AQI
Sign In

By signing in or creating an account, you agree with Associated Broadcasting Company's Terms & Conditions and Privacy Policy.

Noida: উড়বে না ড্রোন, চলবে না গাড়ি, ঘরছাড়া এলাকাবাসী – ‘টুইন টাওয়ার’ ধ্বংসে চলছে যুদ্ধ-প্রস্তুতি

Noida Twin Towers Demolition: রবিবার (২৮ অগস্ট), বেলা আড়াইটেয় ভেঙে ফেলা হবে নয়ডার অবৈধ টুইন টাওয়ার। তার জন্য চলছে রীতিমতো যুদ্ধ-প্রস্তুতি।

Noida: উড়বে না ড্রোন, চলবে না গাড়ি, ঘরছাড়া এলাকাবাসী - 'টুইন টাওয়ার' ধ্বংসে চলছে যুদ্ধ-প্রস্তুতি
প্রস্তুতি চলছে নয়ডা টুইন টাওয়ার ধ্বংসের
| Edited By: | Updated on: Aug 24, 2022 | 7:41 PM
Share

নয়া দিল্লি: রবিবার (২৮ অগস্ট), বেলা আড়াইটেয় ভেঙে ফেলা হবে টুইন টাওয়ার। নয়ডার ৯৩এ সেক্টরের অবস্থিত এই ‘অ্যাপেক্স’ এবং ‘সায়ান’ নামে পরিচিত টাওয়ারদুটির উচ্চতা প্রায় ১০০ মিটার, দিল্লির কুতুব মিনারের থেকেও বেশি উঁচু। ‘সুপারটেক’ সংস্থার তৈরি এই দুটি অবৈধ টাওয়ারই ভেঙে ফেলা হবে। আর তার জন্য প্রায় যুদ্ধকালীন প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। টাওয়ার দুটির আশপাশে ‘এক্সক্লুশন জ়োন’ বা ‘বর্জিত এলাকা’ চিহ্নিত করা হয়েছে। যে এলাকার মধ্যে কোনও ব্যক্তি, যানবাহন, পশু প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না। শুধু তাই নয়, ওই এলাকায় কোনও ড্রোনও উড়তে দেওয়া হবে না বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। বলা হয়েছে, ওই এলাকার বাইরে ড্রোন ওড়ানো যেতে পারে, তবে তার জন্য পুলিশের অনুমতি লাগবে।

সূত্রের খবর, ওই দুটি অবৈধ টাওয়ারের পাশে দুটি আবাসন রয়েছে – এমারেল্ট কোর্ট এবং এটিএস ভিলেজ। রবিবার টাওয়ার দুটি ধ্বংস করার সময়, ওই দুটি আবসনের সকল আবাসিকদের নিরাপদ এলাকায় সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হবে। ওই দিন সকাল ৭টাতেই তাঁদের বাড়ি ছাড়তে হবে, আবার ফিরবেন সেই সন্ধ্যায়। বর্জিত এলাকার মধ্যে নয়ডা-গ্রেটার নয়ডা এক্সপ্রেসওয়ের একটা অংশও পড়ছে। আগামী রবিবার, সোয়া দুটো থেকে পৌনে তিনটে পর্যন্ত ওই রাস্তায় যান চলাচল বন্ধ রাখতে হবে। ওই অবৈধ টাওয়ার দুটি ধ্বংস করার সময়ে যাতে কোনও বিপদ না ঘটে, তাই সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবেই ওই বর্জিত এলাকা চিহ্নিত করা হয়েছে।

বুধবার (২৪ অগস্ট), সংবাদ সংস্থা এএনআই-কে গৌতম বুদ্ধ নগরের পুলিশের ডেপুটি কমিশনার রাম বদন সিং বলেছেন, “টুইন টাওয়ারের সামনে ৪৫০ মিটার এলাকা জুড়ে বর্জিত এলাকা চিহ্নিত করা হয়েছে। এর মধ্যে একটি রাস্তা ও পার্ক অন্তর্ভূক্ত থাকবে। টাওয়ারদুটির অপরদিকে ২৫০ মিটার এলাকায় থাকবে বর্জিত এলাকার মধ্যে। বর্জিত এলাকাটি ড্রোনের জন্য নো ফ্লাই জ়োন হিসেবে থাকবে। তবে, বর্জিত এলাকার বাইরে ড্রোন ওড়ানো যাবে। তার জন্য অনেক আগে থেকে স্থানীয় পুলিশের অনুমতি নিতে হবে।”

সূত্রের খবর, ১০০ মিটার দীর্ঘ ওই দুটি টাওয়ার ধ্বংস করার জন্য ৩,৭০০ কিলোগ্রাম বিস্ফোরক ব্যবহার করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে এই দুটি টাওয়ার ধ্বংসের দায়িত্বপ্রাপ্ত এডিফিস ইঞ্জিনিয়ারিং সংস্থা। প্রজেক্ট ইঞ্জিনিয়ার ময়ুর মেহতা জানিয়েছেন, বিস্ফোরণের জন্য ২০,০০০ টি কানেকশন তৈরি রাখা হয়েছে। রবিবার, সেগুলি জুড়ে দেওয়া হবে। এই অবৈধ টুইন টাওয়ারের আশপাশের বাড়িগুলির বাসিন্দাদের সরিয়ে নিয়ে গেলেও, বিস্ফোরণের কম্পনে বাড়িগুলির ক্ষতি হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন অনেকে। তবে প্রজেক্ট ইঞ্জিনিয়ার ময়ুর মেহতার দাবি, নয়ডা সিসমিক জ়োন ৪-এর সমান ভূমিকম্পও সহ্য করতে পারে। বাড়িগুলিও সেই মতোই নকশা করা হয়েছে। তাই, ৬ মাত্রার ভূমিকম্প হলেও বাড়িগুলির কিছু হওয়ার কথা নয়।

কম্পন কোনও সমস্যা না হলেও, এই ক্ষেত্রে ধুলো অবশ্যই বড় সমস্যা বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গ। ধুলো নিয়ন্ত্রণের জন্য ইতিমধ্যেই একটি বিশেষ কাপড়ের কয়েক পরত দিয়ে টাওয়ার দুটিকে ঢেকে ফেলা হয়েছে। ইঞ্জিনিয়ারদের হিসেব অনুযায়ী, সব মিলিয়ে প্রায় ৩৫,০০০ ঘনমিটার ধ্বংসাবশেষ তৈরি হবে। নয়ডা কর্তৃপক্ষ ইতিমধ্যেই সেই ধ্বংসাবশেষ পরিষ্কার করার জন্য শ্রমিক এবং যন্ত্রপাতি তৈরি রেখেছে। তারাই আশপাশের রাস্তাঘাট, বাড়ি-ঘর ধুলোমুক্ত করবে। ধ্বংসাবশেষের একটা অংশ ওই টাওয়ারদুটির বেসমেন্টেই রেখে দেওয়া হবে। বাকি অংশ অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হবে, পরে বিজ্ঞানসম্মত উপায়ে সেগুলির ব্যবস্থা করা হবে।

২০২১ সালের ৩১ অগস্ট ৩ মাসের মধ্যে টাওয়ারদুটি ধ্বংস করার নির্দেশ দিয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট। তবে, এর আগে বেশ কয়েকবার দিন পিছোনো হয়েছে। মানচিত্র তৈরি এবং নির্মাণ পরিকল্পনার সঙ্গে জড়িত নয়ডার কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে মামলা করারও নির্দেশ দেয় আদালত। আদালত আরও বলেছিল ১২ শতাংশ সুদ-সহ বাড়ির ক্রেতাদের অর্থ ফেরত দিতে হবে। তবে বাড়ি দুটি কীভাবে নিরাপদে ধ্বংস করা যায়, সেটাই ছিল চ্যালেঞ্জের। শেষ পর্যন্ত ঠিক হয়েছে, এর জন্য ‘জলপ্রপাত ব্যবস্থা’ গ্রহণ করা হবে। অর্থাৎ, নিচের তলগুলি প্রথমে ধ্বংস করা হবে, উপরের তলগুলি আপনাআপনিই ভেঙে পড়বে।