জরুরি অবস্থা জারি ইন্দিরার ভুল সিদ্ধান্ত, মানলেন নাতিও

জরুরি (Emergency) অবস্থা নিয়ে বিস্ফোরক মন্তব্য করলেন ইন্দিরার নাতি কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী (Rahul Gandhi)। বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ কৌশিক বসুর সঙ্গে একান্ত আলাপচারিতায় রাহুল বললেন, 'ভুল করেছিলেন ঠাকুমা'

জরুরি অবস্থা জারি ইন্দিরার ভুল সিদ্ধান্ত, মানলেন নাতিও
ফাইল চিত্র।
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Mar 03, 2021 | 11:51 AM

নয়া দিল্লি: দেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী দেশে জরুরি অবস্থা জারি করে ভুল করেছিলেন। বিস্ফোরক মন্তব্য করেছেন ইন্দিরার নাতি কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী (Rahul Gandhi)। বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ কৌশিক বসুর সঙ্গে একান্ত আলাপচারিতায় মঙ্গলবার রাহুল এমন বলেছেন।

রাহুল বলেন, “১৯৭৫ সাল থেকে ১৯৭৭ সাল অবধি দেশে ২১ মাসের জরুরি অবস্থা জারি ছিল। খর্ব করা হয়েছিল মানুষের সাংবিধানিক অধিকার। একেবারেই ভুল সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন ঠাকুমা।” কংগ্রেসের শীর্ষ নেতার মন্তব্য, জরুরি অবস্থার সময়ের সঙ্গে এখনকার পরিস্থিতির মৌলিক ফারাক রয়েছে। এখন রাষ্ট্রীয় স্বয়ং সেবক সংঘ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে নিজেদের লোক ঢোকাচ্ছে বলে অভিযোগ করেন রাহুল। তিনি এও বলেছেন, “কংগ্রেস দেশের প্রাতিষ্ঠানিক পরিকাঠামো দখল করতে চায় না। কংগ্রেসের সেই ক্ষমতাও নেই।”

শুনুন আলাপচারিতায় ঠিক কী বলেছেন রাহুল?

রাহুলের এই মন্তব্য ঘিরে ইতিমধ্যেই শুরু হয়ে গিয়েছে রাজনৈতিক জল্পনা। কীভাবে দেখছেন রাজনৈতিক নেতৃত্ব? প্রশ্ন করা হলে বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নান বলেন, “অর্ধেক সত্য প্রকাশ্যে আনা হচ্ছে। রাহুল গান্ধী যেটা বলেছেন, সেটা ইন্দিরা গান্ধীও বলেছিলেন। ইন্দিরা গান্ধীও জরুরি অবস্থা প্রত্যাহার করেছিলেন। ইন্দিরা গান্ধী নিজেই বলেছিলেন, জরুরি অবস্থার পুনরাবৃত্তি হবে না। সে সময় দেশে এমন একটা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল, যে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করা ছাড়া উপায় ছিল না। কিন্তু সে সময় এমন প্রচার করা হয়, মানুষ বিভ্রান্ত হয়েছিল।”

বঙ্গ বিজেপির প্রাক্তন সভাপতি তথাগত রায় বলেন, “রাহুল গান্ধী তাঁর চিরাচরিত ঢঙে কিছু অর্থহীন কথা বলেছেন। যেগুলোর আমি কোনও তাৎপর্য খুঁজে পাচ্ছি না। ওঁ বলেছে আরএসএস সমস্ত পদ নিজেদের লোক দিয়ে ভরিয়ে দিয়েছে। তার সঙ্গে তো জরুরি অবস্থা জারি করার কোনও সম্পর্ক নেই। ইন্দিরা গান্ধী সে সময় সন্ধিহান হয়ে পড়েছিলেন যে তিনি জিতবেন কিনা, তাই নিজের ওজন বুঝতেই নির্বাচন করেছিলেন। রাহুল গান্ধীর বক্তব্য। অর্থহীন।”

বাম পরিষয়ীয় দলের নেতা সুজন চক্রবর্তী বলেন, “জরুরি অবস্থা যেভাবে ৭৫ সালে হল, সেটা ভুল ও বেঠিক। তা মেনে নেওয়া যায় না। রাহুল গান্ধী যা বলেছেন, তা আগে বিভিন্ন সময়ে কংগ্রেস নেতারা বলেছেন। স্বৈরাচারি মনোভাবের প্রভাব যে গণতান্ত্রিক দেশে ভাল হয় না, তা প্রমাণিত।”

প্রসঙ্গত, ১৯৭৫ থেকে ১৯৭৭ সাল পর্যন্ত দেশে জারি ছিল জরুরি অবস্থা। সেই সময় কেন্দ্রে ক্ষমতায় ছিলেন ইন্দিরা গান্ধী। সে সময় জরুরি অবস্থা জারির জন্য এখনও সমালোচনার সম্মুখীন হতে হয় কংগ্রেসকে। বারেবারে সোচ্চার হতে দেখা গিয়েছে, বাম-বিজেপি নেতৃত্বকেও।

আরও পড়ুন: বিজেপিকে জিততে দেওয়া যাবে না, আবেদন নিয়ে কলকাতায় আসছেন সিঙ্ঘুর কৃষকরা

সম্প্রতি কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বলেছিলেন, “৪৫ বছর আগে ক্ষমতার লোভে দেশে জরুরি অবস্থা জারি করেছিলেন এক নেত্রী। এক রাতেই গোটা দেশ জেলে পরিণত হয়েছিল। সংবাদমাধ্যম থেকে শুরু করে বিচারব্যবস্থা ও বাক্য স্বাধীনতা সবকিছুই ছিনিয়ে নেওয়া হয়েছিল। তা কেবল এক পরিবারের সিদ্ধান্তেই।” সেই প্রসঙ্গ তুলে রাহুল গান্ধী বিস্ফোরক মন্তব্য করলেন। দেশের বর্তমান অবস্থার কথা বলতে গিয়ে রাহুল এও বলেন, যে সব প্রতিষ্ঠানগুলি দেশে গণতন্ত্র বজায় রাখতে সাহায্য করে, সেগুলিকেই সাম্প্রতিক কালে আঘাত করা হচ্ছে।