AQI
Sign In

By signing in or creating an account, you agree with Associated Broadcasting Company's Terms & Conditions and Privacy Policy.

Maharashtra: কোভিড কেড়েছে প্রাণ! মৃত বাবাকে চোখের আড়াল করতে নারাজ ছেলে যা করলেন, নজির…

Covid in Maharashtra: ১৫ লক্ষ টাকা দিয়ে তৈরি করা হয়েছে এই সিলিকন ওয়াক্স স্ট্যাচু। দেখে মনে হচ্ছে যেন সত্যিই ঘরে বসে আছেন ঘরের কর্তা।

Maharashtra: কোভিড কেড়েছে প্রাণ! মৃত বাবাকে চোখের আড়াল করতে নারাজ ছেলে যা করলেন, নজির...
১৫ লক্ষ টাকা দিয়ে তৈরি করা হয়েছে এই সিলিকন ওয়াক্স স্ট্যাচু।
| Edited By: | Updated on: Sep 25, 2021 | 7:54 AM
Share

মুম্বই: এক প্রাণঘাতী করোনা (Covid-19) বিশ্বজুড়ে যে কত প্রাণ কেড়েছে কোনও ‘ট্র্যাকার’-এর পরিসংখ্যানে তাকে মাপা বোধহয় ঠিক হবে না। কত মানুষকে যে সংক্রমণ গোগ্রাসে গিলেছে তা হিসাব দেওয়া সত্যিই দুষ্কর। এমন বহু ক্ষেত্রে হয়েছে, শরীরে করোনা থাকলেও মৃত্যুর কারণ হিসাবে সরকারি নথিতে বলা হয়েছে ‘কোমর্বিডিটি’! কিন্তু হতে পারত, এই সংক্রমণ তাঁকে না ঘিরলে প্রিয়জনের সঙ্গে মানুষটা থেকে যেতেন আরও কিছু সময়। এরকমই একজন মহারাষ্ট্রের (Covid in Maharashtra) সাংলি জেলার রবসাহেব সামরব কোরে। সম্প্রতি যাঁর স্মৃতিতে তাঁর ছেলে তৈরি করেছেন একটি সিলিকন মূর্তি। উদ্দেশ্য একটাই, বাবা যেন কখনও চোখের আড়াল না হন।

রবসাহেব সামরব কোরে নাগপুরে এক্সাইজ অফিসার পদে চাকরি করতেন। ৫৫ বছর বয়স। একেবারে পেটানো চেহারা। করোনার প্রথম ঢেউয়ের সময় দাপিয়ে কাজ করেছেন মানুষটি। কিন্তু গত বছর অগস্টের শেষে তিনি কোভিড পজিটিভ হন। ৬ সেপ্টেম্বর মৃত্যু হয় তাঁর। রবসাহেবের এ ভাবে চলে যাওয়া মেনে নিতে পারেনি তাঁর পরিবার। মেনে নেওয়াও যায় না! স্ত্রী সারাদিন ঘরে থম মেরে বসে থাকেন। ৩২ বছরের ব্যবসায়ী ছেলে অরুণ কোরেরও বাবাকে হারিয়ে সব সময় মন খারাপ।

ব্যবসায় সারাদিন ব্যস্ত থাকার পর যেটুকু সময় পান ইউটিউব, ফেসবুকেই ডুবে থাকেন অরুণ। এই সোশ্যাল প্ল্যাটফর্ম থেকেই অরুণের মাথায় এই আইডিয়া আসে। অরুণ সর্বভারতীয় এক সংবাদমাধ্যমকে জানান, “বাবার চলে যাওয়া আমাদের গোটা পরিবারের কাছে মাথার উপর আকাশ ভেঙে পড়ার মতো। আমরা সব সময় তাঁকে মিস করি। একদিন আমি ইউটিউবে ভিডিয়ো দেখছিলাম। হঠাৎই দেখি একটি ভিডিয়োতে কর্ণাটকের এক ব্যবসায়ী তাঁর স্ত্রীকে হারানোর পর স্ত্রীর একটি সিলিকন ওয়াক্স স্ট্যাচু তৈরি করেছেন। তখনই আমার মাথায় আসে, আমিও যদি বাবাকে এ ভাবেই আবার ঘরে ফিরিয়ে আনতে পারি।”

এরপরই অরুণ তাঁর এক বন্ধু বিজয় পাটিলের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। বিজয়ই বন্ধুকে বেঙ্গালুরুর সেই শিল্পীর ফোন নম্বর জোগাড় করে দেন। অরুণের কথায়, “দু’ মাসের মধ্যে স্ট্যাচুটি তৈরি করে দেন শিল্পী। গত সপ্তাহেই আমি বেঙ্গালুরু গিয়ে ওই মূর্তি নিয়ে আসি। প্রথমবার দেখে আমি নিজেই হকচকিয়ে গিয়েছিলাম। এক্কেবারে আমার সত্যিকারের বাবা। ওই মূর্তি ঘরে আনার পর থেকে একটা বারের জন্য মনে হয়নি বাবা আমাদের সঙ্গে নেই। হয়তো সে কথা বলে না, নড়াচড়া করে না। কিন্তু মনে হয় বাবা সঙ্গেই আছে।”

অরুণ ভেবেছিলেন সিলিকনের মূর্তি তৈরি করলে তা সহজে নড়ানো যেমন সম্ভব। তেমনই পরিষ্কার করাও অনেক সুবিধা। তার থেকেও সব থেকে বড় বিষয় হল সিলিকন স্ট্যাচু হওয়ায় সেটি ঘরের ভিতরেই থাকে। রবসাহেবের স্ত্রী লক্ষ্মীদেবীর কথায়, “আমার স্বামীর মৃত্যুর আমরা একেবারে দিশাহীন হয়ে পড়ি। সব সময় কেমন যেন একটা মুষড়ে থাকতাম। আমার ছেলে ও জামাই ঠিক করে, ওনাকে আমাদের মাঝেই রাখবে। এরপরই এই স্ট্যাচু তৈরির সিদ্ধান্ত।”

১৫ লক্ষ টাকা খরচ করে এই সিলিকনের মূর্তিটি তৈরি করেছে কোরে পরিবার। কমপক্ষে ৫০ বছর এটিকে অনায়াসে রাখা যাবে। সাংলির পুলিশ কলোনির কাছে একটি বাংলোতে কোরে পরিবারের বসবাস। ঘরের ভিতরে একটি ছোট মিউজিয়াম মতো তৈরি করেছে তারা। সেখানে প্রয়াত রবসাহেবের উর্দি, মেডেল, সাম্মানিক সমস্ত কিছু রাখা আছে। আত্মজীবনীও লেখা শুরু করেছিলেন সৌখিন এই আবগারি দফতরের আধিকারিক। খুব শীঘ্র তাঁর অসমাপ্ত লেখাও শেষ করা হবে বলে জানান লক্ষ্মীদেবী।