AQI
Sign In

By signing in or creating an account, you agree with Associated Broadcasting Company's Terms & Conditions and Privacy Policy.

Intestinal Malrotation: পেটের নাড়িভুড়ি জড়িয়ে গিয়েছিল মাত্র ৩৩ সপ্তাহের শিশুটির! কলকাতার ত্রয়ীর হাতযশে বাঁচল প্রাণ, জানুন সেই কাহিনি

Intestinal Malrotation: সাধারণত সদ্যজাতর ওজন দেড় থেকে দুই কিলো হলেও, জন্মের সময় এক কিলোগ্রামের নিচে ছিল এই শিশুটির ওজন। জন্মের পর থেকেই শুরু হয় পিত্ত বমি। মায়ের দুধও হজম করতে পারছিল না ছোট্ট শিশুটি। শিশুর শরীরে এই লক্ষণ দেখেই ডাক্তারবাবুর সন্দেহ হয় শিশুটির ইন্টেস্টিনাল ম্যালরোটেশনের সমস্যা হয়ে থাকতে পারে।

Intestinal Malrotation: পেটের নাড়িভুড়ি জড়িয়ে গিয়েছিল মাত্র ৩৩ সপ্তাহের শিশুটির! কলকাতার ত্রয়ীর হাতযশে বাঁচল প্রাণ, জানুন সেই কাহিনি
চিকিৎসক শৈবাল চক্রবর্তী, প্রতীপ পাল এবং অরুনাংশু চক্রবর্তী।
Follow Us:
| Updated on: Jun 08, 2025 | 1:50 PM

মাত্র ৩৩ সপ্তাহের বয়স বাচ্চাটির। এই বয়সে কেবল মায়ের দুধ খেয়েই দিন কাটে যে কোনও শিশুর। খাবার খাওয়া তো দূর, দাঁতও ফোটেনা। মেরে কেটে এক হাত সাইজ। সাধারণত দেড় থেকে দু’কিলো ওজন হয় সুস্থ স্বাভাবিক সদ্যজাতর। তবে আজ যাঁর গল্প আপনাকে বলব সে আর পাঁচটা সাধারণ বাচ্চার মতো নয়।

জন্মের পরেই তাঁর জীবনে নেমে এসেছিল চরম দুর্ভোগ। ছোট্ট শিশুটির শরীরে বাসা বাঁধে এক মারাত্মক রোগ। যার মারণ কামড়ে কুঁকড়ে যায় বড়রাও।

সাধারণত সদ্যজাতর ওজন দেড় থেকে দুই কিলো হলেও, জন্মের সময় এক কিলোগ্রামের নিচে ছিল এই শিশুটির ওজন। জন্মের পর থেকেই শুরু হয় পিত্ত বমি। মায়ের দুধও হজম করতে পারছিল না ছোট্ট শিশুটি। শিশুর শরীরে এই লক্ষণ দেখেই ডাক্তারবাবুর সন্দেহ হয় শিশুটির ইন্টেস্টিনাল ম্যালরোটেশনের সমস্যা হয়ে থাকতে পারে। এখানে বলে রাখি ইন্টেস্টিনাল ম্যালরোটেশন অর্থাৎ পেটের মধ্যে খাদ্যনালী যে স্থানে থাকা উচিত, সেখানে থাকে না। বরং নিজেদের মধ্যে অনেক সময় জড়িয়ে পেঁচিয়ে যায়।

এমন ঘটলে এমনিতে অস্ত্রপচার ছাড়া আর কোনও উপায় থাকে না। কিন্তু একটা ৩৩ সপ্তাহের শিশুর অপারেশন! ভাবলেও শিউরে ওঠে অনেকেই। অথচ অপারেশন ছাড়া কোনও গতি নেই। অপারেশন না করলে এই সমস্যার সমাধান হবে না। চলতেই থাকবে পিত্ত বমি। হজম হবে না কোনও খাবারই। অতএব সব পরিস্থিতি বিশদে বাবা-মায়ের কাছে ব্যাখ্যা করলেন চিকিৎসক। বোঝালেন অস্ত্রপচারের গুরুত্ব। অবশেষে অপারেশনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

আর এই একটা সিদ্ধান্ত জীবন বদলে দেয় শিশুটির। শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ এবং সার্জেন শৈবাল চক্রবর্তী, পেডিয়াট্রিক চিকিৎসক প্রতীপ পাল এবং অ্যানাস্থেসিস্ট চিকিৎসক অরুনাংশু চক্রবর্তী। এই ত্রয়ীর সাহসী পদক্ষেপে অসম্ভব সম্ভব হয়। সফল অস্ত্রপচারের শেষে ধীরে ধীরে ছন্দে ফিরছে শিশুটিও।

চিকিৎসক শৈবাল টিভি৯ বাংলা ডিজিটালকে জানান, ওইটুকু একটা শিশুকে সম্পূর্ণ অজ্ঞান করে পেট কেটে অস্ত্রপচার করা মোটে সহজ ছিল না। ওইটুকুর শিশুর অস্ত্রপচারের ক্ষেত্রে নানা ধরনের জটিলতা থাকে। প্রথমত ইমিউনিটি পাওয়ার অত্যন্ত কম। দ্বিতীয়ত ইনফেকশন হয়ে গিয়ে কোনও একটা বড় বিপদ হওয়ার সম্ভাবনা থেকেই যায়, তৃতীয়ত ওইটুকু শিশুকে সম্পূর্ণ অ্যানাস্থেসিয়া দেওয়াটাই প্রচন্ড ঝুঁকিপূর্ণ এবং শক্ত একটি কাজ। যেটা অত্যন্ত সুচারুভাবেই করেছেন চিকিৎসক অরুনাংশু চক্রবর্তী। তারপরেই প্রায় দেড় ঘণ্টার জটিল সফল অস্ত্রপচার করেন শৈবালবাবু।

কেবল অপারেশন সফল হলেই তো হল না। গুরুত্বপূর্ণ ছিল অপারেশন পরবর্তী পর্যায়ে রোগীর সঠিক যত্নআত্তি। ওইটুকু শিশু যার মা কাছে নেই। তাঁর পুষ্টিতে যাতে কোনও খেদ না থাকে তা নিশ্চিত করাটাও বড় চ্যালেঞ্জ। সেই পরীক্ষায় সফলভাবে উর্ত্তীর্ণ হয়েছেন চিকিৎসক প্রতীপ পাল। বর্তমানে নিজের মুখে খাবার খাচ্ছে শিশুটি।

টিভি৯ বাংলা ডিজিটালকে শৈবালবাবু বলেন, “আজকে অনেকেই উন্নত ভাল চিকিৎসা পাব এই আশায় দক্ষিণ ভারতে ছোটেন। এই ধরনের জটিল অস্ত্রপচারের সাফল্য এটাও প্রমাণ করে যে কলকাতাতেও উৎকৃষ্টমানের চিকিৎসা সম্ভব। সার্জিক্যাল এবং অ্যানাস্থেসিস্ট ক্ষেত্রে এটিকে মাইলস্টোন ঘটনা বললেও ভুল হবে না।”

আপনার সন্তানের এই সমস্যা হচ্ছে কিনা বুঝবেন কী ভাবে?

চিকিৎসক জানাচ্ছেন, সাধারণত জন্মের পর পর এমন সমস্যা বোঝা যায়। অনেক সময় ১০-১২ বছর বয়সে গিয়েও ধরা পড়ে। বিষয়টি নির্ভর করে সমস্যা কতটা জটিল তার উপরে। পিত্ত বমি এই রোগের একটা বড় লক্ষণ।