Obesity & Acidity: যা-ই খান, তাতেই অম্বল হয়ে যায়? আপনার ওজন বেশি নয় তো!
Health Tips: আপনি যদি ঘন ঘন গ্যাস-অম্বলে ভুগতে থাকেন, তাহলে গ্যাস্ট্রিক আলসার বা পেটে ঘা হওয়ার সম্ভাবনাও বেড়ে যায়। কিন্তু কেন আপনার এভাবে গ্যাস-অম্বল হয়, তা জানা দরকার। চিকিৎসকদের একাংশের দাবি, আপনার যদি ওজন বেশি থাকে, তাহলে অ্যাসিডিটি ভুগবেন।
বাড়তি ওজন শরীরে ডায়াবেটিস থেকে হৃদরোগ, বাতের ব্যথা ডেকে আনে। এগুলো দীর্ঘস্থায়ী রোগ। কিন্তু এমনও কিছু সমস্যা রয়েছে, যা রোজ দেখা না দিলেও প্রায়শই আপনাকে বিরক্ত করে। আর সেটা ঘটে আপনার অতিরিক্ত ওজনের কারণেই। সেই রোগের নাম হল হাইপার অ্যাসিডিটি। অনেকে বলে, জল খেলেও অম্বল হয়ে যায়। ভয়ে কোনও খাবারই মুখে তুলতে পারেন না। এই সমস্যাকে সহজ ভাষায় হাইপার অ্যাসিডিটি বলা হয়। চিকিৎসকদের একাংশের দাবি ওবেসিটি বা স্থূলতা এই হাইপার অ্যাসিডিটির সঙ্গে যুক্ত। অর্থাৎ, আপনার বাড়তি ওজন গ্যাস-অম্বলের সমস্যা বাড়াতে পারে।
আরেকটু সহজ করে বলা যাক। পিত্তথলি থেকে পিত্তরস নির্গত হয়। এটি আমাদের খাবার হজম করতে সাহায্য করে। পিত্তরসে থাকে হাইড্রোক্লোরিক অ্যাসিড। এটি খাদ্যের কণাকে ক্ষুদ্রতম আকারে ভেঙে দেয় এবং পরিপাকে সাহায্য করে। কিন্তু যখন আপনার পাকস্থলীতে এই হাইড্রোক্লোরিক অ্যাসিড বা পিত্তরস অতিরিক্ত পরিমাণে নির্গত হয়, তখন যে অবস্থা সৃষ্টি হয় তাকে হাইপার অ্যাসিডিটি বলা হয়। যখনই আপনার বুক জ্বালা, গ্যাস, অম্বল, চোঁয়া ঢেকুর দেবে, পেটে ফুলে যাবে, খাবার খাওয়ার পর শারীরিক অস্বস্তি তৈরি হবে, বুঝবেন আপনি হাইপার অ্যাসিডিটির শিকার।
অন্যদিকে, অতিরিক্ত ওজন, শরীরে চর্বির পরিমাণ বেশি—এগুলোই ওবেসিটি বা স্থূলতার লক্ষণ। বিশেষজ্ঞদের মতে, আপনি যদি ওবেসিটিতে ভোগেন, তাহলে আপনার ঘন ঘন গ্যাস-অম্বল হতে পারে। পাচনতন্ত্র জুড়ে প্রদাহ দেখা দিতে পারে। খাবার হজমে দেরি হতে পারে এবং পাকস্থলীতে অ্যাসিড উৎপন্ন হতে পারে। স্থূলতার কারণে পেটে ফোলাভাব দেখা দেয় এবং খাবার খাওয়ার পর অস্বস্তি হয়। তখন সেই খাবার হজম হতেও বেশি সময় নেয়। আর খাবার ঠিকমতো হজম না হলেও গ্যাস-অম্বল হতে থাকে।
আপনি যত বেশি ফ্যাটযুক্ত, মশলাদার ও অম্লীয় খাবার খাবেন, অ্যাসিড রিফ্ল্যাক্স ও হাইপার অ্যাসিডিটির সমস্যাও বাড়বে। অন্যদিকে, ফ্যাটযুক্ত খাবার আপনার ওজনও বাড়িয়ে দেয়। এছাড়া ওবেসিটি হরমোনের ভারসাম্যকেও নষ্ট করে দেয়, যা পেটের প্রদাহের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। তাই গ্যাস-অম্বলের সঙ্গে অনেকেই বুক জ্বালা, গলা জ্বালা, পেটের উপরিভাগে জ্বালাভাব ইত্যাদি অনুভব করেন।
ওবেসিটি আপনার জীবনে অ্যাসিডিটি ছাড়াও দীর্ঘস্থায়ী রোগ ডেকে আনতে পারে। কিন্তু আপনি যদি এভাবেই ঘন ঘন গ্যাস-অম্বলে ভুগতে থাকেন, তাহলে গ্যাস্ট্রিক আলসার বা পেটে ঘা হওয়ার সম্ভাবনাও বেড়ে যায়। প্রদাহ যত বাড়বে আপনার শারীরিক কষ্টও বাড়তে থাকে। তাই ওজনকে নিয়ন্ত্রণ করে গ্যাস-অম্বলের সমস্যা কমাতে হবে। আর এই কাজটা করতে আপনাকে লাইফস্টাইলে বদল আনতে হবে।
সর্বপ্রথম আপনাকে নজর দিতে হবে ডায়েটের উপর। অস্বাস্থ্যকর খাবার বিশেষত ফ্যাটযুক্ত খাবার, অ্যাসিডিক ও মশলাদার খাবার এড়িয়ে চলতে হবে। জোর দিতে হবে তাজা শাকসবজি, ফল, গোটা শস্যের মতো ফাইবারযুক্ত পুষ্টিকর খাবারের উপর। এগুলো হজম ক্ষমতা উন্নত করতে সাহায্য করে। পাশাপাশি আপনাকে মানসিক চাপ কমাতে হবে। প্রচুর পরিমাণে জল পান করতে হবে। ধূমপান ও মদ্যপান থেকে দূরত্ব বজায় রাখতে হবে। আর শরীরচর্চা করতে হবে। তাছাড়া সময়মতো সঠিক পরিমাণে খাবার খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে। এতে যেমন আপনি ওজনকেও বশে রাখতে পারবেন, একইভাবে হাইপার অ্যাসিডিটির সমস্যাও কমে যাবে।