Seethakka: মাও নেত্রী থেকে রাজ্যের মন্ত্রী, রেবন্ত রেড্ডির এই বোনকে চেনেন?
Telangana Minister: গরিব শ্রমিকের পরিবারে জন্ম নেওয়া আনাসুয়া পেটের টানেই লড়তে মাত্র ১৪ বছর বয়সে মাওবাদী সংগঠনে নাম লিখিয়েছিলেন। তবে পড়াশোনা থামাননি। ধীরে ধীরে মাওবাদী সংগঠনের কম্যান্ডান্ট হয়ে ওঠেন আনাসুয়া। তাঁর নতুন পরিচয় হয় সীতাক্কা। মাওবাদীদের সঙ্গে যুক্ত থাকার জন্য জেলও খাটতে হয়েছে তাঁকে।
হায়দরাবাদ: এক সময়ে মাওবাদী (Maoist) নেত্রী ছিলেন। হামলা, নাশকতার অভিযোগও ছিল তাঁর বিরুদ্ধে। তিনিই কি না আজ রাজ্যের মন্ত্রী। অশিক্ষিতও নন তিনি, মাওবাদী সংগঠন ছেড়ে মূলস্রোতে ফেরার পর কষ্ট করে অর্জন করেছেন আইনের ডিগ্রি। তিনি আর কেউ নন, তেলঙ্গানার বিধায়ক দানাসারি আনাসুয়া। তবে জনগণের কাছে তিনি পরিচিত সীতাক্কা (Seethakka) নামেই। তেলঙ্গানার নবনির্বাচিত মুখ্যমন্ত্রী রেবন্ত রেড্ডিও (Revanth Reddy) তাঁকে বোন বলেই ডাকেন। এক সময়ে যে হাতে অস্ত্র তুলে নিয়েছিলেন, আজ সেই হাতেই যুবসমাজকে শিক্ষিত করার উদ্যোগ নিয়েছেন তিনি।
মালুগুর আদিবাসী বিধায়ক দানাসারি আনাসুয়া। তাঁকে তিনটি গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রী পদ দিয়েছে কংগ্রেস, পঞ্চায়েত রাজ, গ্রামোন্নয়ন এবং নারী ও শিশু কল্যাণ দফতর। তবে রাজনৈতিক কেরিয়ারের থেকেও বেশি আকর্ষণীয় মাও নেত্রী থেকে কংগ্রেস নেত্রী হয়ে ওঠার কাহিনি।
গরিব শ্রমিকের পরিবারে জন্ম নেওয়া আনাসুয়া পেটের টানেই লড়তে মাত্র ১৪ বছর বয়সে মাওবাদী সংগঠনে নাম লিখিয়েছিলেন। তবে পড়াশোনা থামাননি। ধীরে ধীরে মাওবাদী সংগঠনের কম্যান্ডান্ট হয়ে ওঠেন আনাসুয়া। তাঁর নতুন পরিচয় হয় সীতাক্কা। মাওবাদীদের সঙ্গে যুক্ত থাকার জন্য জেলও খাটতে হয়েছে তাঁকে।
এরপর ১৯৯৭ সালে জীবনের অন্যতম বড় সিদ্ধান্ত নেন সীতাক্কা। মাওবাদী সংগঠন ছেড়ে জীবনের মূল স্রোতে ফেরার সিদ্ধান্ত নেন। মতাদর্শের পার্থক্যেক জন্য স্বামীর সঙ্গেও সম্পর্ক ছেদ করেন। মাওবাদীদের সঙ্গে যুক্ত থাকাকালীন এক পুত্র সন্তানের জন্ম দিয়েছিলেন সীতাক্কা। তবে মাওবাদীদের আন্ডারগ্রাউন্ড নেতাদের নিয়ম অনুসারে তাঁকে সেই সন্তান পরিত্য়াগ করতে হয়। কিন্তু মেয়ে মূলস্রোতে ফিরতেই সীতাক্কার মা ওই সন্তানকে খুঁজে বের করেন এবং বড় করতে শুরু করেন।
ছেলের ভবিষ্যতের কথা ভেবেই আইন নিয়ে পড়াশোনা শুরু করেন সীতাক্কা। গতবছর অক্টোবর মাসেই তিনি পিএইচডি ডিগ্রিও লাভ করেন। সম্প্রতি এলএলএম পরীক্ষাতেও বসেন তিনি।
সমাজ কল্যাণের লক্ষ্য নিয়েই ২০০৪ সালে সিদ্ধান্ত নেন রাজনীতিতে যোগ দেওয়ার। প্রথমে তেলুগু দেশম পার্টিতে যোগ দেন তিনি। সেখানেই পরিচয় হয় রেবন্ত রেড্ডির সঙ্গে। দুজনের মধ্যে মধুর সম্পর্ক তৈরি হয়। রেবন্ত তাঁকে বোন বলে ডাকেন। রেবন্তের সঙ্গেই তিনি কংগ্রেসে যোগ দেন।
২০০৯ সালে প্রথমে টিডিএসের টিকিটে বিধায়ক হয়েছিলেন তিনি। এরপরে ২০১৮ ও ২০২৩ সালে মুলুগু কেন্দ্র থেকেই কংগ্রেসের টিকিটে নির্বাচিত হন তিনি। সীতাক্কার জনপ্রিয়তা এতটাই বেশি যে বৃহস্পতিবার হায়দরাবাদের এলবি স্টেডিয়ামে যখন শপথ গ্রহণ হচ্ছিল, সবথেকে বেশি হাততালি পড়ে তার শপথ গ্রহণের সময়ই।
সীতাক্কা বলেন, “আমি আইন নিয়ে পড়েছি। সেই আদালতে দাঁড়িয়েই মামলা লড়েছি , যেখানে একসময় অভিযুক্ত হিসাবে দাঁড়িয়েছিলাম।”