দিনের পর দিন মাধবীর বাড়ির সামনে ট্যাক্সি নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকতেন ঋত্বিক ঘটক! জানেন কী করেছিলেন অভিনেত্রী?
ঋত্বিক ঘটকের চরিত্রের মধ্য়ে ছিল অনেকরকম শেড। কখনও খুব মজা করতেন, তো কখনও খুব গুরুগম্ভীর। আগে থেকে টের পাওয়াই যেত না, কখন, কেমন মুড হবে। শুটিং ফ্লোরে নানা বিষয় নিয়ে নানা সময়ই মাধবীর সঙ্গে ঝগড়া লেগে থাকত ঋত্বিকের।

ঋত্বিক ঘটকের সঙ্গে অভিনয় করতে গিয়ে মাঝে মধ্য়েই বিপাকে পড়তেন মাধবী মুখোপাধ্য়ায়। কেননা, ছবি পরিচালনার সময়, দৃশ্য বোঝাতে গিয়ে ঋত্বিক বলে উঠতেন, কী করতে হবে, তা তো শুনলেন, অভিনয় করতে পারবেন তো! ঋত্বিকের এমন কথায়, প্রাথমিকভাবে রাগ হলেও, মাধবী পড়ে বুঝেছিলেন, একজন অভিনেতার আমিত্বকে নষ্ট করার জন্যই ঋত্বিক এমনটা বলতেন।
মাধবীর কথায়, ঋত্বিক ঘটকের চরিত্রের মধ্য়ে ছিল অনেকরকম শেড। কখনও খুব মজা করতেন, তো কখনও খুব গুরুগম্ভীর। আগে থেকে টের পাওয়াই যেত না, কখন, কেমন মুড হবে। শুটিং ফ্লোরে নানা বিষয় নিয়ে নানা সময়ই মাধবীর সঙ্গে ঝগড়া লেগে থাকত ঋত্বিকের। শুটিং ফ্লোরেও চলত তর্ক বিতর্ক। তবে মাধবী পরে বুঝেছিলেন ঋত্বিকের এমন আচরণ আখেরে ছবিটি ভাল করার জন্য়ই।
তবে বাণিজ্যিক ছবিতে অভিনয় করার কারণে মাধবীর উপর রেগেই থাকতেন ঋত্বিক। মাধবী তাঁকে বলেছিলেন, সংসার, দায়িত্ব রক্ষার জন্য অর্থের প্রয়োজন। আর সেই কারণেই বাণিজ্যিক ছবিতে কাজ করা।
ঋত্বিকের একটি অদ্ভুত স্বভাব ছিল। দুমদাম কলকাতা ভ্রমণে বেরিয়ে পড়তেন তিনি। একদিনেই উত্তর থেকে দক্ষিণ, যাতায়াত করতেন। ট্য়াক্সি ধরেই ড্রাইভারকে বলতেন, চালাতে থাকো। তবে ভ্রমণ শেষে ঋত্বিকের একটাই গন্তব্য ছিল, মাধবী মুখোপাধ্যায়ের বাড়ি। সেখানে এসেই ট্য়াক্সি নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকতেন ঋত্বিক। কেন জানেন?
ঋতুপর্ণ ঘোষের সঙ্গে আলাপাচারিতায় মাধবী জানিয়ে ছিলেন, আসলে সেই সময় ঋত্বিক ঘটক খুবই অর্থাভাবে ভুগছিলেন। মানসিক দিক থেকেও কিছু বিপর্যন্ত। বাড়িতে তাঁর মন টিকত না। ট্যাক্সি নিয়ে বেরিয়ে পড়তেন। কিন্তু ট্যাক্সি ভাড়া দেওয়ার মতো পর্যাপ্ত টাকা না থাকায় মাধবীর কাছেই আসতেন তিনি। মাধবীই মেটাতেন ঋত্বিকের সেই ট্যাক্সি ভ্রমণের টাকা। এ ঘটনা শুধু একদিনের নয়, বহুদিনই এমনটি করেছেন মাধবী।
ঋত্বিকদার চরিত্রের মধ্য়ে অনেকরকম শেড ছিল। কখনও খুব মজা করতেন, কখনও খুব সিরিয়াস থাকতেন। আমার সঙ্গে নানা সময়ই, নানা বিষয় নিয়ে ঝগড়া করতেন। অনেক সময়ই বলতেন, তুই এই ছবিগুলো কেন করিস। আমি বলতাম, আপনার কোনও দায়িত্ব নেই। আমার রয়েছে। বাণিজ্যিক ছবি করায়। এদিকে সারা শহর ঘুরে ট্য়াক্সি নিয়ে আমার বাড়িতেই আসতেন, যাতে আমি পুরো ট্যাক্সি ভাড়া দিয়ে দিই। তখন আমি বলতাম, এই ট্যাক্সি ভাড়া দেওয়ার জন্যই এই বাণিজ্যিক ছবি করতে হয়।
