AQI
Sign In

By signing in or creating an account, you agree with Associated Broadcasting Company's Terms & Conditions and Privacy Policy.

এই মুসলিম নায়িকাকে খুশি করতে সেদিন সৌমিত্র যা করেছিলেন তা কলকাতায় কেউ ভাবতেই পারেননি

ববিতা যখন জানতে পারলেন, অশনি সংকেত ছবিতে তাঁকে সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের মতো কিংবদন্তি অভিনেতার সঙ্গে অভিনয় করতে হবে, তখন টেনশন হলেও, রীতিমতো উত্তেজিত হয়ে পড়েছিলেন ববিতা।

এই মুসলিম নায়িকাকে খুশি করতে সেদিন সৌমিত্র যা করেছিলেন তা কলকাতায় কেউ ভাবতেই পারেননি
| Updated on: May 14, 2025 | 2:55 PM
Share

বাংলাদেশের অভিনেত্রী ববিতাকে প্রথম দেখেই পছন্দ হয়ে গিয়েছিল সত্যজিৎ রায়ের। বিশেষ করে মেকআপ ছাড়া ববিতার স্নিগ্ধ রূপে সত্য়জিৎ খুঁজে পেয়েছিলেন তাঁর অশনি সংকেত ছবির নায়িকাকে। কলকাতার ইন্দ্রপুরী স্টুডিওতে মাত্র একবার অডিশনেই অশনি সংকেতের জন্য সুযোগ পেয়ে যান মাত্র ১৬ বছরের মেয়ে ববিতা। সত্যজিৎ রায়ের সঙ্গে কাজ করা ছিল তাঁর স্বপ্ন আর রাতারাতি যে সেটা পূরণ হয়ে যাবে, তা ভাবতেই পারেননি তিনি। তবে ববিতার স্বপ্নপূরণের গল্প এখানেই শেষ নয়। ববিতা যখন জানতে পারলেন, অশনি সংকেত ছবিতে তাঁকে সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের মতো কিংবদন্তি অভিনেতার সঙ্গে অভিনয় করতে হবে, তখন টেনশন হলেও, রীতিমতো আত্মহারা হয়ে পড়েছিলেন ববিতা। কারণ, ববিতা ছিলেন সৌমিত্র ফ্যানগার্ল। শুধু ক্যামেরার সামনে নয়, শুটিংয়ের বাইরে, সৌমিত্রর ব্যবহার দেখে ববিতা নতুন করে সৌমিত্রর ভক্ত হয়ে গিয়েছিলেন।

সময়টা সাতের দশক। বোলপুরে অশনি সংকেত ছবির শুটিং করছিলেন সত্যজিৎ। ক্যামেরার সামনে সৌমিত্র ও ববিতা। বাংলাদেশের অভিনেত্রী ববিতা এক সাক্ষাৎকারে জানিয়ে ছিলেন, সেদিনটা ইদ ছিল। বাংলাদেশে আমার পরিবারের থেকে দূরে ছিলাম। এর আগে কোনও দিন ইদে বাড়ির বাইরে থাকিনি। তাই শরীরটা ভারতে থাকলেও, বাংলাদেশেই মনটা পড়েছিল। শুটিং করছিলাম, কিন্তু কিছুই যেন ভাল লাগছিল না। সৌমিত্রবাবু যেন আমার মন পড়তে পেরেছিলেন। শুটিং শেষে, আমাকে জিজ্ঞাসা করেছিলেন, তোমার কী হয়েছে? এত চুপচাপ কেন? সৌমিত্রবাবুকে বলেছিলাম, মন খারাপ। ইদের দিনে বাড়ির লোকেরা কাছে নেই তো, তাই। আমার মুখে এমন কথা শুনে অল্প হেসেছিলেন সৌমিত্রবাবু। ওরকম হাসি দেখে, আমি তো অবাক!

এরপরই আসল গল্প শোনালেন ববিতা। অশনি সংকেত ছবির নায়িকা ববিতা বললেন, সেদিন সন্ধ্যার সময় দেখি, আমরা যে গেস্টহাউজে ছিলাম, সেখানে প্রচুর লাইট লাগানো হয়েছে। ফুল দিয়ে সাজানো হয়েছে। আমি প্রথমে কিছুই বুঝতে পারিনি। তারপর আমার ঘরে এসে সৌমিত্রবাবু আমাকে ডেকে ডিনার টেবিলে নিয়ে গেলেন। টেবিল জুড়ে নানারকম পদ। দেখলাম সিমুইও রয়েছে। আমি হতবাক। সৌমিত্রবাবু বললেন, ইদ মুবারক। নিজে হাতে আমাকে ইদের সিমুই খাইয়ে দিলেন। গোটা ইউনিট ইদ পালনে মেতে উঠল। পরে জানতে পেরেছিলাম, আমার কষ্ট দূর করতে সৌমিত্রবাবুই পুরো ইদের আয়োজন করেছিলেন। সেদিন বুঝতে পেরেছিলাম, বড় মাপের অভিনেতার পাশাপাশি তিনি খুব বড় মনের মানুষ ছিলেন।