ব্যারিকেড ভেঙে সরকারি কার্যালয়ের সামনেই তাঁবু! মহাপঞ্চায়েতের নামে পুলিশের সঙ্গে ধুন্ধুমার কৃষকদের
Farmers Protest at Haryana's Karnal: এখনও অবধি ওই এসডিএমের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের না হওয়াকে কেন্দ্র করেই মঙ্গলবার কৃষকরা প্রতিবাদ করতেশুরু করে। কর্নলের সেক্রেটারিয়েট ঘিরে তারা অবস্থান বিক্ষোভ দেখাতে চাইলেও পুলিশ ব্যরিকেড গিয়ে এগোনো থেকে বাধা দেয়।
কর্নল: অশান্তির আশঙ্কা করা হয়েছিল আগেই, কর্নলে মহাপঞ্চায়েতে (Mahapanchayat) সত্য়িই ধুন্ধুমার বাঁধাল আন্দোলনকারী কৃষকরা (Protesting Farmers)। বাধ্য হয়ে পুলিশ জল কামানও ব্যবহার করে। তবে তাতেও দমে যায়নি কৃষকরা, বিভিন্ন সরকারি দফতরের বাইরেই তাঁবু খাটিয়ে বসে রইলেন তাঁরা।
গত সপ্তাহে মুজাফ্ফরনগর মহাপঞ্চায়েতের সভা থেকেই বলে দেওয়া হয়েছিল পরবর্তী মহাপঞ্চায়েতের আয়োজন করা হয়েছে হরিয়ানার কর্নলে। কিন্তু অশান্তির আশঙ্কায় আগেই রাজ্য প্রশাসনের তরফে জমায়েতের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। এর প্রধান কারণ ছিল গতমাসে মুখ্য়মন্ত্রীর বৈঠক ঘিরে ঝামেলা।
গত ২৮ অগস্ট হরিয়ানার কর্নলে (Karnal) একটি দলীয় বৈঠকে যোগ দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মনোহর লাল খট্টর। সেই বৈঠক ঘিরেই প্রতিবাদ করছিল কৃষকরা। পুলিশ ব্যারিকেড দিয়ে গোটা এলাকা ঘিরে রাখলেও বৈঠক ঘিরে অশান্তির আশঙ্কাতেই ঘটনাস্থানে আসেন কর্নলের সাব-ডিভিশনাল ম্যাজিস্ট্রেট আয়ুষ সিনহা। সেখানেই তিনি নিরাপত্তা ব্যবস্থা খতিয়ে দেখে পুলিশকে নির্দেশ দেন, কৃষকরা যেন কোনওমতেই ব্যারিকেড টপকে এগোতে না পারে। কৃষকদের আটকাতে মেরে মাথা ফাটিয়ে দেওয়ার নির্দেশও দেওয়া হয় তাদের।
এই মন্তব্যের পরই আয়ুষ সিনহাকে পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়। মুখ্যমন্ত্রী মনোহর লাল খট্টর মন্তব্য়ের সমালোচনা করলেও পরোক্ষে সরকারি কর্মচারীকেই সমর্থন জানান। সাংবাদিক বিবৃতি প্রকাশ করে তিনি বলেছিলেন, “ওই অফিসারের শব্দচয়ন ভুল হলেও রাজ্যে আইন-শৃঙ্খলা বজায় রাখতে কঠোর পদক্ষেপ তো নিতেই হবে।”
এ দিকে, ওই এসডিএমের বিরুদ্ধে কড়া শাস্তির দাবি তোলে আন্দোলনকারী কৃষকরা। এসডিএমের বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ যাতে দায়ের করা হয়, সেই দাবিতেও ৬ সেপ্টেম্বর অবধি তারা সময় দিয়েছিলেন রাজ্য প্রশাসনকে। এই সময়ের মধ্য়ে তাদের দাবি পূরণ না হলে বৃহত্তর আন্দোলনের পথে হাঁটার হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন তারা।
এখনও অবধি ওই এসডিএমের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের না হওয়াকে কেন্দ্র করেই মঙ্গলবার কৃষকরা প্রতিবাদ করতেশুরু করে। কর্নলের সেক্রেটারিয়েট ঘিরে তারা অবস্থান বিক্ষোভ দেখাতে চাইলেও পুলিশ ব্যরিকেড গিয়ে এগোনো থেকে বাধা দেয়। কিন্তু আন্দোলনকারী কৃষকরা সেই ব্যরিকেড ভেঙেই এগিয়ে আসার চেষ্টা করে। পতাকা দেখানো, সরকার বিরোধী স্লোগান দিতে দেখা যায় তাদের। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ বাধ্য হয়ে জলকামান ব্যবহার করে। আটক করা হয় রাকেশ তিকাইত সহ একাধিক কৃষক নেতাদের।
রাতেই কর্নলের ওই সরকারি দফতর ঘেরাও করে আন্দোলনকারী কৃষকরা। স্বরাজ ইন্ডিয়া নামক কৃষক সংগঠনের প্রধান যোগেন্দ্র যাদব বলেন, “ঘেরাও কর্মসূচি শুরু করা হয়েছে। শান্তিপূর্ণভাবেই এই আন্দোলন জারি রাখা হবে। “
সংযুক্ত কিসান মোর্চার তরফে প্রকাশিত বিবৃতিতে বলা হয়, “আয়ুষ সিনহার শাস্তির দাবিতে প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলা হলেও তারা আমাদের দাবি মানতে নারাজ। তারা অনবরত ওই এসডিএমের সপক্ষেই বলেছেন। ১১টি কৃষক সংগঠন মিলিতভাবে পদযাত্রার জন্য যে আবেদন জানিয়েছিল, সেই আবেদনও খারিজ করে দিয়েছে প্রশাসন।”
কৃষকদের দাবি, গত ২৮ অগস্ট পুলিশের লাঠিচার্জের কারণে সুশীল কাজলা নামক এক কৃষকোর মৃত্যু হয়। তাঁকে ন্যায়বিচার পাইয়ে দেওয়ার জন্যই এই মহাপঞ্চায়েতের আয়োজন করা হয়েছে এবং এসডিএমের শাস্তির দাবি করা হয়েছে। যদিও পুলিশের দাবি, ওই কৃষক লাঠিচার্জে নয়, হৃৎরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গিয়েছেন।
গতকালের মহাপঞ্চায়েতের দুদিন আগেই প্রশাসনের তরফে সাফ জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল যে কোনও প্রকার জমা করা যাবে না।এরপরও কৃষকরা নিজেদের সিদ্ধান্তেই অনড় থাকে। সুরক্ষা নিশ্চিকত করতে ৪০ কম্পানি পুলিশ মোতায়েন করা হয়। পাঁচটি জেলায় ব্যরিকেড বসানো হয়, বন্ধ করে দেওয়া হয় ইন্টারনেট, মোবাইল নেটওয়ার্ক ও এসএমএস পরিষেবাও।
আরও পড়ুন: বলেছিলেন দেশ থেকে ব্রাহ্মণ তাড়াতে, বিতর্কিত মন্তব্যের জেরে এ বার জেলে যেতে হল মুখ্যমন্ত্রীর বাবাকে!
আরও পড়ুন: Nipah Virus: আতঙ্ক বাড়াচ্ছে নিপা, জারি হাই অ্যালার্ট