অস্ত্রোপচারের পর চরম হতাশায় ঋতাভরী, ভালবাসা পাঠালেন মিমি-নুসরত
গত অগস্ট মাসে ‘পিরিয়েনাল অ্যাবসেস’ ধরা পড়ে তাঁর। সার্জারিও হয়। তখনকার মতো স্বস্তি মিললেও, ডাক্তার বলেছিলেন এটা পরে ফিশচুলার দিকে টার্ন নিতে পারে। এবং পরবর্তীতে তাই হয়।
চরম হতাশায় ভুগছেন অভিনেত্রী ঋতাভরী চক্রবর্তী। আট মাসে আগে দুই অস্ত্রোপচারের মন ও শরীরে যে ক্ষত হয়েছিল তা এখনও সারিয়ে উঠতে পারেননি তিনি। ইনস্টাগ্রামে এক লম্বা চওড়া পোস্টে ভেসে এল ঋতাভরীর সেই সব কথা, যা এতদিন লুকিয়ে রেখেছিলেন মনের গোপনে। পাশে পেলেন মিমি-নুসরত ইন্ডাস্ট্রির একরাশ সহকর্মীদের। পাশে থাকার বার্তা নিয়ে এগিয়ে এলেন তাঁর অনুরাগীরাও।
পোস্টে কী লিখেছেন ঋতাভরী? তিনি লেখেন, “২০১৩ সাল থেকে যাতে ফিগাড় ঠিক থাকে তাই কড়া ডায়েট-রুটিন অনুসরণ করতাম আমি। প্রতিদিন আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে সেলফি নিতাম দেখার জন্য, যে আমি ঠিক আছি কিনা। ৩৬-২৬-৩৬- শরীরের এই গঠন নিয়ে আমি পাগল ছিলাম। কিন্ত আট মাসে আগে সব নিয়ম গুলিয়ে গেল যখন এক অস্ত্রোপচার হয় আমার। সারাক্ষণ বিছানায় শুয়ে থাকতাম। নড়াচড়া করতে পারতাম না।
ঋতাভরী যোগ করেন, “অপারেশন ঠিকঠাক হয় কিন্তু হতাশা ঘিরে ধরে। নিজেকে বলরাম সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সব ঠিক হয়ে যাবে। কিন্ত আমার কাজ-পাগল মনের ধৈর্য ছিল না। সবাইকে বলতে চাই, আমি ভাল হচ্ছি। শারীরিক যন্ত্রণা আর নেই। কিন্তু হতাশা আমায় নিঃসঙ্গ করে দিয়েছে। পরে তোমাদের সব বলব…।” অভিনেত্রী তাঁর ভক্তদের উদ্দেশ্যে আরও লেখেন, তাঁদের তিনি ভালবাসেন। যত দ্রুত সম্ভব আবারও পর্দায় ফেরত আসবেন তিনি। ঋতাভরীর ওই পোস্টের পরেই মিমি-নুসরতও তাঁর পাশে থাকার বার্তা দিয়েছেন। মিমি লিখেছেন, “তোমায় আলিঙ্গন”। নুসরত লিখেছেন, ‘অনেক অনেক উষ্ণ ভালবাসা’।
View this post on Instagram
গত অগস্ট মাসে ‘পিরিয়েনাল অ্যাবসেস’ ধরা পড়ে তাঁর। সার্জারিও হয়। তখনকার মতো স্বস্তি মিললেও, ডাক্তার বলেছিলেন এটা পরে ফিশচুলার দিকে টার্ন নিতে পারে। এবং পরবর্তীতে তাই হয়। সমস্যা বাড়ছিল। মার্চ মাসে ফিশচুলা অপারেশন হয় ঋতাভরীর। মেয়েকে নিয়ে এক আবেগঘন পোস্ট করেছিলেন মা শতরূপা। একটি কবিতাও পোস্ট করেছিলেন তিনি। লিখেছিলেন,
ব্যথাগুলো ঝরে যাক হেমন্তের কাশের মতন স্মৃতি হয়ে যাক এই যন্ত্রণার কথোপকথন। ভোরের নরম রোদে কিশলয় মেলুক দুচোখ তোর নিরাময় সুখে জননীরও নবজন্ম হোক! সন্তানের কষ্টগুলো সব নিতাম নিজের দেহে, হত যদি কখনও সম্ভব। তোকে দিয়ে যেতে চাই আমার স্বপ্নের গুঞ্জরণ সসাগরা ধরিত্রীর সৃষ্টিময় আনন্দ ভূবন। তোকে দিয়ে যাব ভালোবাসা মাখা সুন্দর জীবন।। —শতরূপা সান্যাল (১০.৩.২০২১)
এরই পাশাপাশি দিন কয়েক আগেই খবর রটে চলতি বছর শেষে এনগেজমেন্ট এবং আগামী বছর বিয়ে করছেন নাকি অভিনেত্রী। পাত্র ঋতাভরীর ডাক্তার-বন্ধু তথাগত চট্টোপাধ্যায়। তথাগত মনের ডাক্তার। বেশ বহু বছর ধরে মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে নিজেও কাজ করছেন ঋতাভরী। নিয়েছেন বেশ কিছু উদ্যোগও। এটাই প্রেমিক-বন্ধুর সঙ্গে আলাপের যোগসূত্র। মিলিয়ন ফলোয়ার সংখ্যার অধিকারিনীর বিয়ের খবরে যে সোশ্যাল পাড়া হয়ে ওঠে সরগরম। যদিও ঋতাভরী সে সব গুজবকে নস্যাৎ করে একটি পোস্ট করেছিলেন সোশ্যাল মিডিয়ায়। তিনি লিখেছিলেন, “আমি এখন বিয়ে করছি না। আপনারা জানেন যে আমার সবেমাত্র দুটো সার্জারি হয়েছে এবং তার থেকে আমি ধীরে-ধীরে সুস্থ হয়ে উঠছি। আমি আমার স্বাস্থ্যের দিকে নজর দিচ্ছি এবং সব প্রোজেক্টে যেগুলোয় আমি সাইন করেছি। পুনশ্চ: এটা নিয়ে আর প্রতিবেদন করবেন না। আমি এ বিষয়ে আর কথা বলতে চাই না।”
টিভিনাইন বাংলার কাছে মুখ খুলেছিলেন অভিনেত্রীর মা পরিচালক শতরূপা সান্যালও। তিনি বলেন, “সকাল থেকে উঠেই আমি এসব খবর পেয়ে, বুঝতেই পারলাম না কী হচ্ছে। আমার বিয়ে আমিই জানতে পারলাম না। নাম-ধাম-দিনক্ষণ সবই তো বলে দিচ্ছে। ওরাই দায়িত্ব নিয়ে বিয়েটা দিয়ে দিক!” সোশ্যাল মিডিয়ায় অভিনেত্রীর অনুরাগীর সংখ্যা অনেক। হতাশা কাটিয়ে আবার হাসিতে ফিরুক তিনি– আপাতত এটাই প্রার্থনা তাঁর আপনজনদের।