যাল মিডিয়াতেই আটকে থাকলেন? সোশ্যাল মিডিয়ার বাইরে কি ওঁকে কেউ মনে রাখলেন? নাকি সোশ্যাল মিডিয়ার নিত্য নতুন বিষয়, নিত্য নতুন উত্তেজনার আড়ালে চাপা পড়ে গেলেন সুশান্ত?

সুশান্তের ব্যক্তিজীবন নিয়েও তো বহু চর্চা হয়েছে… কিন্তু সত্যিটা তো জানা যাবে না: সন্দীপ্তা সেন
| Edited By: | Updated on: Jun 14, 2021 | 11:29 AM
Share

১৪ জুন, ২০২০। মুম্বইয়ে বান্দ্রার ফ্ল্যাট থেকে উদ্ধার হয় বলিউড অভিনেতা সুশান্ত সিং রাজপুতের ঝুলন্ত দেহ। সুশান্ত মৃত্যু মামলা এখনও আদালতের আওতায়। এই এক বছরে সুশান্ত কি শুধু সোশ্যাল মিডিয়াতেই আটকে থাকলেন? সোশ্যাল মিডিয়ার বাইরে কি ওঁকে কেউ মনে রাখলেন? নাকি সোশ্যাল মিডিয়ার নিত্য নতুন বিষয়, নিত্য নতুন উত্তেজনার আড়ালে চাপা পড়ে গেলেন সুশান্ত? ব্যখ্যা করলেন অভিনেত্রী তথা মনোবিদ সন্দীপ্তা সেন

গত দেড় বছরে আমরা প্রত্যেকেই প্যানডেমিকের কারণে কাছের মানুষকে হারিয়েছি। কষ্ট পেয়েছি। আবার সেই খারাপ লাগা কাটিয়ে জীবনের মূল স্রোতে ফিরেও এসেছি। মানুষের জীবনের যে গতি, তাতে এই হারানোর ফিলিংস ধীরে-ধীরে কমতে থাকে। কেউ মারা গেলে সেই দুঃখ তো সারা বছর চলতে পারে না। তাহলে মেডিক্যাল হেল্প নেওয়া প্রয়োজন। এটাই নিয়ম। নিজের কাজে ফিরতে হয় আমাদের।

কেউ মারা যাওয়ার পর আমরা মানুষটাকে কি ভুলে যাই? তা নয়। তাকে ঘিরে যে স্মৃতি, সেটা মনে জমা থাকে। আমার খুব কাছের বন্ধু মারা গিয়েছে। ওর কথা সব সময় ভাবছি, তা নয়। কখনও কথা উঠলে মনে পড়ছে। একা বসে থাকলে মনে পড়ছে। অর্থাৎ পুরো ভুলেও যেতে পারব না। আবার সব সময় তাকে মনে করে আমার জীবনের গতি থমকে যাবে, তা-ও নয়।

inside card

সুশান্ত সিং রাজপুত এক বছর হল মারা গিয়েছেন। আমার সব সময় একটা কথাই মনে হয়, ইশশশ… আরও কখনও কাজ করতে পারবেন না, সেটা দেখতে পারব না আমরা। ইরফান খানের ‘পিকু’ দেখছিলাম। সেটা দেখতে-দেখতেও মনে হচ্ছিল, যা করে গিয়েছেন সেটা নিয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হবে। সুশান্তকে নিয়েও খারাপ লাগাটা থেকে যাবে। তাই বলে তো রোজই সুশান্ত নিয়ে কেউ সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করবেন, সেটা সম্ভব নয়। কিছু মানুষ (আজ) ১৪ তারিখ পোস্ট করবেন। অনেকে আছেন, যাঁরা সত্যিই সুশান্তকে ভালবাসেন। ফলে সেই খারাপ লাগাটা থেকে পোস্ট করবেন। আবার কেউ খারাপ লাগাটা মনে রেখে দেবেন, পোস্ট করবেন না। কেউ আবার ১৪ তারিখ সুশান্তকে নিয়ে পোস্ট করলে ‘হ্যাশট্যাগ ট্রেন্ডিং’ হবে, সেটা ভেবে পোস্ট করবেন। অর্থাৎ হ্যাশট্যাগে সুশান্তের নাম ব্যবহার করলে আমার ভিউজ় বাড়বে, সেটা ভাববেন। স্রোতে গা ভাসাবেন। এ বার যদি জাস্টিদের কথা বলি, বিচারের কথা ভাবি, আমাদের দেশে প্রচুর কেস পেন্ডিং থেকে যায়। ধর্ষণ, খুন, চুরি, ডাকাতি- প্রচুর পেন্ডিং থেকে যায়। সুশান্তের কেসে হয়তো পলিটিক্স ইনভলভড, বলিউড ইনভলভড, এটাও হয়তো পেন্ডিং থেকে গেল। জানি না, কবে কী হবে?

একটা মানুষকে কখনও আমরা পুরোটা জানতে পারি না। যিনি সুইসাইড করেন, তিনি কী ভাবছিলেন, কী থট প্রসেস ছিল, কেউ জানি না আমরা। সব অ্যাজ়িউম করে নিই। তাঁর ব্যক্তিজীবন নিয়ে অনেক কিছু ভেবে নিই। কিন্তু সঠিক ভাবে বলতে পারি না, কী হয়েছিল। যাঁরা ভালবেসেছিলেন, সারা জীবন তাঁদের মনের মধ্যে থেকে যাবেন সুশান্ত। জীবন চলতে থাকবে। সুশান্তকে ভালবেসে নিজের জীবন বাধাপ্রাপ্ত হলে, সেটা কাম্য নয়।

inside card

আমি মিডিয়ার কথাও বলব। সুশান্ত মারা যাওয়ার পর, প্রত্যেকটা মিডিয়াতে সুশান্তকে নিয়ে অনেক কিছু দেখানো হয়েছে। মিডিয়া লিখেছে, কারণ সাধারণ মানুষ ওটা দেখবেন বলে মনে করেছেন সাংবাদিকরা। কিন্তু সুশান্ত কেন এটা করলেন, কী ভাবছিলেন, সত্যিই মানুষটা কেমন ছিলেন, তা আমরা কেউ জানতেও পারব না।

তথাকথিত সেলেব্রিটিদের ক্ষেত্রে ব্যক্তিজীবন নিয়ে অনেক বেশি আলোচনা হয়। সমালোচনা হয়। সোশ্যাল মিডিয়ায় ট্রোলিং তো এখন অন্য পর্যায়ে পৌঁছে গিয়েছে। মানুষ একবারও ভেবে দেখেন না, আদৌ কি এটা সঠিক খবর? নিজের মতামত লেখাটাই আসল কাজ বলে মনে করেন হয়তো। তাতে যদি কেনও অভিনেতাকে খারাপ লাগানো যেতে পারে, তাতেই তাঁর স্যাটিসফ্যাকশন। নিজের ফাস্ট্রেশন সোশ্যাল ওয়ালে লিখে দিচ্ছেন মানুষ। জানেন, তাতে খুব কেউ কিছু বলবেন না। এত ট্রোলিং, এত খারাপ কথা সোশ্যাল মিডিয়ায়…। সুশান্তের ব্যক্তিজীবন নিয়েও তো বহু চর্চা হয়েছে। কার সঙ্গে সম্পর্ক ছিল, কোন-কোন ছবি হাতছাড়া হয়েছে, নেপোটিজ়ম… কিন্তু এই আলোচনার কোনও মানে আছে কি? সত্যিটা তো জানা যাবেই না। তাহলে নিজেদের মতো করে ভেবে নিয়ে কী লাভ? সোশ্যাল মিডিয়া অনেক ভাল কিছুও করছে, আবার অনেক খারাপও করছে। ব্যক্তিগত ভাবে কাউকে না চিনে, কী করে যা খুশি বলতে পারেন অন্য একজন? নিজের বিবেক বোধটা একটু জাগানো দরকার। আসল ঘটনা না জেনে কারও সম্পর্কে মন্তব্য করাটা জঘন্য অপরাধ বলে আমি মনে করি। সুশান্তের ক্ষেত্রেও তা ব্যতিক্রম নয়।

অলঙ্করণ: অভিজিৎ বিশ্বাস

আরও পড়ুন, সুশান্ত সিং রাজপুতকে খোলা চিঠি লিখলেন তাঁর সহ-অভিনেতা শাশ্বত চট্টোপাধ্যায়

আরও পড়ুন সুশান্ত সিং রাজপুত মৃত্যুবার্ষিকী—ফিরে দেখা

আরও পড়ুন SSR Case: কী কী ঘটল এক বছরে, কোথায় দাঁড়িয়ে মামলা, সুশান্তের মৃত্যুবার্ষিকীতে ফিরে দেখা ঘটনাপ্রবাহ