বিবাহিত জীবনে চরম অসুখী; ‘সিঙ্গল বাবা’ কৌশিক কীভাবে স্ত্রী হিসেবে পান দুঃখী লাবণীকে?
Kaushik Banerjee: স্ত্রীর সঙ্গে ছাড়াছাড়ি হয়ে গিয়েছিল কৌশিকের। কিন্তু কোনওদিনও স্ত্রীকে তার জন্য দায়ী করেননি তিনি। সব সময় মনে করতেন, দোষ তাঁরই। এই কৌশিক একটা সময় একা হাতে বড় করেছেন তাঁর পুত্রকে। প্রথম স্ত্রীর সঙ্গে বিবাহবিচ্ছেদ হওয়ার পর কৌশিকের জীবনে আসেন অভিনেত্রী লাবণী সরকার। কিন্তু কীভাবে?

জীবনটা একটা সময় অনেক হতাশার মধ্যে কেটেছিল অভিনেতা কৌশিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের। ৯০-এর দশকে খলনায়ক হিসেবে তিনি আবির্ভূত হয়েছিলেন সিনেমার পর্দায়। অভিনেতা হারাধন বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছেলে তিনি। ব্যক্তিজীবনে ছিলেন ভয়ানক অসুখী। সুখের ছিল না তাঁর দাম্পত্য জীবন। স্ত্রীর সঙ্গে ছাড়াছাড়ি হয়ে গিয়েছিল কৌশিকের। কিন্তু কোনওদিনও স্ত্রীকে তার জন্য দায়ী করেননি তিনি। সব সময় মনে করতেন, দোষ তাঁরই। এই কৌশিক একটা সময় একা হাতে বড় করেছেন তাঁর পুত্রকে। প্রথম স্ত্রীর সঙ্গে বিবাহবিচ্ছেদ হওয়ার পর কৌশিকের জীবনে আসেন অভিনেত্রী লাবণী সরকার। একে-অপরকে পেয়ে জীবনটা পাল্টে যায় লাবণী এবং কৌশিকের।
একদিকে কৌশিকের বিবাহবিচ্ছিন্ন জীবন, অন্যদিকে ব্যক্তি জীবনে সমস্যায় জর্জরিত লাবণী। দুই ভগ্নহৃদয় মানুষের দেখা হয় ‘শান্তির চিতা জ্বলছে’ যাত্রাপালা করার সময়। কৌশিক আবিষ্কার করেন, ঠিক তাঁরই মত লবণীও তাঁর ব্যক্তিজীবনে অসুখী। দুটি ভগ্নহৃদয় মানুষের মধ্যে বন্ধুত্ব গড়ে ওঠে তারপর। ধীরে-ধীরে লাবণী-কৌশিকের প্রেম হয় এবং বিবাহ-বন্ধনে আবদ্ধ হন তাঁরা।
এই সম্পর্ক থেকে কৌশিকের যত না লাভ হয়েছে, তার দ্বিগুণ লাভ হয়েছে কৌশিকের পুত্রের। প্রথম স্ত্রীর সঙ্গে ছড়াছড়ির পর মা ছাড়াই বড় হচ্ছিলেন কৌশিকের পুত্র। সিঙ্গল ফাদার হয়ে পুত্রের মায়ের অভাব মেটানোর চেষ্টা করেছিলেন কৌশিক। নিজেই এক সাক্ষাৎকারে জানিয়েছিলেন, বাবারা কখনও মায়ের অভাব পূরণ করতে পারেন না। মা যেটা করতে পারেন, বাবারা তা কখনওই পারেন না। শুটিংয়ের ফাঁকে এসে বাড়িতে দেখে কৌশিক দেখে যেতেন ছেলে ঠিক মতো খেয়েছে কি না। তারপর লাবণী আসেন জীবনে। কৌশিকের পুত্র ফিরে পায় তাঁর মাকে।
লাবণী সম্পর্কে একাধিক সাক্ষাৎকারে কৌশিক বলেছেন, “লাবণী আমার পুত্রকে জন্ম দেননি। কিন্তু ওদের মধ্যে যা সম্পর্ক, তা ভাষায় প্রকাশ করা কঠিন। লাবণীর মতো ভাল মা আমি পেতাম না আমার ছেলের জন্য। আমার ছেলেও লাবণীকে পেয়ে ধন্য।” এই পুত্রের জন্য কোনওদিনও সন্তানের জন্মই দিলেন না লাবণী। কথা আছে, সৎ মায়েরা আপন হতে পারেন না। কিন্তু লাবণীর বেলায় সেটা হয়নি। তিনি সমস্ত চিরাচরিত প্রবাদকে মিথ্যা করে দিয়েছেন।
