Himanta Biswa Sarma: বহুবিবাহ, বাল্যবিবাহ, দুয়ের বেশি বাচ্চা চলবে না, ‘মিয়া’দের শর্ত হিমন্তবিশ্ব শর্মার
Bangladeshi Muslims in Assam: শনিবার (২৩ মার্চ) মিয়া সম্প্রদায়কে অসমের আদিবাসী হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার একগুচ্ছ শর্ত দিয়েছেন। অসমের মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, মিয়া সম্প্রদায়কে অসমের আদি বাসিন্দা হিসেবে স্বীকৃতি পেতে কিছু সাংস্কৃতিক অনুশীলন এবং নিয়ম অবশ্যই মেনে চলতে হবে। দুই সন্তানের মধ্যে পরিবারকে সীমাবদ্ধ রাখা, বহুবিবাহ না করা, নাবালিকা বিয়ে বন্ধ করার মতো শর্ত আরোপ করেছেন তিনি।
গুয়াহাটি: চলতি মাসের শুরুতেই নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন কার্যকর করেছে কেন্দ্রীয় সরকার। এই অবস্থায় বাংলাভাষী মুসলমানরা, যারা ‘মিয়া’ নামে পরিচিত, তারা অসমের আদি বাসিন্দা কিনা, সেই প্রশ্ন উঠে গিয়েছে। শনিবার (২৩ মার্চ) মিয়া সম্প্রদায়কে অসমের আদিবাসী হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার একগুচ্ছ শর্ত দিয়েছেন। অসমের মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, মিয়া সম্প্রদায়কে অসমের আদি বাসিন্দা হিসেবে স্বীকৃতি পেতে কিছু সাংস্কৃতিক অনুশীলন এবং নিয়ম অবশ্যই মেনে চলতে হবে। দুই সন্তানের মধ্যে পরিবারকে সীমাবদ্ধ রাখা, বহুবিবাহ না করা, নাবালিকা বিয়ে বন্ধ করার মতো শর্ত আরোপ করেছেন তিনি।
হিমন্তবিশ্ব শর্মা বলেছেন, “মিয়ারা অসমের আদি বাসিন্দা কিনা, সেটা ভিন্ন বিষয়। আমরা বলতে চাই, তারা যদি অসমের আদি বাসিন্দা হয়ে ওঠার চেষ্টা করে, তাহলে আমাদের কোনও আপত্তি নেই। কিন্তু এর জন্য, তাঁদের বাল্যবিবাহ, এবং বহুবিবাহের অনুশীলন ত্যাগ করতে হবে। নারী শিক্ষায় উত্সাহ দিতে হবে। আমি সবসময় বলি, ‘মিয়াদের’ অসমের আদি বাসিন্দা হওয়ার ক্ষেত্রে কোনও সমস্যা নেই। কিন্তু তাদের দুই-তিনজন করে স্ত্রী থাকতে পারে না। এটা অহমিয়া সংস্কৃতি নয়। বৈষ্ণব মঠের জমি দখল করে কীভাবে কেউ অসমের আদি বাসিন্দা হওয়ার দাবি করে?”
এর পাশাপাশি, অসমের মুখ্যমন্ত্রী শিক্ষাগত অগ্রাধিকারের উপর জোর দিয়েছেন। মিয়াদের মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডে পড়াশোনা করার বদলে, সরকারি বোর্ডে পড়াশোনা করা উচিত বলে জানিয়েছেন হিমন্তবিশ্ব শর্মা। ডাক্তারি এবং ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ার উপর জোর দিয়েছেন তিনি। একইসঙ্গে মহিলাদের শিক্ষিত করার এবং পৈতৃক সম্পত্তিতে তাদের উত্তরাধিকারের অধিকারের উপর জোর দিয়েছেন তিনি।
লোকসভা নির্বাচনের আগে, হিমন্তবিশ্ব শর্মার এই মন্তব্য অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে। গত বছরের অক্টোবরে, তিনি বলেছিলেন বিজেপির অন্তত আগামী ১০ বছর মিয়াদের ভোটের দরকার নেই। তারা যতক্ষণ পর্যন্ত বহুবিবাহ, বাল্যবিবাহের মতো প্রথাগুলি ছেড়ে বের হচ্ছে, ততদিন তাদের ভোট বিজেপির লাগবে না। এমনকি, মিয়াদের বিজেপি ভোট না দেওয়ার জন্য অনুরোধ করেছিলেন তিনি। পরিবার পরিকল্পনা, বাল্যবিবাহ বন্ধ, মৌলবাদ বন্ধের মতো কাজগুলি করতে মিয়াদের অন্তত ১০ বছর লাগবে বলে মন্তব্য করেছিলেন তিনি। তারপরই বিজেপি তাদের ভোট চাইবে। মিয়ারা মূলত বাংলাদেশি মুসলিম। অসমের বেশ কয়েকটি অঞ্চলে ছড়িয়ে আছেন তাঁরা। অসমের ১২৬টি বিধানসভা আসনের মধ্যে প্রায় ৩০টির ভাগ্য নির্ধারিত হয় তাদের ভোটে। মিয়া মুসলমানদের ভোটের দরকার নেই বললেও, অহমিয়া মুসলমানদের ভোট নিজেদের দিকে চাইছে তারা। অসমের মুসলিমদের মধ্যে মাত্র ৩৭ শতাংশ অহমিয়া-ভাষী। বাকি ৬৩ শতাংশই মিয়া মুসলমান।