AQI
Sign In

By signing in or creating an account, you agree with Associated Broadcasting Company's Terms & Conditions and Privacy Policy.

Omicron impact: কোভিড রুখতে এবং মৃত্যুহার ঠেকাতে ভরসা ভ্যাকসিনেই, জোর সওয়াল বিশেষজ্ঞদের

কোভিডের টিকাকরণের পাশাপাশি মেনে চলতে হবে যাবতীয় সুরক্ষাবিধি। মাস্ক, স্যানিটাইজেন এবং সামাজিক দূরত্ব মেনে চলা খুবই গুরুত্বের...

Omicron impact: কোভিড রুখতে এবং মৃত্যুহার ঠেকাতে ভরসা ভ্যাকসিনেই, জোর সওয়াল বিশেষজ্ঞদের
প্রতীকী ছবি
| Edited By: | Updated on: Jan 12, 2022 | 2:22 PM
Share

উদ্বেগজনক ভাবে বাড়ছে কোভিড আক্রান্তের সংখ্যা। ঘরে ঘরে জ্বর-সর্দি-কাশি। একদিনের মধ্যেই আক্রান্তের সংখ্যা প্রায় তিনগুণ হয়ে যাচ্ছে। ডেল্টার তুলনায় কোভিডের এই নয়া ভ্যারিয়েন্ট যে অনেক দ্রুত সংক্রামিত হচ্ছে একথা আগেই জানিয়েছিলেন চিকিৎসকরা। ১১ জানুয়ারি দিল্লি সরকারের তরফে একটি স্বাস্থ্য বুলেটিন প্রকাশ করা হয়। যেখানে বলা হয়েছে দিল্লিতেই ৫ থেকে ৯ জানুয়ারির মধ্যে কোভিড আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর সংখ্যা ৪৬। যার মধ্যে ৩৫ জনের কোভিড টিকার কোনও ডোজই ছিল না। বাকি জন নানা রকম শারীরিক সমস্যা নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন। পরে তাঁরা কোভিড আক্রান্ত হয়ে মারা যান।

এমনকী যাঁদের কোনও টিকা নেওয়া ছিল না তাঁদেরই কেবল রাখতে হয়েছিল অক্সিজেন সাপোর্টে। ৬ জানুয়ারি মুম্বই হাসপাতালে কোভিড আক্রান্ত হয়ে যাঁরা ভর্তি ছিলেন এবং অক্সিজেনের সাহায্য ছাড়া থাকতে পারছিলেন না তাঁদের মধ্যে ৯৬ শতাংশেরই কিন্তু কোনও টিকা নেওয়া নেই। শুধু মুম্বই নয়, চণ্ডীগড়, জয়পুর এবং বেঙ্গালুরুতে কোভিড আক্রান্ত হয়ে যাঁরা চিকিৎসাধীন তাঁদেরও টিকাকরণ হয়নি। এবং বেশিরভাগেরই বয়স ৫০-এর উপরে।

সাম্প্রতিক পরিসংখ্যান অনুযায়ী আমাদের দেশে এখনও পর্যন্ত ৯১ শতাংশের টিকাকরণ হয়েছে। প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে মাত্র ৬৬ শতাংশ টিকার দুটো ডোজই পেয়েছেন। কিন্তু এখনও মোট জনসংখ্যার ৩৪ শতাংশ টিকা নেননি। বা শারীরিক কোনও সমস্যার কারণে তাদের টিকাকরণ সম্ভব হয়নি। তবে এই মারাত্মক ভাইরাসের সঙ্গে লড়াই করতে আমাদের কী করণীয়, এই বিষয়ে নিউজ ৯ কথা বলেছিল একদল বিশেষজ্ঞের সঙ্গে। সেখানেই তাঁরা জোর দেন টিকাকরণের উপর। এবং জানান, ভাইরাসের সঙ্গে লড়াই করতে একমাত্র ভরসা ভ্যাকসিনেই।

২০২১ সালের একটি সমীক্ষায় দেখা গিয়েছিল অনেকেই টিকা নিতে আগ্রহী ছিলেন না। কিন্তু ২০২১ সালের অক্টোবরে দেখা যায় অনেকেই টিকা নিয়েছেন। তবুও কিছু মানুষ ছিলেন যাঁরা টিকার বিষয়ে সংশয়ে ছিলেন। এই বছর ডিসেম্বর মাসের মধ্যে ২৩ শতাংশ ভ্যাকসিনের কোনও ডোজই নেননি। তাঁরা জানিয়েছিলেন, শীঘ্রই তাঁরা টিকা নেওয়ার কথা ভাবছেন। ভ্যাকসিনের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নিয়ে তাঁরা চিন্তিত। আবার ১৬ শতাংশ জানিয়েছেন তাঁরা টিকা নিতে মোটেই উৎসাহী নন। কিন্তু ভ্যাকসিন নিয়ে কেন এমন অনীহা তৈরি হয়েছে মানুষের মধ্যে?

কারণ হিসেবে ভেলোর সিএমসির ভাইরোলজিস্ট টি জ্যাকব জন নিউজ ৯-কে জানান, ‘ভ্যাকসিনের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নিয়ে অযথাই আতঙ্ক তৈরি হয়েছে জনগণের মধ্যে। কিন্তু ডেল্টা ঝড়ে প্রচুর মানুষ টিকা নিতে এগিয়ে এসেছিলেন। আবার অনেকের মনে হয়েছিল, করোনা ঝড় সাময়িক। টিকা না নিলেও কাজ চলে যায়’। এ ব্যাপারে পুরোপুরি দোষ যে সরকারের সেকথাও কিন্তু মানতে নারাজ বিশেষজ্ঞরা। এছাড়াও জন আরও বলেন, সেই সময় হোয়্যাটসঅ্যাপ-টেলিগ্রামের মাধ্যমেও বেশ কিছু ভ্যাকসিন বিরোধী বার্তা ছড়িয়েছিল। সেখান থেকেও কিন্তু কিছু মানুষ প্রভাবিত হয়েছিলেন।

ICMR-এর অতিরিক্ত ডিরেক্টর সমীরণ পাণ্ডা যেমন বলেছেন, ‘ভ্যাকসিন নিয়ে এই উদাসীনতা শুধু ভারতেই নয়, অনেক দেশেই দেখা গিয়েছে। এমনকী অতীতে পোলিও ভ্যাকসিনের ক্ষেত্রেও ঠিক একই ঘটনা ঘটেছিল। ভ্যাকসিন নিয়ে একদল মানুষ অপপ্রচার চালাচ্ছেন। তাঁরা ভ্যাকসিনের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার উপরেই অতিরিক্ত জোর দিয়েছেন। যে কারণে মানুষ দ্বিধাগ্রস্ত, ভ্যাকসিন নিয়ে তৈরি হয়েছে অনীহা। আবার দ্বিতীয় ডোজ নেওয়ার আগে অনেকেই কোভিডে আক্রান্ত হয়েছিলেন। ফলে তাঁরা পুরোপুরি এড়িয়ে গিয়েছেন টিকার দ্বিতীয় ডোজ’।

ওমিক্রন থেকে বাঁচতে কি টিকাকরণই ভরসা? এ বিষয়ে বিশেষজ্ঞরা জানান, টিকা নেওয়া থাকলে রোগের তীব্রতা কম হবে। চট করে হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার প্রয়োজন পড়বে না। সেই সঙ্গে তিনি আরও যোগ করেন, ‘এবারের সংক্রমণে যে মানুষকে হাসপাতালে ভর্তি করতে হচ্ছে না, ভেন্টিলেটর লাগছে না তা কিন্তু ভাল ইঙ্গিত। এটি প্রমাণ করে কোভিড ভ্যাকসিন কিছুটা হলেও সুরক্ষা দেয়। টিকা দেওয়ার লক্ষ্যই হল শরীরে সংক্রমণ মোকাবিলা করার জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণে অ্যান্টিবডি তৈরি করা’।

গুরুগ্রামের মণিপাল হাসপাতালের বিশেষজ্ঞ অমিতাভ ঘোষ যেমন জানান, ‘টিকাকরণ এগিয়ে নিয়ে যাওয়াই আমাদের লক্ষ্য। আমরা চাই ভারতে কোভিড মৃত্যুহার কমাতে। হাসপাতালে যাতে কম মানুষ ভর্তি হন। ভ্যাকসিনের পাশাপাশি তাই মেনে চলতে হবে যাবতীয় কোভিড বিধি। মাস্ক, স্যানিটাইজেশন এবং সামাজিক দূরত্ব মেনে চলতেই হবে। গত ১০ দিনে কোভিড আক্রান্ত হয়ে যে সব রোগী আমার কাছে এসেছেন তাঁদের কারোরই তেমন তীব্রতা নেই, যেহেতু ভ্যাকসিনের দুটো ডোজই নেওয়া’।

এখনও পর্যন্ত কোভিডে যাঁদের মৃত্যু হয়েছে বা যাঁরা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন তাঁদের কারোরই কিন্তু টিকার কোনও ডোজই নেওয়া নেই। এর থেকেই প্রমাণিত হয় টিকার গুরুত্ব কতখানি।

আরও পড়ুন: Deltacron: জিনের গঠন ডেল্টার মতই, ‘ডেল্টাক্রন’ কি সত্যিই নতুন কোনও প্রজাতি নাকি ল্যাবের ভুল?