Dakghar Controversy: ওয়েব সিরিজের কাজ করে পারিশ্রমিক পাননি শিল্পী, TV9 বাংলাকে যা বললেন সিনেমাটোগ্রাফার

Mrinmoy Nandi: 'ডাকঘর' সিরিজ়কে কেন্দ্র করেই এবার বিতর্ক। এই সিরিজ়ের শুটিং করতে গিয়ে এমন সব অভিজ্ঞতার স্বীকার হয়েছে টেকনিশিয়ানরা, যা বলার নয়—অন্তত তেমনটাই দাবি করেছেন তাঁরা।

Dakghar Controversy: ওয়েব সিরিজের কাজ করে পারিশ্রমিক পাননি শিল্পী, TV9 বাংলাকে যা বললেন সিনেমাটোগ্রাফার
'ডাকঘর' ওয়েব সিরিজ়কে ঘিরে বিতর্ক; 'ডাকঘর'-এর (বাঁ দিকে) পোস্টার, উপরে (বাঁ দিকে) পরিচালক অভিষেক সাহা, ডিওপি মৃন্ময় নন্দী; নীচে (বাঁ দিকে) অভিনেত্রী সুদীপ্তা চক্রবর্তী এবং অভিনেতা অরিত্র দত্ত বণিক।
Follow Us:
| Updated on: Jul 08, 2023 | 7:17 PM

স্নেহা সেনগুপ্ত

২৪ ফেব্রুয়ারি ‘হইচই’ ওটিটি প্ল্যাটফর্মে স্ট্রিম করতে শুরু করেছে ওয়েব সিরিজ় ‘ডাকঘর’। সিরিজ়ে জুটি হিসেবে মুখ্য চরিত্রে অভিনয় করেছেন দিতিপ্রিয়া রায় এবং সুহত্র মুখোপাধ্যায়। মুক্তির পরই দারুণ সাড়া ফেলেছে সিরিজ়। প্রশংসিত হয়েছে শিল্পী এবং কলাকুশলীদের কাজ। কিন্তু এই সিরিজ়কে কেন্দ্র করেই এবার বিতর্ক। এই সিরিজ়ের শুটিং করতে গিয়ে এমন সব অভিজ্ঞতার স্বীকার হয়েছে টেকনিশিয়ানরা, যা বলার নয়—অন্তত তেমনটাই দাবি করেছেন তাঁরা।

সিরিজ়ে যে পরিচালকের নাম যাচ্ছে, তিনি অভ্রজিৎ সেন। যিনি ডিরেক্টর অফ ফটোগ্রাফার (পড়ুন সিনেমাটোগ্রাফার, যিনি যাবতীয় ক্যামেরার কাজের দায়িত্বে থাকেন), তাঁর নাম শান। ছবির প্রযোজক স্টোরিবোট। এ পর্যন্ত ঠিকই ছিল। কিন্তু মঙ্গলবার প্রথম বোমা ফাটালেন অভিনেত্রী সুদীপ্তা চক্রবর্তী। তাঁর স্বামী অভিষেক সাহা নাকি পূর্বে এই সিরিজ়ের পরিচালক ছিলেন, দাবি অভিনেত্রীর। ইন্ডাস্ট্রি সূত্রে খবর, ছবির সিংহভাগ পরিচালনা করার পর তাঁকে বাদ দেওয়া হয়েছে ‘ক্রিয়েটিভ ডিফারেন্সের’ অজুহাত দেখিয়ে। কারও নাম উল্লেখ না করে, কাউকে ব্য়ক্তি আক্রমণ না করে, সুদীপ্তা ফেসবুকে সওয়াল করেছেন তাঁর স্বামীর সপক্ষে। স্বামীর চুপ থাকা এবং নিজেকে সম্পূর্ণভাবে গুটিয়ে নেওয়াকে মজার ছলে তুলে ধরেছেন তিনি।

তবে কেবল পরিচালক অভিষেক সাহা বাদ পড়েননি। সিরিজ়ের ডিওপি, অর্থাৎ সিনেমাটোগ্রাফার মৃন্ময় নন্দীও বাদ পড়েন। অভিষেকের সঙ্গে এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে এই বিষয়টি নিয়ে টুঁ শব্দও করেননি তিনি। মৃন্ময় TV9 বাংলাকে বলেছেন, “অভিষেক তীব্র যন্ত্রণা পেয়ে মানসিকভাবে আহত হয়েছেন এবং সেই কারণেই নিজেকে সম্পূর্ণ রূপে সরিয়ে নিয়েছেন এ সব থেকে।”

মৃন্ময়ের বক্তব্য, ‘ডাকঘর’ ওয়েব সিরিজ়ের ক্যামেরার ৮০ শতাংশ কাজ যে তিনিই করেছেন, তা কোথাও জানানো হয়নি আগে। প্রচারে তাঁর নাম উঠে আসেনি কোত্থাও। অভিনেতা অরিত্র দত্ত বণিক একটি ফেসবুক ভিডিয়ো শেয়ার করে টেকনিশিয়ানদের যন্ত্রণার কথা উল্লেখ করে মৃন্ময় নন্দীর কথা বলেছেন। মৃন্ময়ও সেই পোস্ট শেয়ার করে লিখেছেন কিছু কথা। দেখে নেওয়া যাক তাঁর কী বক্তব্য।

মৃন্ময় নন্দীর ফেসবুক পোস্ট:
“‘ডাকঘর’ ওয়েব সিরিজ়টি শুনছি মানুষের এবং মিডিয়া প্রফেশনালদের ভাল লেগেছে। এই কাজটির ব্যাপারে আমার পরিচালক অভিষেক সাহার সঙ্গে যুক্ত হই বহুদিন আগে। ধীরে-ধীরে সিরিজটি গড়ে তুলছিল অভিষেক। আমরা কয়েকজন ছিলাম সহযোদ্ধা। অবশেষে কাজটি হল। আপনাদের ভাল লাগছে জেনে সত্যিই আপ্লুত। বাকি গল্পটা, মানে এই সিরিজ়ের পিছনের গল্প খানিকটা এই ভিডিয়োতে আছে। বাকিটা বাংলা বিনোদন জগৎ এবং মানুষ কোনওদিন জানতে চাইবে কি? শুধু বলি, এই সিরিজ় শুট হয়েছে ১৮-১৯ দিন। তার মধ্যে ১৩-১৪ দিন আমি করেছি। পারিশ্রমিক পাইনি। এখন শুনছি আমার নামও নেই। যদিও বলেছিল আমার নাম ক্রেডিটে থাকবে। কেউ সিরিজ়টি দেখে বলবেন নাম দিয়েছে কি না?
ধন্যবাদ।”

মৃন্ময়ের সঙ্গে TV9 বাংলা যোগযোগ করার পর একপ্রকার ক্ষোভে ফেটে পড়েন তিনি। মৃন্ময় বলেন,  “ক্রেডিটে শানের নামের পরে নাকি আমার নামটা দিয়েছে। আমি ফেসবুকে জিজ্ঞেস করেছিলাম। একজন দেখে বললেন, আমি যদিও দেখিনি। এই ‘ডাকঘর’ নামটা শুনে হতাশ হয়ে পড়ছি। আমি আর অভিষেক এই সিরিজ়টার জন্য কী-ই না করলাম। শেষে এই প্রতিদান পেলাম আমরা দু’জন ইন্ডাস্ট্রি থেকে? অভিষেক তো এ ব্যাপারে কথা বলাই বন্ধ করে দিয়েছে। ও তীব্র মানসিক যন্ত্রণা পেয়েছে। এতখানি যন্ত্রণা পেয়েছে যে, এখন ও ভাবলেশহীন। একটি সন্তানকে জন্ম দেওয়ার পর যদি কোনও পিতা জানতে পারে, সে অন্য কাউকে বাবা বলে ডাকছে, মনের উপর দিয়ে যে ঝড় বয়ে যায়, অভিষেকেরও সেই একই দশা। কেউ না জানুক, আমি তো জানি সবটা।”

আরও কিছু বিস্ফোরক কথা বলেছেন মৃন্ময়। এই সিরিজ়ের শুটিং করতে গিয়ে অনন্য অভিজ্ঞতা হয়েছে তাঁদের। মৃন্ময় বলেছেন, “একদিন সকালে জানতে পারি শুটিং হচ্ছে আমাদের ছাড়া। আমরা তো অবাক। পরিচালক যায়নি, ডিওপি যায়নি… কে শুটিং করাচ্ছে? জানলাম, অন্য পরিচালক এবং অন্য ডিওপি। এ দিকে সিংহভাগ কাজ করে দিয়েছি আমরাই। রিলিজ়ের আগে অভিষেক নিজেই নাম নিতে চায়নি। ওকে যেভাবে বাদ দেওয়া হয়েছিল, তারপর সিরিজ়ের পরিচালকের পরিচয়টায় ওর দম আটকে এসেছিল। কিন্তু আমারও কোনও উল্লেখ ছিল না। নতুন পরিচালক এবং ডিওপি কীভাবে সেটা অ্য়ালাউ করলেন। ওদের তো বলা উচিত ছিল, ‘আমাদের সঙ্গে ওদের নামটাও থাক’।”

এই সিরিজ়ে কাজ করে সিংহভাগ পারিশ্রমিকই পাননি মৃন্ময়, অভিযোগ এমনটাই। ই-মেইলে প্রযোজনা সংস্থার সঙ্গে কথা হয়েছিল তাঁর। সেই নথিও আছে তাঁর কাছে, দাবি মৃন্ময়ের। পরবর্তীতে প্রযোজককে বলেও কোনও লাভ হয়নি, অভিযোগ তাঁর। এখনও পর্যন্ত সম্পূর্ণ পারিশ্রমিক পাননি তিনি। বলেছেন, “আরও একবার প্রযোজককে বলব ভেবেছি। না হলে ফেডারেশনকে চিঠি দেব বিষয়টা জানিয়ে। আইনি পথেও হাঁটতে হতে পারে।”