বিয়ের সাতদিনের মাথায় হাতে নেই শাঁখাপলা, নীতি-পুলিশির শিকার গায়িকা ইমন

আজীবন ওঁর (নীলাঞ্জন) পাশে থাকার যে শপথ নিয়েছি, তা আমার কাজে, ব্যবহারে প্রমাণ হবে। কে ফালতু দুটো কথা বলবে, তার কেয়ার আমি করি না। আমি ইচ্ছে হলে সিঁদুর, শাঁখাপলা পরব, না হলে পরব না।

বিয়ের সাতদিনের মাথায় হাতে নেই শাঁখাপলা, নীতি-পুলিশির শিকার গায়িকা ইমন
ইমন ও ট্রোলিং।
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Feb 09, 2021 | 7:55 PM

২রা ফেব্রুয়ারি সাত পাকে ঘুরেছেন গায়িকা। চার হাত এক হয়েছে গায়িকা ইমন চক্রবর্তী-সুরকার নীলাঞ্জন ঘোষের। অগ্নিসাক্ষী রেখে একে-অন্য়ের সঙ্গে সারাজীবন থাকবেন বলে অঙ্গীকারবদ্ধ হয়েছেন নবদম্পতি। সাত দিনের মাথায় বিয়ের ‘চিহ্নস্বরূপ’ শাঁখা-পলা না-পরে খোলামঞ্চে গান গেয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় ‘নীতি-পুলিস’দের বাক্য়বাণে বিদ্ধ হলেন গায়িকা। গায়িকা-সুরকারের বিয়েকে কেন্দ্র করে যে সোশ্য়াল মিডিয়ায় শুভেচ্ছার বন্য়া বয়ে গিয়েছিল গত সপ্তাহে, সেই সোশ্যাল মিডিয়াতেই এ বার ‘নববধূ’র ভূষণসজ্জা নিয়ে চলল ইমন-ভক্তদের একাংশের ঔচিত্য-অনৌচিত্যের নিরিখে মন্তব্য়, পাল্টা-মন্তব্য।

 

ঠিক কী হয়েছিল?

গত ৭ ফেব্রুয়ারি জঙ্গিপাড়া বইমেলায় গানের অনুষ্ঠান ছিল  ইমনের। সেই অনুষ্ঠানের বিভিন্ন মূহূর্তের ছবি তিনি পোস্ট করেছেন তাঁর ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজ-এ। শ্রোতাদের হাতের মোবাইলের টর্চ জ্বলে উঠেছিল। বেগুনি রঙের কাতান বেনারসি-পরা ইমনের গানের তালে-তালে। আপাতদৃষ্টিতে সবকিছু ঠিকঠাকই ছিল। শোয়ের ছবি ফেসবুক পেজ-এ পোস্ট করেই সমস্যায় পড়লেন গায়িকা।

 

নীতিপুলিসি।

 

‘নীতি-পুলিশ’দের একজন লিখলেন, ‘হাতে অন্তত ১ মাস শাখা পলা থাকলে খুব ভালো দেখাত ।এটা একদম আমার নিজস্ব মতামত। দারুন লাগছে সিঁদুরটা পরে। বিবাহিত জীবন খুব খুব ভাল কাটুক, সব্বাই কে নিয়ে সেই কামনা রইল।’ আরেকজন লিখলেন, ‘যতই সেলিব্রিটি হোক, আদতে তো বাঙালি। শাঁখা-পলাটা পরা উচিৎ ছিল। নতুন বিয়ে বলে কথা। খুব ভাল থাকবেন আর বিবাহিত জীবন খুব সুখের হোক।’ আরেকজনের মন্তব্য়, ‘সবে বিয়ে হল শাঁখা পলাটা পরা উচিৎ ছিল।’ অন্যজন লিখলেন, ‘কটা দিন একটু শাঁখা পলা পরো, তবেই তো নতুন বউ লাগবে। ফ্যাশন না হয় পরে হবে, অনেক সময় আছে সে সব করার।’

যাঁরা এই কমেন্টগুলো করছেন, ঘটনাচক্রে তাঁদের অধিকাংশই মহিলা। এবং এই সব কমেন্টে একের পর এক লাইকও পড়েছে। যদিও কেউ-কেউ আবার নীতি-পুলিসির সঙ্গে সঙ্গে শুভেচ্ছাও জানিয়েছেন নব-বিবাহিত ইমনকে।

 

 

 

 

ইমন নিজে কি তাঁর কমেন্ট-বক্সের মন্তব্যগুলো পড়েছেন? তাঁর প্রতিক্রিয়া জানতে TV9 বাংলার পক্ষ থেকে তাঁকে ফোন করা হয়। ইমনের সাফ উত্তর, “আমার জীবনে এদের কোনও অস্তিত্ব নেই। আমার স্বামী, বাবা… আমার আশপাশের মানুষগুলোই গুরুত্বপূর্ণ।” নববধূ অথবা বিবাহিত নারীকে কেন বিয়ের ‘চিহ্ন’ বহন করতেই হবে? ইমনের উত্তর, “শাঁখা পলা পরে আমি আমার বরকে কতটা ভালবাসি কিংবা তাঁর জন্য কতটা ভাবি, তা প্রমাণ হয় না। আজীবন ওঁর (নীলাঞ্জন) পাশে থাকার যে শপথ নিয়েছি, তা আমার কাজে, ব্যবহারে প্রমাণ হবে। কে ফালতু দু’টো কথা বলবে, তার কেয়ার আমি করি না। আমি ইচ্ছে হলে সিঁদুর, শাঁখা-পলা পরব, না হলে পরব না।”

‘নীতি-পুলিস’দের কমেন্টের রিপ্লাই দিতে ইচ্ছে করেনি?
ইমনের নির্দ্বিধ উত্তর, “না করেনি। তারা নিজেদের মানসিকতার পরিচয় দিয়েছেন। সারা দেশে কত মানুষের মুখে খাবার উঠছে না। কত চাষী আত্মহত্যা করছেন। এ সব নিয়ে না ভেবে ইমন কেন শাঁখা-পলা পরল না, তা নিয়ে যারা ভাবছেন, তাদেরকে আমি ধর্তব্যের মধ্যেই ফেলি না।”