অসুখ এক হলেও চিকিৎসা পদ্ধতি এবং রোগীরা কিন্তু আলাদা: চিকিৎসক রবীন চক্রবর্তী

এমন পরিস্থিতিতে সাধারণ মানুষ পরলে তাঁদের কী করণীয়, সে বিষয়ে TV9 বাংলাকে নিজের মত জানালেন মেডিকা গ্রুপের সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান সিনিয়র কনসালটেন্ট কার্ডিওলজিস্ট চিকিৎসক রবীন চক্রবর্তী।

অসুখ এক হলেও চিকিৎসা পদ্ধতি এবং রোগীরা কিন্তু আলাদা: চিকিৎসক রবীন চক্রবর্তী
সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় (বাঁদিকো), চিকিৎসক রবীন চক্রবর্তী (ডানদিকে)।
Follow Us:
| Updated on: Jan 27, 2021 | 10:08 PM

সম্পূর্ণ সুস্থ রয়েছেন সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় (sourav ganguly)। গতবার উডল্যান্ডস থেকে ছাড়া পাওয়ার পর তাঁর শারীরিক অবস্থায় কোনও পরিবর্তন আসেনি। রুটিন চেকআপ করতেই বুধবার বাইপাসের ধারে বেসরকারি হাসপাতালে গিয়েছিলেন তিনি। এমনটাই এ দিন জানানো জানানো হয়ে বাইপাসের ধারের বেসরকারি হাসপাতাল সূত্রে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের এই ঘোষণার পর অনেকটাই আশ্বস্ত হয়েছেন মহারাজের অনুরাগীরা।

এমন পরিস্থিতিতে সাধারণ মানুষ পরলে তাঁদের কী করণীয়, সে বিষয়ে TV9 বাংলাকে নিজের মত জানালেন মেডিকা গ্রুপের সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান সিনিয়র কনসালটেন্ট কার্ডিওলজিস্ট চিকিৎসক রবীন চক্রবর্তী।

প্রথম কথা, সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের বিরাট কিছু হয়নি। উনি বুধবার রুটিন চেকআপে গিয়েছিলেন। ওঁর পরিবারের সদস্যরাও তাই বলেছেন। ওঁর একটা অ্যাঞ্জিওপ্লাস্টি হওয়ার কথা দু’ থেকে তিন সপ্তাহের মধ্যে সেটা আমরা সকলেই জানি। সেটা সম্ভবত আগামী বৃহস্পতিবার অথবা শুক্রবার হওয়ার কথা। যতটুকু আমি জানি। ন্যাচারালি তার আগের দিন একটা রুটিন চেকআপ। তেমন কিছু পাওয়া যায়নি কিন্তু। অ্যাকিউট যেগুলো হয়, তা হয়নি, হওয়ার কথাও ছিল না ওঁর ক্ষেত্রে।

হার্ট অ্যাটাকের কয়েক সপ্তাহ পরে কারও আচমকা বুকে ব্যথা হলে তার অনেকগুলো কারণ হতে পারে। অনেকগুলো ফ্যাক্টর কাজ করে। সৌরভের প্রাইমারি অ্যাঞ্জিওপ্লাস্টি করা হয়েছিল। অর্থাৎ অ্যাঞ্জিওপ্লাস্টি ডিউরিং হার্ট অ্যাটাক। তার আগে একটা অ্যাঞ্জিওগ্রাম করা হয়েছিল। তখন দেখা গিয়েছিল, একটা আর্টারি বন্ধ। সে কারণেই হার্ট অ্যাটাক হয়েছিল। সেটা ছাড়াও আরও দুটো জায়গায় ব্লক রয়েছে। প্রাইমারি অ্যাঞ্জিওপ্লাস্টির সময় যেটাকে আমরা চিকিৎসার পরিভাষায় বলি, কালপ্রিট ভেসেল, সেটা খুলে দেওয়া হয়েছে। তারপর বাকি যেটা আছে সেটা দু থেকে তিন সপ্তাহ বাদে করা হবে বলা হয়েছিল। সেটাই হচ্ছে।

আরও পড়ুন, চিন্তার কোনও কারণ নেই, স্থিতিশীল সৌরভ, খোঁজ নিলেন শাহ

যদি অ্যাঞ্জিপ্লাস্টি ঠিক মতো করা হয় এবং ওষুধ খান রোগী, তাহলে রোগীর সাধারণত কিছু হয় না। সৌরভের ক্ষেত্রে বাকি যে দুটো ব্লক রয়েছে, তখন যদি চিকিৎসকরা অ্যাডভাইস করেন, আপনি দু থেকে তিন সপ্তাহ বাদে আসুন, তাহলে চিকিৎসকরা নিশ্চয়ই বুঝেছেন এর মধ্যে কোনও সমস্যা হওয়ার কথা নয়। যদি বাকি দুটো ব্লক ক্রিটিক্যাল বা হাইগ্রেড ব্লক থাকত, তাহলে ডিসচার্জ করতেন না। ফলে বাকি দুটো ব্লকের চিকিৎসা প্ল্যানড ওয়েতেও করা যেতে পারে।

হার্ট অ্যাটাকের পরবর্তী অসুস্থতার ক্ষেত্রে রোগীর বয়স, ব্যাকগ্রাউন্ড, অ্যাঞ্জিওপ্লাস্টি কীভাবে করা হয়েছে অনেকগুলো ফ্যাক্টর কাজ করে। সেটা সাধারণ মানুষ বুঝবেনও না। চিকিৎসকরা বুঝবেন। একটা কথা পরিষ্কার, প্রত্যেকটা কেস আলাদা। কোন কেসের ক্ষেত্রে কী করতে হবে, সেটা সংশ্লিষ্ট চিকিৎসক ঠিক করে নেবেন। অনেক সময় সাধারণ মানুষ ভাবেন সবটা এক। তা তো নয়। অসুখ এক হলেও চিকিৎসা পদ্ধতি এবং রোগীরা কিন্তু আলাদা। শুনতে মনে হচ্ছে, অ্যাঞ্জিপ্লাস্টি হয়েছে। কিন্তু আলাদা রোগীর ক্ষেত্রে এটা আলাদা হয়ে যায়।