বিহঙ্গী বিশ্বাস
‘ব্রহ্মাস্ত্র’- ঝড়ে মাতোয়ারা দেশ। কেউ বলছেন, দুর্ধর্ষ আবার কারও মতে এ ছবিতে নেহাতই ‘বালখিল্য’। তবু সারা দেশ জুড়ে প্রেক্ষাগৃহগুলির প্রায় ৫০ শতাংশ জুড়ে চলছে এই ছবি। বিশ্বের ৯০০০টি স্ক্রিনে মুক্তি পেয়ে রীতিমতো রেকর্ডও তৈরি করেছে ছবিটি। বাংলাতেও প্রথম দিনের ব্যবসা খুব একটা খারাপ নয়। তবু এরই মধ্যে কলকাতার দুই জনপ্রিয় ও ঐতিহ্যবাহী সিনেমা হল ‘প্রিয়া’ ও ‘নবীনা’য় দেখান হল না ছবিটি। দুটি হলেই এই মুহূর্তে চলছে কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়ের ছবি ‘লক্ষ্মীছেলে’। কেন দেখান হল না ছবিটি? টিভিনাইন বাংলা কথা বলেছিল হল দুটির কর্ণধারদের সঙ্গে। কী বললেন তাঁরা?
প্রিয়া সিনেমার কর্ণধার অরিজিৎ দত্ত বহুদিন ধরেই টলি ইন্ডাস্ট্রির পরিচিত মুখ। তাঁর কাছে কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, “ওঁরা বলেছিল অল শো’জ চালাতে হবে। অর্থাৎ আমার প্রতিটি শো’তেই ব্রহ্মাস্ত্র চালাতে হবে। ইতিমধ্যেই ‘লক্ষ্মীছেলে ‘ চলছে আমার প্রেক্ষাগৃহে। সেটিকে আমি কী করে বাতিল করব? বাংলায় দাঁড়িয়ে বাংলা ছবি বাদ দেওয়া তো সম্ভব নয়।” প্রশ্ন হল কারা এই ওরা? অভিযোগের আঙুল উঠছে ছবিটির ডিস্ট্রিবিউটারের দিকে। বাংলায় এই ছবির ডিস্ট্রিবিউটারের দায়িত্বে রয়েছে প্রযোজনা সংস্থা এসভিএফ।
অরিজিৎ দত্তের মতো একই সুর শোনা গেল, নবীনা সিনেমা হলের মালিক নবীন চৌখানির মুখেও। তিনি বলেন, “ওরা বেশ কিছু শর্ত দিয়েছিল। প্রথমত অল শো চালাতে হবে। অর্থাৎ আগামী দুই সপ্তাহ ব্রহ্মাস্ত্রই চলবে নাকি আমার হলে। এরই পাশাপাশি টিকিটের দাম অস্বাভাবিক হারে বাড়াতে হবে। আর তৃতীয়ত মাল্টপ্লেক্সে যে টার্মসে ছবি চলছে তার থেকে বেশি টার্মস দিতে হবে। এই তিনটি শর্তের সঙ্গে একটির সঙ্গেও আমি মেলাতে পারিনি। সেই কারণেই ছবিটি চালাইনি। হল আমার, তাই সিদ্ধান্তও আমার।” সারা দেশ জুড়েই যে ব্রহ্মাস্ত্রের টিকিটের মূল্য বেশ খানিকটা বেশি তা নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় সরব হয়েছেন নেটিজেনরাও। ‘মেনকা’ সিনেমা হলেন কর্ণধার প্রণব কুমার রায়ও টিভিনাইন বাংলার কাছে টিকিটের মূল্য বৃদ্ধি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন।
প্রসঙ্গত, এই ছবির এই রাজ্যে ডিস্ট্রিবিউটার এসভিএফ হলেও মূল ডিস্ট্রিবিউটার ফক্স ইন্ডিয়া। তাই এসভিএফকে কাঠগড়ায় দাঁড় করাতে রাজি নন নবীন চৌখানি। তিনি বলেন, “ওদের কিছু করার নেই। শর্ত যা সেট হয়েছে বম্বে থেকে হয়েছে।” তবে এই ধরনের ‘শর্ত’ চাপানোয় যে দুই হল-মালিকই বেশ অসন্তুষ্ট তা কার্যত স্বীকার করে তাঁদের বক্তব্য, “ছবি রিলিজ করার দায়িত্ব মালিকদের হাতে। যদি অন্যায্য কিছু দাবি চাপান হয় সেটা মানা বা না মানাও তাঁদেরই হাতে।” উল্লেখ্য, এসভিএফকে এই বিষয়ে জিজ্ঞাসা করা হলে, তাঁরা এ নিয়ে মন্তব্য করতে চাননি।