AQI
Sign In

By signing in or creating an account, you agree with Associated Broadcasting Company's Terms & Conditions and Privacy Policy.

তিন দিনের ইডি হেফাজতে ধৃত অ্যালকেমিস্ট কর্তা কেডি সিং

বুধবার দিল্লি থেকে তাঁকে গ্রেফতার করে ইডি।

তিন দিনের ইডি হেফাজতে ধৃত অ্যালকেমিস্ট কর্তা কেডি সিং
ধৃত কেডি সিং।
| Edited By: | Updated on: Jan 13, 2021 | 3:35 PM
Share

নয়া দিল্লি: ইডির হাতে গ্রেফতার অ্যালকেমিস্ট কর্তা কেডি সিং। বুধবার দিল্লি থেকে গ্রেফতার করা হয় তৃণমূলের রাজ্যসভার এই প্রাক্তন সাংসদকে। আর্থিক দুর্নীতির মামলায় এদিনই তাঁকে ডেকে পাঠিয়েছিল ইডি। জিজ্ঞাসাবাদে সন্তোষজনক জবাব না পাওয়ায় এই গ্রেফতারি। এদিন আদালতে তোলা হলে ১৬ জানুয়ারি পর্যন্ত তাঁকে ইডি হেফাজতের নির্দেশ দেওয়া হয়।

কেডির উপর দীর্ঘদিন ধরেই নজরদারি চালাচ্ছিল ইডি। তাঁর সংস্থা অ্যালকেমিস্টের বিরুদ্ধে বাজার থেকে টাকা তোলার অভিযোগ রয়েছে। ইডি সূত্রে খবর, ২৩৯ কোটি টাকার বেআইনি আর্থিক লেনদেনে অভিযুক্ত তিনি। বুধবার এ বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদের জন্যই তাঁকে ডেকে পাঠায় ইডি। কিন্তু তাঁর কথায় অসঙ্গতি নজরে আসে। তারপরই তাঁকে গ্রেফতার করা হয়।

আরও পড়ুন: মানিকতলায় আগুন, ঘটনাস্থলে দমকলের ১১টি ইঞ্জিন

২০১০ সালে ঝাড়খন্ড মুক্তি মোর্চা কেডি সিংকে রাজ্য সভায় পাঠায়। মেয়াদ ফুরোনোর আগেই সেখান থেকে তুলে তাঁকে রাজ্যসভায় পাঠায় তৃণমূল। যে ক’বছর সাংসদ ছিলেন, খুব একটা দলীয় কর্মসূচিতে তাঁকে দেখা যায়নি। বৈঠকেও বিশেষ থাকতেন না। বরাবরই পর্দার আড়ালে থেকেছেন তৃণমূলের এই প্রাক্তন সাংসদ। তবে দিল্লিতে তাঁর ক্ষমতা-প্রতিপত্তি সর্বজনবিদিত। রাজধানীর পাওয়ার-করিডরে তাঁর অবাধ বিচরণ ছিল।

কিন্তু বাংলায় যখন ‘চিট ফান্ড’ কেলেঙ্কারির হাওয়া চলছে, সারদা, রোজভ্যালি নিয়ে হইহই কাণ্ড সে সময় উঠে এসেছিল অ্যালকেমিস্টের নামও। অভিযোগ, বেআইনিভাবে বাজার থেকে প্রায় ১৯০০ কোটি টাকা তোলে কেডি’র সংস্থা। এরপর থেকেই ইডির আতসকাঁচের নিচে ছিলেন তিনি। নারদা কাণ্ডে কেডি সিংকে জিজ্ঞাসাবাদও করেছিল সিবিআই ।

এদিন কেডি সিংয়ের গ্রেফতারি প্রসঙ্গে তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায় বলেন, “ইডি যেটা করেছে সেটা তাদের নির্দিষ্ট যে আইন রয়েছে সেই আইন মেনে করেছে। এই বিষয়ে আমার কিছু বলার নেই। তবে কেডি সিংয়ের সঙ্গে দীর্ঘদিন আমাদের কোনও সম্পর্ক নেই।” একইসঙ্গে বর্ষীয়ান এই সাংসদের বক্তব্য, “অনেক ক্ষেত্রেই কেন্দ্রীয় সরকার সিবিআই এবং ইডিকে রাজনৈতিক স্বার্থে ব্যবহার করেছে। তবে এক্ষেত্রে সেই ধরনের অভিযোগ করছি না।”

কেডি সিংকে রাজ্যসভার সাংসদ পদ দেওয়া আমার ব্লান্ডার, বলেছিলেন মমতা

২০১০ সালের ১৬ ডিসেম্বর তৃণমূলে যোগ দেন ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চার রাজ্যসভার সাংসদ কেডি সিং। ২০১১ সালে সিপিএম নেতা গৌতম দেব তৃণমূলের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন, তৃণমূল ভবন থেকে ভোটে লড়ার জন্য প্রার্থীদের ১৫ লক্ষ করে টাকা দিয়েছে তৃণমূল নেতৃত্ব। সেই সময় এই কাজে মুকুল রায় ও কেডি সিংকে অভিযুক্ত করেন তিনি।

২০১১ সালে পশ্চিমবঙ্গের নির্বাচনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল এই কেডি সিংয়ের। ১৩ মে পরিবর্তনের দিনেও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কালীঘাটের বাড়িতে স্বমহিমায় ছিলেন কেডি। ২০১৪ সালে কেডি সিং ঝড়খণ্ডের রাজ্যসভার সাংসদ পদ থেকে ইস্তফা দেন। ওই বছরই মিঠুন চক্রবর্তী, আহমেদ হাসান ইমরান, যোগেন চৌধুরীদের সঙ্গে কেডি সিংকেও রাজ্যসভায় তৃণমূলের প্রার্থী করেন মমতা।

সেই রাজ্যসভার ভোটে বাম ও কংগ্রেস বিধায়কদের নিয়ে ঘোড়া কেনাবেচার অভিযোগ ওঠে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। সেক্ষেত্রেও আঙুল উঠেছিল মুকুল ও কেডির দিকেই। ২০১৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনের সময় প্রকাশ্যে আসে নারদা স্টিং অপারেশন ভিডিয়ো। চরম অস্বস্তিতে পড়েও বিধানসভা নির্বাচনে জয় পায় তৃণমূল।

সেই সময় অভিযোগ ওঠে কেডি সিংয়ের অর্থেই হয়েছিল এই স্টিং অপারেশন। এর পর থেকেই তৃণমূলের সঙ্গে দূরত্ব তৈরি হওয়া শুরু হয় কেডির। একটি টিভি চ্যানেলের সাক্ষাৎকারে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন, “কেডি সিংকে রাজ্যসভার সাংসদ পদ দেওয়া আমার ব্লান্ডার।” তারপর থেকে আর যোগাযোগ ছিল না কেডি- তৃণমূলের। কিন্তু, তৃণমূল তাঁকে দল থেকে সাসপেন্ড করেনি। ২০২০ সাল অবধি তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ ছিলেন কেডি সিং।