সত্যজিৎ থেকে মিঠুন, দীপঙ্করের জ্যোতিষচর্চায় রাখতেন ভরসা, আচমকাই…
শোনা যায়, জ্যোতিষচর্চাও নাকি বিজ্ঞান। জ্যোতিষবিদ্যায় নানাবিধ উপাধি পাওয়ার পরও দীপঙ্করের মনে হয়েছে এতে ‘সায়েন্স’ নেই। পদার্থ বিদ্যা, সৌরমণ্ডলের উপর লেখাপড়া করে তিনি নিশ্চিত হয়েছেন জ্যোতিষচর্চা ভিত্তিহীন।

টলিপাড়ার প্রবীণ অভিনেতা দীপঙ্কর দে এক সময় মানুষের হাত দেখতেন। ছক কষে বলে দিতে পারতেন ভাগ্য। তাঁর কাছে লম্বা লাইন পড়ে যেত। ভবিষ্য়ৎ বলে দিতে পারতেন অভিনেতা দীপঙ্কর দে। তাঁর এই প্রতিভা নিয়ে আলোচনা কম হয়নি। অভিনয়ের পাশাপাশি জ্যোতিষশাস্ত্র নিয়ে পড়াশোনা করতেন বিপুল। একটা সময় এতটাই জনপ্রিয় হয়েছিলেন যে, জ্যোতিষবিদ্যার উপাধিতেও ভূষিত হয়েছিলেন অভিনেত্রী দোলন রায়ের স্বামী । এমনকি, দোলনের সঙ্গে সম্পর্ক হওয়ার পরও লোকের হাত দেখতেন তিনি। কিন্তু একদিন সবটাই থেমে গেল। নিজেই এক সাক্ষাৎকারে এই প্রসঙ্গে মুখ খুলেছিলেন অভিনেতা।
বাঙালির গর্ব সত্যজিৎ রায় থেকে শুরু করে মুম্বইয়ের ‘দাদা’ মিঠুন চক্রবর্তী–দীপঙ্করের হাত দেখার উপর ভরসা করতেন সক্কলে। সেই দীপঙ্কর টলিপাড়ায় গেলেই পালে-পালে মানুষ পৌঁছে যেতেন তাঁর কাছে। কৌতূহল একটাই–দীপঙ্কর হাত দেখে, ছক দেখে বলে দেবেন ভবিষ্য়ৎ। মিঠুন চক্রবর্তীর মতো মানুষও তাঁর কাছে যেতেন নিজের ছক নিয়ে। যেহেতু মিঠুনের নিজেরও জ্যোতিষবিদ্যা নিয়ে আগ্রহ ছিল, তাই শুটিংয়ের ফাঁকে দুই অভিনেতার ঘণ্টার পর-ঘণ্টা আলোচনা হত সেই নিয়ে। মিঠুনের পুত্র মিমোর ছক দেখেছিলেন দীপঙ্কর।
সত্যজিতের পরিবারের ক্ষেত্রে গণনা না মিললেও দীপঙ্করের উপর ভরসা করতেন অগুনতি মানুষ। জ্যোতিষবিদ্যা হঠাৎই কেন ছেড়ে দিলেন? এর একটা বিশেষ কারণ আছে। সে ইচ্ছে সময়ের সঙ্গে পাল্টে গিয়েছিল অভিনেতার। একটা সময় মনে হয়েছিল তাঁর, জ্যোতিষচর্চার মধ্যে আকর্ষণ আছে। পরবর্তীকালে নিজের পছন্দকে প্রশ্ন করেছিলেন, এবং বিজ্ঞানকে আপন করে নিয়েছিলেন।
শোনা যায়, জ্যোতিষচর্চাও নাকি বিজ্ঞান। জ্যোতিষবিদ্যায় নানাবিধ উপাধি পাওয়ার পরও দীপঙ্করের মনে হয়েছে এতে ‘সায়েন্স’ নেই। পদার্থ বিদ্যা, সৌরমণ্ডলের উপর লেখাপড়া করে তিনি নিশ্চিত হয়েছেন জ্যোতিষচর্চা ভিত্তিহীন। দোলন বলেছেন, “দীপঙ্কর এখন মনেই করেন না, দূরের একটা গ্রহ আমাদের জীবনে কোনও প্রভাব ফেলতে পারে বলে। তিনি এখন বিজ্ঞানের নানা বইয়ে ডুবে থাকেন। যুক্তি দিয়ে সবকিছু ব্যাখ্যা করেন। আমাদের বাড়িতে একটা বিরাট লাইব্রেরি তৈরি হয়ে গিয়েছে। কেবল বিজ্ঞান নয়, বেদ-পুরাণেরও নানা বই পড়েন দিনরাত…।”
