Dengue: করোনার মধ্যেই বাড়ছে ডেঙ্গির প্রকোপ, বাড়িতে শিশু ও বয়স্কদের যত্ন নেবেন কীভাবে?
সংক্রমণের প্রথম সপ্তাহে সংক্রামিত ব্যক্তির রক্তে ডেঙ্গি ভাইরাল পাওয়া যায়। মশা যদি আক্রান্ত ব্যক্তি কামড়ায়, তাহলে মশাও ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়।
করোনার মধ্যেই ডেঙ্গির প্রকোপ বাড়ায় উদ্বেগ শুরু হয়েছে চিকিত্সকমহলে। কারণ, করোনার পাশাপাশি যে হারে ডেঙ্গি ছড়িয়ে পড়েছে, তাতে পশ্চিম ভারতে এখনই কোনও ব্যবস্থা না নিলে তা ভয়াবহ আকার ধারণ করতে পারে। তবে কলকাতা ডেঙ্গির সঙ্গে বেশ পরিচিত। প্রতিবছর অগস্ট থেকে সেপ্টেম্বরে ডেঙ্গির প্রকোপ বাড়ে। এডিস মশাবাহিত ডেঙ্গি জ্বর একটি ভাইরাস জনিত রোগ। এডিস মশার কামড়ে ভাইরাস সংক্রমণের তিন থেকে ১৪ দিনের মধ্যে ডেঙ্গির উপসর্গগুলি দেখা যায়।
ডেঙ্গি চিকিত্সার কোনও ওষুধ আপাতত নেই। ডেঙ্গির লক্ষণ হালকা বা মারাত্মক হতে পারে। তবে মারাত্মক হলে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে হাসপাতালে চিকিত্সা করা প্রয়োজন। হালকা উপসর্গ দেখা দিলে বাড়িতেই চিকিত্সা করা সম্ভব।
ডেঙ্গু ভাইরাসে সংক্রমণে ফলে অনেক বেশি জ্বর, মাথাব্যথা, বমি বমি ভাব, পেশী এবং শরীরে বিভিন্ন জয়েন্টগুলোর মধ্যে ব্যথা হয়। সেই সঙ্গে চামড়ায় লাল লাল ফুসকুড়িও দেখা দিতে পারে। বাড়িতেই হালকা লক্ষণ দেখা দিলে ডেঙ্গির চিকিত্সা করা সম্ভব। সেগুলি কীভাবে করবে, তা একঝলকে দেখে নিন..
– যতটা সম্ভব রেস্ট নিন।
– জ্বর কমানোর চেষ্টা করুন। জন্র কমানোর জন্য নিয়ম মেনে প্যারাসিটামল খান। তাতে জ্বর কমার পাশাপাশি ব্যথা-যন্ত্রণার উপশম হবে। তবে যখন নিজে থেকে ওষুধ খাবেন, ত ওষুধের লেবেলের নির্দেশাবলী অনুসরণ করুন। আইবুপ্রোফেন, অ্যাসপিরিন বা অ্যাসপিরিনযুক্ত ওষুধ খাবেন না বা অপরকে দেবেন না।
– জ্বর কমাতে ঠান্ডা জল দিয়ে রোগীর ত্বককে স্পঞ্জ করুন।
– ডিহাইড্রেশন প্রতিরোধ করুন। রোগী জ্বর, বমি, পর্যাপ্ত পরিমাণে জল পান না করলে ডিহাইড্রেশন হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
শিশুদের ক্ষেত্রে কী কী লক্ষণ দেখে বুঝবেন, যে বাচ্চারা ডেঙ্গিতে আক্রান্ত…
– এই সময় বারবার ন্যাপি বা ডাইপার পরিবর্তন করুন। – শুষ্ক মুখ, জিভ ও ঠোঁট – কান্নাকাটি করলে চোখ দিয়ে জল না গড়ালে – মাথার বিভিন্ন জায়গায় নরম তলতলে ত্বকের সৃষ্টি
অন্যদিকে প্রাপ্ত বয়স্কদের মধ্যে যে উপসর্গগুলি দেখা যায়, সেগুলি হল – তৃষ্ণার্ত. শুকনো ও নিস্তেজ মুখ – পায়খানা পরিস্কার না হওয়া, গাঢ় হলুদ রঙের ইউরিন নির্গত হওয়া – শুকনো ও ঠান্ডা ত্বক – মাথা যন্ত্রণা
এমন লক্ষণগুলি দেখামাত্রই স্বাস্থ্যকেন্দ্রের সঙ্গে যোগাযোগ করুন। প্রাথমিকভাবে সংক্রমণকে সামাল দিতে বারবার জল, জুস, দুধ ও নুন-জল খাওয়াতে পারেন।
কোন কোন বিষয়ে সতর্ক হবেন
– যদি জ্বর চলে যায়, চাহলে ডেঙ্গুর পরবর্তী পদক্ষেপে রোগীর জন্য বিপজ্জনক হতে পারে। তাই জ্বর না তাকলেও ২৪-৪৮ ঘণ্টার মধ্যে সতর্কতামূলক লক্ষণগুলি দেখা যায়।
– ডেঙ্গিতে আক্রান্ত ২০জনের মধ্যে ১ জন মারাত্মক সংক্রমণে আক্রান্ত হোন। মারাত্মক সংক্রমণের জন্য হাসপাতালে ভর্তির প্রয়োজন হয় ও এটি এড়িয়ে গেলে প্রাণঘাতীও হতে পারে।
– পেটে ব্যথা, ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তিনবার বমি করলে অবশ্যই ডাক্তারের সঙ্গে পরামর্শ করুন। এছাড়া নাক বা মাড়ি থেকে রক্তপাত হলে. বমি বা মলের সঙ্গে রক্ত পড়লে. ক্লান্ত, অস্থির ও খিটখিটে মেজাজের হয়ে যায় এই সময় রোগী। শ্বাসকষ্ট, গাঁটে গাঁটে যন্ত্রণা এগুলি সবই মারাত্নমক ডেঙ্গির লক্ষণ। এমন অবস্থা হলে মেডিক্যাল ইমার্জেন্সিতে ভরতি করা আবশ্যিক।
আপনার ডেঙ্গি হলেও অপরকে সুরক্ষিত করাও কর্তব্য
সংক্রমণের প্রথম সপ্তাহে সংক্রামিত ব্যক্তির রক্তে ডেঙ্গি ভাইরাল পাওয়া যায়। মশা যদি আক্রান্ত ব্যক্তি কামড়ায়, তাহলে মশাও ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়। এবার সেই আক্রান্ত মশা অপরজনকে কামড়ালে তা ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ে। পরিবারকে ডেঙ্গি থেকে বাঁচাতে মশার কামড় থেকে এড়িয়ে চলুন। তার জন্য কিছু নিয়ম মেনে চলুন
– লম্বা হাতা শার্ট ও লম্বা প্যান্ট পরুন। – ঘরের মধ্যে যাতে মশা না ঢোকে তার ব্যবস্থা করুন। দরকার হলে জানলা ও দরজায় পর্দা ব্যবহার করুন। – এয়ারকন্ডিশনার ব্যবহার করতে পারেন। – এনভায়রনমেন্টাল প্রোটেকশন এজেন্সি-নিবন্ধিত পোকা প্রতিরোধক ব্যবহার করুন।
আরও পড়ুন : সাবধান হোন এখনই! এই তিন কাজ অবিলম্বে বন্ধ না করলে মস্তিষ্কের মৃত্যু অনিবার্য