‘বিশ্বশান্তির পথে বাধা সন্ত্রাসবাদই’ SCO বৈঠকে বার্তা মোদীর, ‘জঙ্গি মদতে’ পাকিস্তানকে একহাত নিলেন দোভাল
PM Modi in SCO Meeting: তাজিকিস্তানের রাজধানী দুশানবে আয়োজিত এই বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী বলেন, "আফগানিস্তানে কী হচ্ছে, তা আমরা সকলেই দেখতে পারছি। একসময় আফগানিস্তানেও শান্তি, সম্মৃদ্ধি ছিল। সেই ঐতিহ্য ফিরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করতে হবে আমাদের।"
নয়া দিল্লি: উগ্রপন্থা ও সন্ত্রাসবাদই বিশ্বশান্তির পথে সবথেকে বড় বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে, এমনটাই মত প্রধানমন্ত্রীর। শুক্রবার সাংহাই কর্পোরেশন অর্গানাইজেশনের বার্ষিক সম্মেলনে (Shanghai Cooperation Organisation summit) ভার্চুয়াল মাধ্যমে যোগ দিয়ে এই বার্তাই দিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী(PM Narendra Modi)। চিন, পাকিস্তান সহ সাংহাই কর্পোরেশনের মোট নয় সদস্য দেশকেই অনুরোধ জানালেন মিলিতভাবে কাজ করার জন্য। একইসঙ্গে আফগানিস্তানে তালিবানের দখল নেওয়ার প্রসঙ্গেও মুখ খুললেন প্রধানমন্ত্রী।
তাজিকিস্তানের রাজধানী দুশানবে আয়োজিত এই বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “আফগানিস্তানে (Afghanistan) কী হচ্ছে, তা আমরা সকলেই দেখতে পারছি। একসময় আফগানিস্তানেও শান্তি, সম্মৃদ্ধি ছিল। সেই ঐতিহ্য ফিরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করতে হবে আমাদের। সাংহাই কর্পোরেশনের সদস্য হিসাবে আমাদের সকলের দায়িত্ব উগ্রপন্থা ও মৌলবাদি শক্তির উত্থান যাতে না হয়, সেই বিষয়টি নিশ্চিত করা।”
প্রধানমন্ত্রী জানান, মধ্য এশিয়ার আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা নিয়ে উদ্বিগ্ন ভারত। সমস্ত দেশের মধ্যে পারিস্পারিক সম্পর্ক যাতে ভাল থাকে এবং যোগাযোগ বৃদ্ধির মাধ্যমে যাতে সম্পর্কে আস্থা বৃদ্ধি পায়, তার চেষ্টা করতে হবে সমস্ত সদস্য দেশকে। যে কোনও আন্তর্জাতিক বিষয়ে নিজেদের মধ্যে বোধাপড়া কীভাবে বৃদ্ধি করা যায়, তা খুঁজে বের করার উপরও জোর দেন প্রধানমন্ত্রী।
পুরনো দিনের প্রসঙ্গ টেনে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “আমরা ইতিহাসের পাতায় চোখ রাখলে দেখতে পাব মধ্য এশিয়া বরাবরই প্রগতিশীল সংস্কৃতি এবং মূল্যবোধের পীঠস্থান হিসাবে পরিচিত হয়েছে। সেই ঐতিহ্যকে মাথায় রেখেই সাংহাই কর্পোরেশনের সদস্যদের উচিত উগ্রপন্থা ও মৌলবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে একজোট হওয়া। ভারত সহ সবকটি সদস্যদেশেই ইসলামের সঙ্গে মধ্যপন্থী, সহনশীল প্রতিষ্ঠান যুক্ত রয়েছে।”
ওই বৈঠকেই পাকিস্তান(Pakistan)-কে কড়া বার্তা দিয়ে জাতীয় নিরাপত্তা পরামর্শদাতা অজিত দোভাল (Ajit Doval) জানান, পাকিস্তান যেভাবে আফগানিস্তানের মাটিকে ব্যবহার করে লস্কর-ই-তৈবা, জইশ-ই-মহম্মদের মতো জঙ্গিগোষ্ঠীগুলিকে প্রশিক্ষণ দিয়ে জম্মু-কাশ্মীরে অশান্তি সৃষ্টির চেষ্টা করছে, তা নিয়ে ভারত যথেষ্ট উদ্বিগ্ন। পাকিস্তান যে সন্ত্রাসবাদকে দেশের নীতির অন্তর্ভুক্ত করে নিয়েছে, তাও কারোর কাছে অজানা নয় বলে জানান দোভাল।
সাংহাই কর্পোরেশনের নবম সদস্য হিসাবে ইরানকে স্বাগত জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “ভারত ইরানের চাবাহার বন্দরের সাহায্যে আফগানিস্তানের সঙ্গে যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নত করার চেষ্টা করছে। তবে যে কোনও প্রকল্পই যে প্রতিটি দেশের সার্বভৌমত্বকে রক্ষা করে গ্রহণ করা হয়।” উল্লেখ্য, পাক অধিকৃত কাশ্মীরের উপর দিয়ে চিন যে অর্থনৈতিক করিডর গঠনের চেষ্টা করছে, বরবারই তার বিরোধিতা করে এসেছে ভারত। চিন-পাকিস্তান ইকোনমিক করিডরের প্রসঙ্গেই ইঙ্গিত দিয়ে এই কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।
ভারতের বিশাল বাজারের সঙ্গে বাণিজ্য শুরু করলে চারিদিক থেকে স্থলভাগে ঘেরা মধ্য এশিয়ার দেশগুলিও লাভের মুখ দেখবে বলে জানান প্রধানমন্ত্রী। একইসঙ্গে তিনি সমস্ত দেশকে সার্বভৌমত্ব্য বজায় রেখেই সংযোগমূলক প্রকল্পে কাজ করার আহ্বান জানান।