Exclusive: মহিলারা ক্ষমতায় আসলেই কি দুর্নীতি দমে? নারী দিবসের প্রাক্কালে প্রশ্ন অপর্ণা সেনের
Uncut Aparna Sen: সঞ্চালককে প্রশ্নও করেন অপর্ণা। জানতে চান, তিনি কি ফেমিনিজ়ম-এ বিশ্বাসী? উত্তরে বরুণ দাস স্পষ্ট জানান, তিনি নারী শক্তিকেই এগিয়ে রাখতে পছন্দ করেন। মনে করেন এই সমাজ তাতে অনেক বেশি সুরক্ষিত ও সুন্দর হয়ে উঠতে পারে। পাল্টা প্রশ্ন করতে পিছপা হননি অপর্ণা সেন।

ফেমিনিজ়ম কী? যেখানে নারী-পুরুষ উভয়ের ক্ষমতাকে সমান মর্যাদা দেওয়া হয়। সমাজে তাদের স্থান সমান। এই বিশ্বাসেই জীবনের অনেকটা পথ পেরিয়ে এসেছেন টিনসেল টাউনের মিস ক্যালকাটা। অভিনয় থেকে পরিচালক হয়ে ওঠার সফরটা সে সময় দাঁড়িয়ে খুব একটা সহজ ছিল না। সহজ ছিল না এই পুরুষতান্ত্রিক সমাজের চোখে আঙুল দিয়ে সত্যিটা তুলে ধরা। তাই ‘পরমা’ ছবির প্রিমিয়ারে এক প্রকার নিজেকে ভেঙে চুরে তৈরি করতে হয়েছিল। তিনি অপর্ণা সেন। নারী দিবসের আগে TV9 নেটওয়ার্কের এমডি ও সিইও বরুণ দাসের মুখোমুখি হয়ে তিনিই আবার প্রশ্ন তুললেন নারী শাসিত সমাজ কেমন হবে, সেই প্রসঙ্গে।
Duologue With Barun Das S3-র বিশেষ অতিথি ছিলেন অপর্ণা সেন। দীর্ঘ আড্ডার মাঝেই তিনি সহজ ভাষায়, ভেঙে বোঝালেন ফেমিনিজ়ম কী! সঞ্চালককে প্রশ্নও করেন অপর্ণা। জানতে চান, তিনি কি ফেমিনিজ়ম-এ বিশ্বাসী? উত্তরে বরুণ দাস স্পষ্ট জানান, তিনি নারী শক্তিকেই এগিয়ে রাখতে পছন্দ করেন। মনে করেন এই সমাজ তাতে অনেক বেশি সুরক্ষিত ও সুন্দর হয়ে উঠতে পারে। পাল্টা প্রশ্ন করতে পিছপা হননি অপর্ণা সেন।
যিনি একা লড়াই করে শত শত নারীর অনুপ্রেরণা হয়ে উঠেছেন, তিনিই প্রশ্ন তুললেন, “সত্যি যদি এই সমাজ নারীরা চালায়, তবে কি দুর্নীতি মুছে যাবে! দেশের বুকে কতই না মহিলা রাজনীতিবিদ রয়েছেন, যাঁরা একইভাবে দুর্নীতির পথ বেছে নিয়েছেন।” যদিও তিনি একবাক্যে স্বীকার করে নেন, “সকলে সমান নয়। হয়তো এটা ক্ষমতার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া! আবার সবক্ষেত্রে নাও হতে পারে।” যার পরিপ্রেক্ষিতে বরুণ দাস ভেঙে বলেন, “আমি ফেমিনিজ়ম বিষয়টার থেকেও একপা এগিয়ে থাকি। আমার কাছে নারী শক্তির উত্থান মানে পুরুষরা নারীদের ভোগ করবে না, আমার কাছে নারী শক্তির উত্থান মানে নারীদের স্বাধীনভাবে নারী হয়েই বাঁচতে দেওয়া।”

কেউ লড়ছেন রাজনীতির ময়দানে, কেউ আবার লড়াই করেছেন সমাজের দৃষ্টিভঙ্গি বদল করতে। অপর্ণা সেন এই তালিকায় দ্বিতীয় শ্রেণিতেই পড়েন। এদিনের সাক্ষাৎকারে সেই লড়াইয়ের কথাও শোনান তিনি। তখন ‘পরমা’ ছবির প্রিমিয়ার হচ্ছিল। প্রথমবার এক অন্যস্বাদের ছবি আসছিল বাংলার দর্শকদের সামনে। অপর্ণা সেন বলেন, “আমরা ব্যালকনিতে ছিলাম। দর্শকেরা ছিলেন নিচে। আমি ইন্টারভেলে নিচে নেমেছিলাম সবার প্রতিক্রিয়া শুনব বলে। সেখানেই এক ব্যক্তি রীতিমত রেগে আমায় বললেন, ‘আপনি কী ভেবেছেন? নারী স্বাধীনতা মানে যা ইচ্ছে তাই করা?’ আমি ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম। বললাম, আপনি বসে পুরোটা দেখুন, আমরা তারপর কথা বলব। ছবি হয়ে যাওয়ার পর সবাই বেরিয়ে যাচ্ছে, আমি বেরতে পারছি না, ভয়ে। সেই সময় তিনজন মহিলা এদিক ওদিক তাকিয়ে আমার কাছে এলেন। চুপিচুপি বললেন, “আশীর্বাদ করি। বেঁচে থাক। তখন বুঝলাম, এরা জীবনে কতটা কষ্ট পেয়েছে। এরপর আমি যখন নিচে নামি দেখি সেই ব্যক্তি আমার জন্য অপেক্ষা করছেন। আমি আমার দিদা ও আমার মেয়ে কঙ্কনা সামনে নিয়ে নামতে শুরু করি। আর বলতে থাকি, আমার সঙ্গে একটা বাচ্চা, একজন বয়স্ক মানুষ রয়েছেন, আমায় যেতে দিন। …তারপর দীপঙ্কর দে, দিলীপ রায়, এরা আমার বাড়িতে এসেছিলেন। বলেছিলেন, এটা পাল্টাতে হবে। এটা বাঙালি দর্শকদের জন্যে নয়। তখন জানি না আমার কী হয়, আচমকা আমি বলে উঠি আমি একটা ফ্রেমও পাল্টাব না। তারপর সেই ছবিটাকে টাকা দিয়ে সরাতে হয়েছিল তাঁদের। আমি বিশ্বাস করি, কোনওভাবে যদি একফোঁটা সত্যিকেও ছোঁয়া যায়, তবে এই সমাজ রিয়্যাক্ট করে।” এই বিশ্বাসই অপর্ণা সেনের জোর। তাঁর পরিচয়। তাঁর ইমেজ।
