Uttarkashi tunnel: ‘ছোলা-মুড়ি আর সুড়ঙ্গের জল খেয়েই কেটেছে ১০ দিন’, TV9 বাংলাকে ভয়াবহ অভিজ্ঞতার কথা জানালেন কোচবিহারের যুবক
Tunnel worker: একদিকে পরিবারে অর্থনৈতিক প্রয়োজনীয়তা, অন্যদিকে জীবনের ঝুঁকি- এই দুই পরিস্থিতির মাঝে দাঁড়িয়ে রয়েছেন শ্রমিকেরা। বলা ভাল, সরকারের পরবর্তী পদক্ষেপের দিকেই তাকিয়ে তাঁরা। সরকার যদি কিছু সহায়তার কথা ঘোষণা করে! বাড়ি ফেরার আগে TV9 বাংলার মুখোমুখি হয়ে এমনটাই জানাচ্ছেন কোচবিহারের যুবক মানিক তালুকদার।

উত্তরকাশী: ১৭ দিন ধরে সুড়ঙ্গে (Silkyara tunnel) আটকে থাকার পর অবশেষে উদ্ধার হয়েছেন ৪১ শ্রমিক। যার মধ্যে বাংলার ৩ শ্রমিকও রয়েছেন। ঋষিকেশ এইমস হাসপাতালে চিকিৎসা করানোর পর এবার তাঁদের বাড়ি ফেরার পালা। আর কী এই সুড়ঙ্গের কাজে ফিরবেন? জবাব জানা নেই তাঁদের। একদিকে পরিবারে অর্থনৈতিক প্রয়োজনীয়তা, অন্যদিকে জীবনের ঝুঁকি- এই দুই পরিস্থিতির মাঝে দাঁড়িয়ে রয়েছেন শ্রমিকেরা। বলা ভাল, সরকারের পরবর্তী পদক্ষেপের দিকেই তাকিয়ে তাঁরা। সরকার যদি কিছু সহায়তার কথা ঘোষণা করে! বাড়ি ফেরার আগে TV9 বাংলার মুখোমুখি হয়ে এমনটাই জানাচ্ছেন কোচবিহারের যুবক মানিক তালুকদার। সুড়ঙ্গে ১৭ দিন ধরে আটকে থাকার ভয়াবহ অভিজ্ঞতার কথাও শোনালেন তিনি।
ধস নামার মুহূর্তের অবস্থা কেমন ছিল?
TV9 বাংলার মুখোমুখি হয়ে মানিক তালুকদার বলেন, “সেদিন (১২ নভেম্বর) ভোর ৫টার সময় হঠাৎ করেই সুড়ঙ্গে ধস নামে। প্রথমে পুরো রাস্তা বন্ধ হয়ে যায়নি। ফলে প্রথমে ওয়াকিটকির মাধ্যমে বাইরে যোগাযোগ করতে পারি এবং ধসের খবর জানাই। তারপর সুড়ঙ্গ থেকে জল বাইরে বের করি, ভিতরে কোনও দুর্ঘটনা ঘটলে এটা তার সংকেত। যাঁরা বাইরে এই ধরনের কাজ করেন, তাঁরা এই সংকেত দেখে বুঝতে পারেন। তারপর তাঁরা উদ্ধারের কাজ শুরু করেন।”
কীভাবে কাটালেন ১৭ দিন?
সুড়ঙ্গে থাকার অভিজ্ঞতা জানিয়ে মানিক তালুকদার বলেন, “সুড়ঙ্গের মুখ সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে গেলে ওয়কিটকিতে বাইরে যোগাযোগ করা যাচ্ছিল না। আমাদের সঙ্গে ছোলা, মুড়ি ছিল। সেটা অল্প-অল্প করে খেয়েই ১০ দিন কাটাই। সুড়ঙ্গের ভিতর যে জল ছিল, সেটাই পান করি। ১০ দিন পর বাইরে থেকে পাইপের মাধ্যমে খাবার, জল পাঠানো শুরু করে। তখন সেই খাবার খাই।”
আর কি এই কাজে ফিরবেন?
TV9 বাংলার মুখোমুখি হয়ে মানিক হালদার বলেন, “এখন সরকার যদি আমাদের কোনও সাহায্য না দেয় তাহলে তো কাজে আসতেই হবে। যদি কিছু সাহায্য দেয় তাহলে আসতে হবে না।”
জানা গিয়েছে, সিলকিয়ারা সুড়ঙ্গে আটকে থাকা ৪১ জন চুক্তিভিত্তিক শ্রমিক হিসাবেই নিযুক্ত ছিলেন। তাঁদের বেতন যা ছিল, সেটা এই ধরনের ঝুঁকিপূর্ণ কাজের জন্য যথেষ্ট নয় বলেই দাবি ওয়াকিবহাল মহলের। স্বাভাবিকভাবে কাজ না করলে সংসার কীভাবে চলবে? তাই আবার যে এই ঝুঁকিপূর্ণ কাজে ফিরে আসবেন না, সেকথা জোর দিয়ে বলতে পারছেন না মানিক তালুকদার।
তবে আপাতত গ্রামে ফিরে কয়েকদিন পরিবার-পরিজনদের সঙ্গে কাটাতে চান মানিক। পরিবারের লোকজন থেকে গ্রামবাসীরা তাঁকে দেখার জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে। তারপর সরকারের ঘোষণার দিকেই তাকিয়ে, সরকারের সিদ্ধান্তের উপরই তাঁর এই ঝুঁকিপূর্ণ কাজে ফেরার বিষয়টি নির্ভর করছে বলে জানান কোচবিহারের যুবক।
