নয়াদিল্লি: রাজ্যসভায় এবার দিঘার জগন্নাথ মন্দির। অধিবেশন চলাকালীন মন্দিরের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের সম্ভাব্য তারিখের কথা জানিয়ে অধ্যক্ষ জগদীপ ধনখড়কে বাংলায় আসার আমন্ত্রণ জানান তৃণমূল সাংসদ ডেরেক ও ব্রায়েন। কলকাতায় বড়দিন পালনের যে সাড়ম্বর সেই কথা বলতে গিয়েই এক ফাঁকে উল্লেখ করেন দিঘার জগন্নাথ মন্দিরকে।
দিন কয়েক আগেই দিঘা সফরে গিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। জগন্নাথ মন্দিরের কাজ কতটা এগিয়েছে, কতটা বাকি রয়েছে, সব কিছুই খতিয়ে দেখেন তিনি। আর তারপরেই সাংবাদিক সম্মেলন থেকে জানিয়ে দেন উদ্বোধনের দিনক্ষণ। একেবারে পুরীর মন্দিরের আদলেই তৈরি হচ্ছে দিঘার এই জগন্নাথ মন্দির। প্রথম ধাপে মন্দির তৈরিতে ২০০ কোটি টাকা ধার্য করা হলেও, ইতিমধ্যে খরচ হয়ে গিয়েছে প্রায় ২৫০ কোটি টাকা। দিঘা সফরে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী জানান,’মার্বেলের মূর্তি তৈরি হয়ে গিয়েছে, কাঠেরটা খানিকটা বাকি আছে। সব মিলিয়ে আরও কিছু টাকা খরচ হবে। ট্রাস্টি তৈরি করা হয়েছে মুখ্যসচিবের নেতৃত্বে।’
পুরীর মন্দিরের থেকে কোনও অংশে কম নয় দিঘার এই নির্মীয়মাণ জগন্নাথ ধাম। এমনকী থাকবে ধ্বজা তোলার ব্যবস্থাও। মহাসমারোহে আয়োজন হবে রথযাত্রাও। এক কথায় পুরীকে পর্যটনের দিক থেকে ‘টেক্কা’ দিতে জোরকদমে তৈরি দিঘা।
ইতিমধ্যে, ধনখড়কে আমন্ত্রণ নিয়ে চড়েছে রাজনৈতিক তরজা। ওয়াকিবহাল মহলের মতে, রাজ্যসভার মতো যুক্তরাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানে দাঁড়িয়ে দিঘার জগন্নাথ মন্দিরের প্রচারেই অধ্যক্ষকে আমন্ত্রণ জানালেন ডেরেক। শুধু তা-ই নয়, ডেরেকের এই কৌশল জাতীয় স্তরে পুরীকে পিছনে ঠেলে মুখ্যমন্ত্রীর দিঘাকে পর্যটনে এগোতেও সাহায্য করবে বলেই মত। অবশ্য, দিঘার এই মন্দিরকে নিয়ে তৃণমূলকে কটাক্ষ করতে একটু সময় ব্যয় করেনি পদ্ম শিবির। বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারি বলেন, ‘আমি জগন্নাথ দেবের ভক্ত। চারধামের একধাম পুরী ধাম। একে নকল করবেন না।’ প্রসঙ্গত, সামনেই ২৬ এর নির্বাচন। তার আগেই বাংলাদেশে হিন্দু নিধন ও মন্দিরে ধ্বংসের মতো ঘটনা আঁচ ফেলেছে বাংলায়। এই ইস্যুকে ধরেই নিজেদের ভোটব্যাঙ্ক সামলাতে ময়দানে নেমে পড়েছে বিজেপি। পিছিয়ে নেই তৃণমূল। সন্ত্রাস, বাটোয়ারার রাজনীতির মাঝেই বঙ্গের বুকে হিন্দু ভোট টানতে জগন্নাথ মন্দিরকে হাতিয়ার করছে তৃণমূল, মত বিশেষজ্ঞদের।