মেকআপ রুমে বিরক্ত উত্তমের পা ধরে ক্ষমা চাইলেন অমিতাভ বচ্চন! কী এমন করেছিলেন বিগ বি?
মহানায়কের সঙ্গে অমিতাভের প্রথম দেখা 'দেশপ্রেমী' ছবির মহরতেই। সেখানে উপস্থিত ছিলেন উত্তমপুত্র গৌতমও। উত্তমকে দেখামাত্রই পায়ে হাত দিয়ে তাঁকে প্রণাম করেছিলেন অমিতাভ।

হিন্দি ছবিতে সেভাবে বক্স অফিস সাফল্য পাননি মহানায়ক উত্তম কুমার। তাঁর ছোটি সি মুলাকাত ছবি তো মুখ থুবরে পড়েছিল রিলিজের একসপ্তাহের মধ্য়েই। সেই সময় ঘনিষ্ঠদের কাছে উত্তম কুমার বলেছিলেন, ছোটি সি মুলাকাত ছবিটি তৈরি করার তাঁর জীবনের সবচেয়ে বড় ভুল। তবে এর বহু বছর পর, আরেকটি হিন্দি ছবিরও শুটিং করেছিলেন উত্তম কুমার। ছবির নাম দেশপ্রেমী। ছবিতে উত্তমের সঙ্গে দেখা গিয়েছিল বলিউড শহেনশাহ অমিতাভকে। ছবিটি মুক্তি পায় ১৯৮২ সালে। কিন্তু তাঁর আগেই পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করেন মহানায়ক। এমনকী, এই ছবির পুরো শুটিংও করে যেতে পারেননি তিনি।
মহানায়কের সঙ্গে অমিতাভের প্রথম দেখা ‘দেশপ্রেমী’ ছবির মহরতেই। সেখানে উপস্থিত ছিলেন উত্তমপুত্র গৌতমও। উত্তমকে দেখামাত্রই পায়ে হাত দিয়ে তাঁকে প্রণাম করেছিলেন অমিতাভ। সেদিন বহুক্ষণ আড্ডা দিয়েছিলেন দুজনে। তবে ছবির শুটিং শুরু হতেই ঘটল এমন এক কাণ্ড, যা কিনা হতবাক করে দিয়েছিল ইন্ডাস্ট্রিকে।
সেই সময় এক বিনোদনমূলক ম্যাগাজিনেই প্রথম প্রকাশিত হয় এই খবরটি। জানা যায়, ‘দেশপ্রেমী’ ছবির প্রথম দিনের শুটিংয়ে মহানায়ক শুটিং ফ্লোরে পৌঁছে গিয়েছিলেন একেবারে সঠিক সময়ে। এমনকী, সময় মতো পৌঁছে নিজেকে তৈরিও করে ফেলেছিলেন। প্রথমদিনই অমিতাভের সঙ্গে তাঁর দৃশ্যের শুটিং। প্রায় ২ ঘণ্টা পর অমিতাভ এলেন শুটিং ফ্লোরে। অমিতাভের এমনটা করায় একটু বিরক্তই হয়েছিলেন উত্তম।
এরপর শুটিং হল শুরু। ক্যামেরার সামনে এলেন অমিতাভ ও উত্তম। পরিচালক মনমোহন দেশাই অ্য়াকশন বলতেই উত্তম সংলাপ বললেন, কিন্তু আটকে গেলেন অমিতাভ। সেদিন প্রায় বহুবার একই দৃশ্য রিটেক হয়েছিল অমিতাভের ভুলে। ঠিক এই সময়ই উত্তমের বিরক্তি যায় বেড়ে। ফ্লোর ছেড়ে উত্তম সোজা চলে যান মেকআপ রুমে। জানা যায়, উত্তমের এই বিরক্তি দেখে, মহানায়কের মেকআপরুমে হাজির হয়েছিলেন বিগ বি। উত্তমের পা ধরে ক্ষমা চেয়ে, তিনি বলেছিলেন, আমাকে ক্ষমা করে দিন। আপনার মতো এত বড় অভিনেতা হতে পারব না। তাই আপনি সামনে থাকায় নার্ভাস হয়ে পড়েছিলাম। অমিতাভের মুখে এমন কথা শোনায়, সব বিরক্তি ঝেরে ফেলে অমিতাভকে বুকে আগলে ধরেছিলেন উত্তম। দুঃখের বিষয়, ১৯৮২ সালে মুক্তি পাওয়া এই ছবি উত্তমের আর দেখা হয়ে ওঠেনি। তার দুবছর আগেই সবাইকে কাঁদিয়ে চলে যান মহানায়ক।

