BMW hit and run case in Mumbai: প্রেমিকাকে ৪০ বার ফোন, মহিলাকে পিষে দেওয়ার পর ৭২ ঘণ্টা কীভাবে কাটান মিহির?
BMW hit and run case in Mumbai: ৭২ ঘণ্টা পুলিশের চোখে ধুলো দিয়ে লুকিয়ে ছিলেন। শেষপর্যন্ত মুম্বইয়ের ওরলিতে গাড়ির ধাক্কায় মহিলার মৃত্যুতে অভিযুক্ত মিহির শাহকে মঙ্গলবার গ্রেফতার করে পুলিশ। তাঁকে ১৬ জুলাই পর্যন্ত পুলিশ হেফাজতে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছে আদালত। কিন্তু, এই ৭২ ঘণ্টা কোথায় ছিলেন মিহির? পুলিশি তদন্তে উঠে আসছে একের পর এক তথ্য।
মুম্বই: তাঁর বিএমডব্লু(BMW) গাড়ির ধাক্কায় মৃত্যু হয়েছে এক মহিলার। রবিবার মুম্বইয়ের ওরলিতে সেই দুর্ঘটনার ৭২ ঘণ্টা পর গ্রেফতার হয়েছেন অভিযুক্ত মিহির শাহ। তাঁকে ১৬ জুলাই পর্যন্ত পুলিশ হেফাজতে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছে আদালত। মহারাষ্ট্রে শিন্ডেসেনার নেতা রাজেশ শাহর পুত্র মিহির মত্ত অবস্থায় গাড়ি চালাচ্ছিলেন বলে অভিযোগ। পুলিশ জানিয়েছে, দুর্ঘটনার পর নিজের প্রেমিকাকে ৪০ বার ফোন করেছিলেন মিহির। দুর্ঘটনার পর মিহির ও তাঁর গাড়ির চালক বান্দ্রার কালা নগরে গাড়ি নিয়ে চলে যান। সেখানে গিয়ে গাড়ির নম্বর প্লেটও খুলে ফেলেন।
দুর্ঘটনার পর ৭২ ঘণ্টা কী করেন মিহির?
দুর্ঘটনার পর কালা নগরে গাড়ি ফেলে রেখে অটো ধরেন বছর চব্বিশের মিহির। গোরেগাঁওয়ে প্রেমিকার বাড়িতে যান। পুলিশ জানিয়েছে, প্রেমিকার বাড়িতে ২ ঘণ্টা বিশ্রাম নেন। তারই মধ্যে মিহিরের বোনকে ফোন করেন তাঁর প্রেমিকা। এবং দুর্ঘটনার কথা জানান। মিহিরের বোন গোরেগাঁওয়ে যান। সেখান থেকে মিহিরকে নিয়ে বোরিভালিতে নিজেদের বাড়িতে আনেন।
বোরিভালিতে আসার পর মা, দুই বোন এবং একজন বন্ধু অভদীপকে নিয়ে শাহপুরে একটি রিসর্টে গিয়ে ওঠেন মিহির। মুম্বই থেকে ওই রিসর্টের দূরত্ব ৭০ কিমি। পুলিশ যখন তাঁদের খুঁজছিল, তখন মিহির ও তাঁর সঙ্গে থাকা সবার মোবাইল বন্ধ ছিল। ফলে মোবাইলের লোকেশন ট্র্যাক করতে পারেনি পুলিশ। মিহিরের বাবা রাজেশ এবং গাড়িচালককে অবশ্য পুলিশ গ্রেফতার করে। সোমবার রাতে বিরারের বাড়ির উদ্দেশে রওনা দেন মিহির। মঙ্গলবার সকালে মিনিট ১৫ ফোন চালু করেছিলেন মিহিরের বন্ধু অভিদীপ। তখনই তাঁদের লোকেশন জানতে পারে পুলিশ। তারপরই মিহিরকে গ্রেফতার করা হয়।
বুধবার মিহিরকে আদালতে তোলা হলে বিচারক ১৬ জুলাই পর্যন্ত পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দেন। পুলিশ সূত্রে খবর, মিহিরের প্রেমিকাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হতে পারে। এক পুলিশ অফিসার জানান, ঘটনার বিবরণ দিয়ে মিহির কী বলেছিলেন, তাঁর প্রেমিকার কাছ থেকে সেটা জানতে চান তদন্তকারীরা। তাঁর বাড়িতে যখন মিহির গিয়েছিলেন, তখন মত্ত অবস্থায় ছিলেন কি না, তাও জানতে চায় পুলিশ। আর এসবের উত্তর পেতেই আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হতে পারে মিহিরের প্রেমিকাকে।
এর আগে গত ১৯ মে পুনেতে এক কিশোরের বিলাসবহুল পোর্শে গাড়ির ধাক্কায় দুই যুবক-যুবতীর মৃত্যু হয়। মত্ত অবস্থায় ওই কিশোর পোর্শে গাড়িটি চালাচ্ছিলেন বলে অভিযোগ। ওই ঘটনার পর প্রথমে জামিন পেয়ে গিয়েছিলেন ওই কিশোর। ঘটনাটি নিয়ে শোরগোল শুরু হয়। বাতিল হয় ওই কিশোরের জামিন। মহারাষ্ট্রের বিরোধী দলগুলির অভিযোগ, দুটি ঘটনাতেই অভিযুক্তদের সঙ্গে শাসক-ঘনিষ্ঠতা রয়েছে। অভিযুক্তদের বাঁচানোর চেষ্টা হয়েছে বলেও বিরোধীদের অভিযোগ। মিহির কী করে ৭২ ঘণ্টা পুলিশের চোখে ধুলো দিয়ে লুকিয়ে থাকলেন, সেই প্রশ্ন উঠেছে।
মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী একনাথ শিন্ডে অবশ্য স্পষ্ট করে দিয়েছেন, পুলিশ কাউকে আড়াল করবে না। অভিযুক্ত যে কেউ হোন না কেন, তিনি ছাড়া পাবেন না। অভিযুক্ত মিহিরের বাবা রাজেশ শাহ পালঘর জেলায় শিন্ডেসেনার সহ-সভাপতি ছিলেন। বুধবার তাঁকে সেই পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে।