‘এ ছবি চলবে না’, ‘গুপী গাইন বাঘা বাইন’ নিয়ে শুনেছিলেন কিংবদন্তি সত্যজিত্ রায়
পূর্ণিমা দত্তর কথায় উঠে এসেছে, '''গুপী গাইন বাঘা বাইন'-ও এক সময়ে মিস্টার বনশালের প্রযোজনা করার কথা ছিল। মানিকদা সেইমতো চিত্রনাট্য শুনিয়েছিলেন। শোনার পর তাঁর বক্তব্য ছিল, 'ইয়ে তো নেহি চলেগা'। সে কথা শুনে মানিকদা ফিরে আসেন। ছবিটিও সারাজীবনের মতো বাক্সবন্দি হয়ে যায়। যদিও সেই সময়ে গানের রেকর্ডিং হয়ে গিয়েছিল।'' সেই খবর পেয়ে কি পূর্ণিমার পরিবার উদ্যোগী হয়েছিলেন ছবিটা করার জন্য? প্রযোজক বলেন, ''রাজ কাপুরজি খবর পান সত্যজিত্ রায়ের ছবি মাঝপথে বন্ধ হয়ে গিয়েছে। উনি সে কথা শুনে বলেছিলেন, সত্যজিত্ রায়ের ছবি যখন বন্ধ হয়ে গিয়েছে, তখন আমিই সেটা প্রযোজনা করব। রাজ কাপুরজি আমাদের বন্ধু-মানুষ ছিলেন। সে খবর আমার স্বামীর কানে আসে। শুনে উনি বলেন, সত্যজিত্ রায়ের ছবি আটকে রয়েছে, আর সেটা বোম্বের প্রযোজককে শেষ করতে হবে? অসম্ভব।''

মে মাসে মুক্তি পেয়েছিল ‘গুপী গাইন বাঘা বাইন’। ছবি শুরুর সময়ে ঠিক কী হয়েছিল জানেন? একটা সাক্ষাত্কারে প্রযোজক পূর্ণিমা দত্ত খোলসা করেছেন, ”আমার বিয়ের সময়ে মানিকদা (সত্যজিত্ রায়) এলেও তারপর সেরকম দেখা হয়নি। ‘গুপী গাইন বাঘা বাইন’-এর সময়ে আবার নতুন করে দেখা হলো। আমার সব সময়ে মনে হয়েছে, মানিকদা একদম গোড়ার দিন থেকে জানতেন যে অসাধারণ কিছু গান তৈরি করেছেন উনি। সে কারণে একেবারে প্রথমেই ছবির গান রেকর্ডিং করে ফেলেছিলেন। প্রথমে ছবিটি আর ডি বনশালের প্রযোজনা করার কথা ছিল। সে আমল থেকেই দু’ ধরনের প্রযোজক রয়েছেন বাংলা ছবিতে। কিছু প্রযোজক ভালো ছবি করতে চান, সে ছবি ভালো ব্যবসা করুক বা না করুক। আর অন্য ধরনের প্রযোজকদের মাথায় একটাই চিন্তা, যে ছবিতে বিনিয়োগ করব, সেটা যথেষ্ট ব্যবসা করবে নাকি করবে না। দ্বিতীয় ধরনের প্রযোজকদের কিছু চিত্রনাট্য শুনেই সাফ কথা ছিল, ‘ইয়ে তো নেহি চলেগা’।”
পূর্ণিমা দত্তর কথায় উঠে এসেছে, ”’গুপী গাইন বাঘা বাইন’-ও এক সময়ে মিস্টার বনশালের প্রযোজনা করার কথা ছিল। মানিকদা সেইমতো চিত্রনাট্য শুনিয়েছিলেন। শোনার পর তাঁর বক্তব্য ছিল, ‘ইয়ে তো নেহি চলেগা’। সে কথা শুনে মানিকদা ফিরে আসেন। ছবিটিও সারাজীবনের মতো বাক্সবন্দি হয়ে যায়। যদিও সেই সময়ে গানের রেকর্ডিং হয়ে গিয়েছিল।” সেই খবর পেয়ে কি পূর্ণিমার পরিবার উদ্যোগী হয়েছিলেন ছবিটা করার জন্য? প্রযোজক বলেন, ”রাজ কাপুরজি খবর পান সত্যজিত্ রায়ের ছবি মাঝপথে বন্ধ হয়ে গিয়েছে। উনি সে কথা শুনে বলেছিলেন, সত্যজিত্ রায়ের ছবি যখন বন্ধ হয়ে গিয়েছে, তখন আমিই সেটা প্রযোজনা করব। রাজ কাপুরজি আমাদের বন্ধু-মানুষ ছিলেন। সে খবর আমার স্বামীর কানে আসে। শুনে উনি বলেন, সত্যজিত্ রায়ের ছবি আটকে রয়েছে, আর সেটা বোম্বের প্রযোজককে শেষ করতে হবে? অসম্ভব। তখন আমাদের প্রচুর পুরস্কার পাওয়া হয়ে গিয়েছে, অরুন্ধতী দেবী অভিনীত ‘ছুটি’ সিনেমার জন্য। সেই সময়ে আমার শ্বশুরমশাই নেপাল দত্ত আর স্বামী অসীম দত্ত আমাকে বললেন, ”তা হলে তুমি গিয়ে গানগুলো শুনে এসো। তুমি তো এসব বোঝো। তারপর সিদ্ধান্ত নিও।”’ এরপর পূর্ণিমা দত্ত এই ছবি প্রযোজনা করার প্রস্তাব দিলে কিংবদন্তি পরিচালক বলেছিলেন, ”অতি উত্তম”। পরবর্তীকালে এগিয়েছিল ছবির কাজ।
তথ্যসূত্র: গুপী গাইন ও বাঘা বাইন রেট্রোস্পেকটিভ
