Kidney trafficking ring: চোরা পথে ভারতে এসে কিডনি খোয়ালেন তিন বাংলাদেশি

kidney trafficking ring: অনেকেই মরিয়া হয়ে ভারতে পালিয়ে আসতে চাইছেন। এর জন্য অনেকেই আশ্রয় নিচ্ছেন ভুয়ো মেডিক্যাল ভিসার। এরই মধ্যে ধরা পড়ল এক অপরাধ চক্র। চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে তারা চোরা পথে বাংলাদেশিদের ভারতে আনত। তারপর...

Kidney trafficking ring: চোরা পথে ভারতে এসে কিডনি খোয়ালেন তিন বাংলাদেশি
প্রতীকী ছবিImage Credit source: TV9 Bangla
Follow Us:
| Updated on: Sep 04, 2024 | 7:35 PM

নয়া দিল্লি: বর্তমানে এক রাজনৈতিক অস্থিরতার মধ্য দিয়ে চলছে বাংলাদেশ। শেখ হাসিনা ক্ষমতাচ্যূত হওয়ার পর থেকে সেই দেশে হামলা বেড়েছে হিন্দুদের উপর। তার জন্য অনেকেই মরিয়া হয়ে ভারতে পালিয়ে আসতে চাইছেন। এর জন্য অনেকেই আশ্রয় নিচ্ছেন ভুয়ো মেডিক্যাল ভিসার। এরই মধ্যে, ধরা পড়ল ভারতের এক কিডনি পাচার চক্র। যারা কাজের লোভ দেখিয়ে মেডিক্যাল ভিসায় বাংলাদেশিদের ভারতে এনে তাদের কিডনি কেড়ে নিত। বিনিময়ে অবশ্য সামান্য কিছু অর্থও দিত। টাইমস অব ইন্ডিয়ার এক প্রতিবেদনে, এই কিডনি চক্রের শিকার হওয়া তিন বাংলাদেশির কথা জানানো হয়েছে।

তিন ব্যক্তিরই পরিচয় গোপন রাখা হয়েছে। প্রথম জনের বয়স ৩০ বছর। বাংলাদেশে তিনি কাপড়ের ব্যবসা করতেন। কিন্তু দোকানে আগুন লেগে তার পুরো ব্যবসা পুড়ে ছাই হয়ে গিয়েছিল। এক এনজিও থেকে তিনি ৮ লক্ষ টাকা ধার নিয়ে ফের দোকানটা দাঁড় করাতে চেয়েছিলেন। কিন্তু, ৩ লক্ষ টাকার বেশি ঋণ শোধ রে পারেননি। আর্থিক চাপের মুখে এক বন্ধুর পরামর্শ নিতে গিয়েছিলেন। বন্ধু তাঁকে ভারতে গিয়ে নতুন করে জীবন শুরুর পরামর্শ দিয়েছিল৷ সেই বন্ধুই তাঁকে পাসপোর্ট, মেডিক্যাল ভিসা, এমনকি ভারতে চাকরিরও ব্যবস্থা করে দিয়েছিল। তবে, ভারতে আসার পর ওই ব্যক্তি জানতে পারেন, চাকরি-টাকরি কিছু নেই। বদলে, তাঁকে কিডনি বিক্রি করতে হবে। তিনি রাজি হননি। কিন্তু, তাঁর পাসপোর্ট এবং ভিসা কেডে নিয়ে তারা বলেছিল, কিডনি না বিক্রি করলে তিনি আর কোনোদিন ভারত থেকে ফিরতে পারবেন না। ফলে তিনি বাধ্য হয়েছিলেন কিডনি বিক্রি করতে।

দ্বিতীয় ব্যক্তির বয়স ৩৫ বছর। তাঁকেও ভারতে কাজের প্রলোভন দেখানো হয়েছিল। তাসকিন নামে এক ব্যক্তি চাকরির প্রতিশ্রুতি দিয়ে তাকে দিল্লিতে পাঠিয়েছিল। দুজন লোক তাঁকে একটি হোটেলে নিয়ে গিয়েছিল। এরপর তাঁকে বলা হয়, এক হাসপাতালে কাজ পাবেন তিনি। তার জন্য কিছু মেডিকেল পরীক্ষার দরকার। রক্ত ​​পরীক্ষা ও ইসিজি-সহ প্রায় ১৫-২০টি পরীক্ষা হয়। তারপর, এক নার্স একটি ইনজেকশন দিতেই তিনি জ্ঞান হারিয়েছিলেন। জ্ঞান ফিরেছিল দুদিন পর। তিনি দেখেছিলেন তাঁর পেটে একটি সেলাইয়ের দাগ। তাঁকে জানানো হয় তাঁর একটি অস্ত্রোপচার হয়েছে। এরপর তাঁর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের বিশদ জেনে, সেখানে ৪ লক্ষ টাকা জমা করা হয়। তবে তাঁর পাসপোর্ট কেড়ে নেওয়া হয়েছিল। এর মধ্যে তাঁর ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে যায়। এরপরই তাঁকে জানানো হয়, তিনি চাকরি পাবেন না। তাঁকে বাংলাদেশে ফিরে যেতে বলা হয়।

তৃতীয় ব্যক্তিও একই ফাঁদে পড়েছিলেন। তাঁর সঙ্গে ফেসবুকে যোগাযোগ করে অরণ্য নামে এক ব্যক্তি ভারতে চাকরি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। এমনকি প্রশিক্ষণের সময় বৃত্তি দেোয়া হবে, এই কথাও বলেছিল সে। ভারতে আসার পর তাঁর বেশ কিছু মেডিক্যাল পরীক্ষা করা হয়। এরপর একইভাবে তাঁর কিডনি অস্ত্রোপচার করে বের করে নেওয়া হয়। টাইমস অব ইন্ডিয়াকে তিনি বলেছেন, মাত্র ৬ দিনে তাঁর শরীর থেকে ৪৯ টিউব রক্ত টানা হয়েছিল।

এই তিন বাংলাদেশির অভিযোগের ভিত্তিতে, ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৪ ধারার অধীনে একটি মামলা দায়ের করেছে পুলিশ। চার্জশিট দাখিল করে তারা শুনানির প্রস্তুতি নিচ্ছে। সম্প্রতি, অঙ্গ পাচারের বেআইনি ব্যবসা নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারও উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। ট্রান্সপ্লান্টেশন অব হিউম্যান অর্গান অ্যান্ড টিস্যুস অ্যাক্ট, ১৯৯৪-এর ১৮ নম্বর ধারা অনুযায়ী, এই ধরনের অপরাধে ২০ লক্ষ থেকে ১ কোটি টাকা পর্যন্ত জরিমানা এবং ৫ বছর থেকে ১০ বছরের কারাদণ্ড হতে পারে।

আরও খবর পড়তে ডাউনলোড করুন Tv9 বাংলা অ্যাপ (Android/ iOs)