অটিজম হল এক প্রকার মানসিক সমস্যা, যা শিশুদের মধ্যে দেখা যায়। এটা এক প্রকার নিউরোডেভেলপমেন্টাল অবস্থা। এই অবস্থা সামাজিক আচরণ ও কোনও প্রতিক্রিয়া থেকে চিহ্নিত করা হয়।
এক থেকে পাঁচ বছরের শিশুদের মধ্যে এই রোগ বিকশিত হয়। কিন্তু দুঃখের বিষয় হল জন্মের সময় মা বাবা, এমনকি চিকিৎসকরা অবধি এই রোগ শিশুদের মধ্যে ধরতে পারে না। ধীরে ধীরে বড় হওয়ার সাথে এই রোগের একাধিক উপসর্গ দেখা দেয়, যেখান থেকে এই অটিজম নির্ণয় করা হয়।
অটিজম হওয়ার নানান কারণ রয়েছে। জিনগত কারণেও অটিজম হতে পারে। কিন্তু এই জিনগত কারণ একটু আলাদা। মা যদি গর্ভবস্থায় বা গর্ভবর্তী হওয়ার আগে কোনও রোগে আক্রান্ত হন, সেখান থেকেও শিশুর মস্তিষ্কের ওপর প্রভাব পড়ে। অনেক ক্ষেত্রে শিশুর মধ্যে ক্রোমোজোমের সংখ্যা হ্রাস পেলে বা অস্বাভাবিক ভাবে বৃদ্ধি পেলে অটিজমের মত রোগ দেখা দেয়।
মস্তিষ্কের স্নায়ুতন্ত্রের বিভিন্ন কোষগুলির পারস্পরিক সংযোগ কমে যাওয়ার ফলে অথবা স্নায়ু থেকে নিঃসৃত কিছু রাসায়নিক পদার্থের অভাবের ফলেও এই রোগ দেখা দেয়। তবে, অটিজম হওয়ার প্রধান কারণ এখনও জানা যায়নি।
অটিজমের উপসর্গগুলি হল:
১) অটিজমে আক্রান্ত শিশুরা চোখে চোখ মিলিয়ে কথা বলে না।
২) অন্যান্য শিশুদের সাথে মিশতে চায় না।
৩) অনেক সময় অটিজমে আক্রান্ত শিশু অনেক বড় বয়সে কথা বলতে শেখে।
৪) নিজের নামে ডাকলে তারা কোনও রকম প্রতিক্রিয়া দেয় না। এটা দেখে অনেকের ধারণা হতে পারে যে, শিশুটি বধির।
৫) এরা কোনও একটি কাজ করতে ভালবাসে এবং সেই কাজটিই ক্রমাগত করতে থাকে।
৬) কোনও বিষয় বা বস্তুকে শব্দে, প্রতিক্রিয়া অথবা ইঙ্গিতে বোঝাতে এরা অক্ষম হয়।
৭) অনেকের মধ্যে মৃগীজনিত রোগও দেখা দেয়।
৮) কখনও কখনও অটিজমে আক্রান্ত শিশুরা কোনও একটি নির্দিষ্ট বিষয়ে পারদর্শী হয়।
অটিজমে আক্রান্ত শিশুদের প্রথমেই বোঝা যায় না। বিকশিত হওয়ার সঙ্গে তার মধ্যে অটিজমের লক্ষণ গুলি দেখা যায়। সাধারণত তিন বছর বয়সে অটিজমের লক্ষণ গুলি শিশুদের মধ্যে সক্রিয় হয়। মূলত অটিজমে আক্রান্ত শিশুরা একা থাকতে ভালবাসে। তারা অন্য শিশুদের সঙ্গে খেলতে ভালবাসে না। খুব একটা কারোর সাথে কথা বলে না। কোনও প্রশ্নের সহজে উত্তর দেয় না বরং একটি কথাই বার বার পুনরাবৃত্তি করতে থাকে।
আরও পড়ুন: করোনার মধ্যেই বাড়ছে ডেঙ্গির প্রকোপ, বাড়িতে শিশু ও বয়স্কদের যত্ন নেবেন কীভাবে?
আরও পড়ুন: খাবারে অতিরিক্ত টমেটো কেচাপ ব্যবহার করেন? বিপদ ডেকে আনছেন নিজেরই!