রায় বাড়িতে তুলকালাম! প্রেমিকাকে হাতেনাতে ধরতে সত্যজিতের বাড়িতে হাজির বসন্ত চৌধুরী, তারপর…?
অপরাজিতা ছবিটি তৈরি করছেন সত্যজিৎ রায়। এই ছবির লীলা চরিত্রের জন্য একজন আধুনিক নারী খুঁজছিলেন সত্যজিৎ রায়। সেই সময়ই জানতে পারেন বসন্ত চৌধুরীর প্রেমিকা ও অভিনেত্রী অলকার কথা।

এমনিতে বাংলা সিনেমার কিংবদন্তি অভিনেতা বসন্ত চৌধুরীর সঙ্গে ভালই সম্পর্ক ছিল পরিচালক সত্যজিৎ রায়ের। শোনা যায়, বসন্ত চৌধুরীর দুর্দান্ত শলের কালেকশন ছিল। সত্যজিৎ নাকি তাঁর বহু ছবিতে অভিনেতাদের পরানোর জন্য সেই শল বসন্ত চৌধুরীর থেকে ধার নিতেন। প্রিয় পরিচালকের অনুরোধ ফেলতেও পারতেন না বসন্ত। কিন্তু এই বন্ধুত্বেই ভাঙন ধরে। সত্যজিৎ ও বসন্তের মাঝে আসেন বসন্তের প্রেমিকা ও হবু স্ত্রী অলকা চক্রবর্তী! এই অলকাকে নিয়ে বসন্ত ও সত্যজিতের মধ্যে রেষারেষি শুরু হয়।
ব্যাপারটা একটু খোলসা করে বলা যাক। সেই সময় অপরাজিতা ছবিটি তৈরি করছেন সত্যজিৎ রায়। এই ছবির লীলা চরিত্রের জন্য একজন আধুনিক নারী খুঁজছিলেন সত্যজিৎ রায়। সেই সময়ই জানতে পারেন বসন্ত চৌধুরীর প্রেমিকা ও অভিনেত্রী অলকার কথা। সেই সময়ে দাঁড়িয়ে পোশাক-আশাক থেকে শুরু করে কথাবার্তা, চিন্তাভাবনাতেও অলকার আধুনিকতা ধরা পড়ত। সেটাই নজরে পড়েছিল সত্য়জিতের। অপরাজিতা ছবিতে লীলা চরিত্রে অলকাকেই বেছে নিলেন সত্যজিৎ। সত্যজিতের ছবিতে অভিনয়ের সুযোগ পেয়ে যেন হাতে চাঁদ পেলেন অলকা। কিন্তু অন্যদিকে, রেগে গেলেন বসন্ত চৌধুরী।
সেই সময় এক প্রতিবেদনে প্রকাশিত খবর অনুযায়ী, ছবির স্ক্রিপ্ট পড়তে সত্যজিতের বাড়ি গিয়েছিলেন অলকা। সে খবর পেতেই রায় বাড়িতে দুম করে হাজির হয়েছিলেন বসন্ত চৌধুরী। সোজা সত্যজিতের বৈঠকখানায় গিয়ে দেখেন অলকা ও সত্যজিৎ স্ক্রিপ্ট পড়ছেন। একমিনিটও সময় নষ্ট করেননি বসন্ত। সোজা অলকার হাত ধরে সত্যজিৎ বললেন, অলকা সিনেমায় অভিনয় করবে না! তুমি অন্য কাউকে খুঁজে নিও। এই বলেই অলকা নিয়ে হুশ করে গাড়ি চালিয়ে রায় বাড়ির চত্বর ছেড়েছিলেন বসন্ত।
জানা যায়, এই ঘটনার কথা পাঁচ কান করেননি সত্যজিৎ। তবুও রটে গিয়েছিল। এই ঘটনার পরে সত্য়জিৎ লীলা চরিত্রটা ছাড়াই অপরাজিতা তৈরি করেন। আবার শোনা যায়, শুটিং ফ্লোরে ঢুকে নাকি অলকাকে নিয়ে গিয়েছিলেন বসন্ত চৌধুরী। এই ঘটনার পরেই নাকি অলকার সঙ্গে সাত পাকে বাঁধা পড়েন বসন্ত চৌধুরী। তবে পরে সত্যজিতের সঙ্গে সম্পর্ক ঠিকই থাকে বসন্ত চৌধুরীর।
