Asthma Awareness: অ্যাজমা রোগীরা ভুল করেও এই খাবারগুলো খাবেন না! ভয়ঙ্কর বিপদে পড়তে পারেন
Breath Health: ভিটামিন ডি-এর ঘাটতি থাকলে তাই চিকিৎসকের সঙ্গে অবশ্যই পরামর্শ করুন। চিকিৎসকের নির্দেশমতো ভিটামিন ডি সাপ্লিমেন্ট খাওয়া যায়।
ক্রনিক রোগ অ্যাজমা (Asthma)। এই অসুখে রোগীর ফুসফুসে বাতাস যাওয়ার পথ ফুলে যায়। ফলে বাতাস ঢোকার রাস্তা সঙ্কুচিত হয়ে পড়ে। রোগীর শ্বাসকষ্ট শুরু হয়। তাই রোগী জোরে জোরে শ্বাস টানার চেষ্টা করেন ও সাঁ সাঁ করে আওয়াজ হয়। অ্যাজমা রোগী মাত্রই জানেন হাঁপানির টানের যন্ত্রণা (Breathlessness)। তাই প্রত্যেক অ্যাজমা রোগীই (Asthma Patients) চান এমন একটা উপায় যার মাধ্যমে তাঁদের অ্যাজমার উপসর্গ খানিকটা হলেও কমবে। এমনকী কোনও বিশেষ ধরনের খাদ্য যা অ্যাজমা কমাতে পারে তাও তারা সেবন করে দেখতে চান। তবে কোনও কিছুই না জেনে খাওয়া উচিত নয়। তাই আসুন, দেখে নেওয়া যাক, অ্যাজমা রোগী কোন খাদ্য খেতে পারেন আর পারেন না…
অ্যাজমা রোগী যা খেতে পারেন
ভিটামিন-ডি সমৃদ্ধ খাদ্য: অ্যাজমা সম্পর্কিত একাধিক গবেষণায় দেখা গিয়েছে, বাচ্চা ও বয়স্কের শরীরে ভিটামিন ডি-এর ঘাটতি এই অসুখ হওয়ার ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়। এখানেই শেষ নয়। ভিটামিন একাধারে ফুসফুসের কার্যক্ষমতা বজায় রাখে, অন্যদিকে শ্বাসতন্ত্র সম্পর্কিত সংক্রমণ যেমন ‘কমন কোল্ড’-এর মতো সমস্যাও দূরে রাখার ক্ষমতা রাখে। ভিটামিন ডি-এর ঘাটতি থাকলে তাই চিকিৎসকের সঙ্গে অবশ্যই পরামর্শ করুন। চিকিৎসকের নির্দেশমতো ভিটামিন ডি সাপ্লিমেন্ট খাওয়া যায়। জানা গিয়েছে, দেহে ভিটামিন ডি-এর মাত্রা সঠিক থাকলে অ্যাজমা অ্যাটাকের সংখ্যা হ্রাস পায়। এছাড়া খেতে হবে ভিটামিন ডি পূর্ণ খাদ্য যেমন দই, কমলালেবুর রস, মাশরুম, ডিমের কুসুম, মাশরুম, চিজ ইত্যাদি।
তাজা সব্জি ও ফল: স্বাস্থ্যকর ও সুষম খাদ্যের কথা বললে ফল ও সব্জিকে কখনওই বাদ দেওয়া যাবে না। একাধিক গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে, রঙিন শাকসব্জি ও ফল অ্যাজমার অ্যাটাক কমাতে সাহায্য করে। এমনকী বাচ্চা ও প্রাপ্তবয়স্করাও যদি নিয়মিত পর্যাপ্ত মাত্রায় ফল ও শাকসব্জি খান, সেক্ষেত্রে তাদেরও অ্যাজমা হওয়ার আশঙ্কা কমে। খাওয়া যেতে পারে আপেল, কলা, অ্যাভোকাডো। সব্জির মধ্যে বেশি করে খেতে হবে গাজর, পালং, ব্রকোলি, মিষ্টি আলু ইত্যাদি।
ম্যাগনেশিয়ামপূর্ণ খাদ্য: সাম্প্রতিককালে ১১ থেকে ১৮ বছর বয়সি বাচ্চা বা বয়ঃসন্ধিকালের বাচ্চাদের মধ্যে এক সমীক্ষা চালানো হয়েছিল। দেখা গিয়েছে যে সমস্ত বাচ্চার শরীরে ম্যাগনেশিয়ামের মাত্রা অত্যন্ত কম, তাদের ফুসফুস সম্পর্কিত অসুখ যেমন অ্যাজমা হওয়ার ঝুঁকি বেশি থাকে। এই সমস্যা এড়াতে ডায়েটে রাখাতে হবে ম্যাগনেশিয়াম পূর্ণ খাদ্য। তাই প্রতিদিন খান— পালং, কুমড়ো বীজ, ডার্ক চকোলেট, কলা, অন্যান্য শাকসব্জি ইত্যাদি।
দানাশস্য: ওটস, ওটমিল, আটা, ভুট্টা ইত্যাদি খাদ্য পূর্ণ থাকে একাধিক খনিজ দ্বারা। অ্যাজমার অ্যাটাক হ্রাস করতে খনিজগুলির যথেষ্ট ভূমিকা আছে। তাই পাতে নিয়মিত দানাশস্য রাখলে তা অ্যাজমার আক্রমণও কমায়।
অ্যাজমার রোগীরা কী খাবেন না?
প্রিজারভেটিভ দেওয়া খাদ্য: যে কোনও ধরনের প্রিজারভেটিভ দেওয়া খাদ্য এড়িয়ে চলাই উচিত। বিশেষ করে সালফাইট যুক্ত খাদ্য গ্রহণ করা মানে গলায় অ্যালকোহল ঢালার মতোই বিষয় হয়ে দাঁড়ায়। আচার, বোতলবন্দি লেবুর রস, শুকনো ফলে দেদার সালফাইট মেশানো হয় যাতে এই ধরনের খাদ্যবস্তুর পচন দীর্ঘদিন ধরে রোধ করা সম্ভব হয়। অ্যাজমা রোগী সালফাইটযুক্ত খাদ্য খেলে তার অ্যাজমার অ্যাটাক হঠাৎ চাগিয়ে উঠতে পারে। এমনকী অ্যাটাকের মাত্রাবৃদ্ধিও করতে পারে সালফাইট।
পেটে গ্যাস উৎপন্ন করে এমন খাদ্য: পাকস্থলীতে গ্যাস তৈরি করে এমন খাদ্য কখনওই একজন অ্যাজমা রোগীর খাওয়া উচিত নয়। এই ধরনের খাদ্য অ্যাজমা অ্যাটাক হওয়ার ক্ষেত্রে ইন্ধন জোগাতে পারে। তাই সম্ভব হলে বীনস, বাঁধাকপি, কার্বোনেটেড ড্রিঙ্কস, পিঁয়াজ, রসুন এবং মাত্রাতিরিক্ত ভাজা ও পোড়া খাদ্য খাওয়া এড়িয়ে চলুন। এক সমীক্ষা অনুসারে শিশু এবং বয়ঃসন্ধিকালের বাচ্চা যারা সপ্তাহে তিনবারের বেশি ফাস্টফুড খায়, তাদের অ্যাজমা হওয়ার ঝুঁকি বৃদ্ধি পায়।
মনে রাখবেন—
• অ্যাজমার চিকিৎসা না হলে তা একসময় প্রাণঘাতী হতে পারে। • উপসর্গ দেখা দিলে চিকিৎসকের কাছে পরামর্শের জন্য যান। • চিকিৎসক ইনহেলার দিলে অবশ্যই ব্যবহার করুন। ইনহেলারই একমাত্র ভারসাযোগ্য চিকিৎসা। চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া ইনহেলার ব্যবহার বন্ধ করবেন না।