উত্তম কুমার ঘোড়া পেলে আমি কেন পাব না! জেদ ধরার পরেই মহাবিপদের মুখে সৌমিত্র
উত্তম ও সৌমিত্রর মধ্যে তেমন রেষারেষি ছিল কিনা তা নিয়ে নানারকম গুঞ্জন শোনা যায়। দুই নায়কের ঘনিষ্ঠরা বলেন, উত্তম-সৌমিত্রর মধ্যে গলায় গলায় বন্ধুত্ব না থাকলেও শত্রুতা কিন্তু ছিল না।

উত্তম-সৌমিত্রকে নিয়ে বাঙালি তথা বাংলা সিনেমার দর্শক বরাবরই তর্কের ঝড় তোলেন। কিন্তু উত্তম ও সৌমিত্রর মধ্যে তেমন রেষারেষি ছিল কিনা তা নিয়ে নানারকম গুঞ্জন শোনা যায়। দুই নায়কের ঘনিষ্ঠরা বলেন, উত্তম-সৌমিত্রর মধ্যে গলায় গলায় বন্ধুত্ব না থাকলেও শত্রুতা কিন্তু ছিল না। মহানায়ক তো স্পষ্টই বলতেন, ছবির পর্দায় অভিনয়ের লড়াই হলে, তা ছবির জন্যই ভাল। কিন্তু একবার সৌমিত্র ও উত্তমের মধ্যে এমন এক কাণ্ড ঘটেছিল, যা দেখে হতবাক হয়েছিলেন পরিচালক তপন সিনহাও।
সময়টা ছয়ের দশক। উত্তম ও সৌমিত্রকে নিয়ে তপন সিনহা তৈরি করছেন ঝিন্দের বন্দী। বিহারের এক পাহাড়ি অঞ্চলে শুটিং শুরু। এই ছবিতে উত্তম ও সৌমিত্রকে ঘোড়া সওয়ারি করতে হত। ঘোড় সওয়ারি পারফেক্ট করার জন্যই উত্তম ঠিক করেছিলেন, শুটিংয়ের বাইরে ঘোড়া চালানো প্র্যাকটিস করবেন। সেই মতোই তপন সিনহাকে একটা ঘোড়া জোগার করে দিতে বললেন।
উত্তম রোজ ভোর পাঁচটায় উঠে ঘোড়া চালানো প্র্যাকটিস করতেন। উত্তমের এই প্র্যাকটিসের কথা জানতে পারেন ,সৌমিত্রও। সঙ্গে সঙ্গে তপন সিনহার কাছে বায়না। সৌমিত্ররও চাই ঘোড়া।
ভোর পাঁচটায় উত্তম-সৌমিত্র দুটো ঘোড়া নিয়ে বেরিয়ে পড়লেন। উত্তম অনেকটা এগিয়ে গেলেও, সৌমিত্র পড়লেন পিছিয়ে। হঠাৎই বিপদ উঁচু-নিচু পথে ব্যালেন্স হারালেন সৌমিত্র। ধুপ করে ঘোড়া থেকে পড়লেন মাটিতে! দূর থেকে সবটা দেখেছিলেন উত্তম। তবুও সৌমিত্রকে সাহায্য করতে এগিয়ে আসেননি। বরং তপন সিনহা জানতে পেরেই ছুটে আসেন সৌমিত্র কাছে। তপন সিনহাকে দেখে, উত্তম দূর থেকেই চিৎকার করেই বলেন, পুলুকে (সৌমিত্রকে এই নামেই ডাকতেন উত্তম) ভাল করে ধরে তুলুন! তপন সিনহা উত্তমকে ফিরে আসতে বলেছিলেন, এর উত্তরে মহানায়ক বলেছিলেন, আমি দিব্য়ি আছি, আরও দূরে ঘোড়া ছুটিয়ে ফিরছি। তারপরেই ঘোড়ার গায়ে লাগাম চালান উত্তম, চলে যান দূরে…





