বাজেটের মুখে ৭ লক্ষ কোটি টাকার হিসেব খুঁজছেন নির্মলা!

ডিসেম্বরের শেষে এসে দেখা যাচ্ছে আদায় হয়েছে মাত্র ১৫ লক্ষ ১৩ হাজার কোটি টাকা। ডিসেম্বরে রেকর্ড জিএসটি আদায় হলেও ঘাটতি পূরণে অথৈ জলে নির্মলার মন্ত্রক।

বাজেটের মুখে ৭ লক্ষ কোটি টাকার হিসেব খুঁজছেন নির্মলা!
ফাইল চিত্র
Follow Us:
| Updated on: Jan 24, 2021 | 4:06 PM

নয়া দিল্লি: বাজেটের আগে ‘ভাঁড়ে মা ভবানি’ রাজকোষ। তার অনেকটা দায় যে কোভিড পরিস্থিতি মেনে নিচ্ছেন অর্থমন্ত্রকের আধিকারিকরা। মনে করা হচ্ছে, চলতি অর্থবর্ষে ঘাটতির হিসাবই দিতে হবে অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামনকে। সেই অঙ্কটা সব মিলিয়ে প্রায় ৭ লক্ষ কোটি টাকা। চলতি অর্থবর্ষে ২৪ লক্ষ ২৩ হাজার কোটি টাকা রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল কেন্দ্রের। কিন্তু ডিসেম্বরের শেষে এসে দেখা যাচ্ছে আদায় হয়েছে মাত্র ১৫ লক্ষ ১৩ হাজার কোটি টাকা। ডিসেম্বরে রেকর্ড জিএসটি আদায় হলেও ঘাটতি পূরণে অথৈ জলে নির্মলার মন্ত্রক।

বিগত অর্থবর্ষগুলিতেও একাধিকবার নির্দিষ্ট লক্ষ্যমাত্রায় পৌঁছনো সম্ভব হয়নি। তবে এবার করোনা কোপ, লকডাউনের দাপট ও বেকারত্বের জেরে ব্যাপক হারে কমেছে রাজস্ব আদায়। ফলস্বরূপ ভাঁড়ারে ঢোকেনি পর্যাপ্ত টাকা। বেলাগাম ঘাটতিতে বিধ্বস্ত অর্থমন্ত্রক। চলতি অর্থবর্ষে ঘাটতি ৩.৫ শতাংশে বেঁধে রাখতে চেয়েছিলেন নির্মলা। কিন্তু পরিস্থিতি যে দিকে যাচ্ছে ঘাটতি ছাড়াতে পারে ৭-৮ শতাংশও।

মানুষের হাতে টাকা নেই। লকডাউনের জেরে দীর্ঘ সময়ের জন্য বন্ধ ছিল উৎপাদন। দিনকয়েক হল বিমান চলছে, সচল হচ্ছে পরিস্থিতি। কিন্তু যা হওয়ার তা হয়ে গিয়েছে লকডাউনের ৬ মাসের মধ্যেই। রাজ্যের কোষাগারগুলির হালও একই। বিভিন্ন রাজ্যের অর্থমন্ত্রীদের বক্তব্য অনুযায়ী, বড় অঙ্কের টাকা ব্য়য় হয়েছে করোনা যুদ্ধে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ঘাটতি কমাতে হলে অন্য পথে হেঁটে বর্তমান রূপরেখা বদলাতে হবে কেন্দ্রকে।

অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামনও জানিয়েছেন, এবারের বাজেট হবে একেবারে আলাদা। বিগত অর্থবর্ষগুলির ক্ষেত্রে দেখা গিয়েছে, ১৯-২০ অর্থবর্ষের পর থেকেই ক্রমেই কমতে শুরু করেছে রাজস্ব আদায়ের পরিমাণ। কোভিড পরিস্থিতির আগে থেকেই ঝিমুনি ধরেছে জিডিপিতে। তাই বিশেষজ্ঞদের মতে লক্ষ্যমাত্রা না পূরণ করতে পারার দায় করোনার উপরে চাপালেই হবে না। ২০১৭-১৮ অর্থবর্ষে পূরণ লক্ষ্যমাত্রার থেকে বেশি রাজস্ব আদায় হয়েছিল। ১৯-২০ অর্থবর্ষের কোপ নামার পর কেন্দ্র একাধিক ব্যবস্থা নিলেও প্রভাব পড়েনি রেখচিত্রে। ক্রমেই নেমেছে গ্রাফ।

অলঙ্করণ: অভীক দেবনাথ

আরও পড়ুন: সাড়ে তিন ঘণ্টা অপেক্ষা করিয়ে ‘অপমান’, স্থির হল না আগামি বৈঠকের দিনও

অর্থবর্ষের প্রথম ত্রৈমাসিকে লম্বা ধস নেমেছিল জিডিপিতে। সংকোচন হয়েছিল প্রায় ২৪ শতাংশ। পরবর্তী ত্রৈমাসিকে একটু উন্নতি হলেও ঋণাত্মকেই ছিল জিডিপি। দ্বিতীয় ত্রৈমাসিকে ভারতের জিডিপি ছিল মাইনাস ৭.৫। তৃতীয় ত্রৈমাসিকে সামান্য সম্প্রসারণের পূর্বাভাস দিয়েছে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক।

অলঙ্করণ: অভিজিৎ বিশ্বাস

কিন্তু চলতি অর্থবর্ষের সামগ্রিক জিডিপি থাকবে মাইনাসেই। সামগ্রিক অর্থবর্ষে ৭.৫ শতাংশ সংকোচনের আভাস দিয়েছে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক। ন্যাশনাল স্ট্যাটিস্টিকস অফিসের পূর্বাভাস অনুযায়ী, সংকোচন হতে পারে ৭.৭ শতাংশের। এমতাবস্থায় নতুন কী ধরনের বাজেট দেন অর্থমন্ত্রী, তার দিকেই তাকিয়ে আছে গোটা দেশ।