জম্মু: প্রধানমন্ত্রীর সফরের ঠিক আগেই বিস্ফোরণে (Blast) কেঁপে উঠেছিল জম্মু (Jammu)। সভাস্থল থেকে মাত্র ১২ কিলোমিটার দূরেই ফাঁকা জমিতে হয়েছিল বিস্ফোরণ। এই ঘটনার পরই আরও কড়া নিরাপত্তার চাদরে মুড়ে ফেলা হয় ভূস্বর্গ। প্রাথমিক তদন্তের পর পুলিশের তরফে জানানো হয়েছিল, বাজ পড়ে বা উল্কাপাত হয়েই বিস্ফোরণ হয়েছিল। তবে সূত্রের দাবি, বাজ পড়ে নয়, ড্রোনের (Drone) মাধ্যমে বিস্ফোরণ ঘটানো হয়েছিল লালিয়ান গ্রামে। আকাশপথে ড্রোনের মাধ্যমে আইইডি (IED) বিস্ফোরক ফেলা হয়েছিল ওই চাষের জমিতে, এমনটাই মনে করছেন গোয়েন্দারা।
একাধিক উন্নয়নমূলক প্রকল্পের ভিত্তি প্রস্থর স্থাপন করতে রবিবারই জম্মুতে উপস্থিত হয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। উল্লেখ্য, ২০১৯ সালে জম্মু-কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা প্রত্যাহারের পর এই প্রথম ভূস্বর্গে পা রাখলেন প্রধানমন্ত্রী। এদিকে তাঁর পৌঁছনোর আগেই সকালে বিস্ফোরণের খবর মেলে জম্মুর বিষ্ণোই এলাকার লালিয়ান গ্রামে। স্থানীয় বাসিন্দারাই পুলিশে খবর দেন। বিস্ফোরণের খবর পাওয়ায় সঙ্গে সঙ্গে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় পুলিশ ও নিরাপত্তা বাহিনী। গোটা এলাকাটি নিরাপত্তার চাদরে মুড়ে ফেলা হয়। চাষের জমি থেকে শুরু করে আশোপাশের সমস্ত এলাকায় চিরুনি তল্লাশি চালানো হয়।
স্থানীয় বাসিন্দাদের জেরা করে জানা গিয়েছে, বিস্ফোরণের ঠিক আগেই তারা ড্রোনের শব্দ শুনতে পেয়েছিলেন। বিস্ফোরণস্থলের সবথেকে কাছে যে বাড়িটি অবস্থিত, তার বাসিন্দারা জানিয়েছেন, বিস্ফোরণের শব্দে বাড়ির সমস্ত কাঁচ ভেঙে পড়েছে। দেওয়ালের একাধিক জায়গায় ফাটলও ধরেছে।
সূত্রের দাবি, নিরাপত্তা বাহিনী গোটা ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। ড্রোনের মাধ্যমে আইইডি বিস্ফোরক ফেলা হয়েছিল কিনা, তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রীর সফরের খবর পাওয়ার পরই জইশ-ই-মহম্মদ ও লস্কর-ই-তৈবার মতো জঙ্গিগোষ্ঠীগুলি নাশকতার ছক কষেছিল। তাদের কাছে ড্রোনও রয়েছে বলে জানা গিয়েছে। বিগত কয়েকদিনে ভূস্বর্গজুড়ে জঙ্গি গতিবিধির খবর পেয়ে একাধিক জায়গায় এনকাউন্টার অভিযান চালানো হয়েছে। নিকেশ করা হয়েছে কমপক্ষে ৪ জঙ্গিকে। গতকালের বিস্ফোরণের পর মনে করা হচ্ছে যে, ওই দুই জঙ্গি গোষ্ঠীর মধ্যেই কোনও একটি বিস্ফোরণের ছক কষেছিল।
সাম্বায় যেখানে প্রধানমন্ত্রীর সভাস্থল ছিল, তার দূরত্ব ভারত-পাকিস্তান আন্তর্জাতিক সীমান্ত থেকে ১০ কিলোমিটারেরও কম। সীমান্ত পার করে ড্রোন পাঠানো হয়েছিল কিনা, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এনএসজি ও বিএসএফের তরফে অ্যান্টি ড্রোন পাঠানো হয়েছে। গতকালের বিস্ফোরণের পর প্রধানমন্ত্রী নিরাপত্তার জন্য মোতায়েন স্পেশাল প্রোটেকশন গ্রুপও লালিয়ানের ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়। স্থানীয় পুলিশ ইতিমধ্যেই মাটির নমুনা সংগ্রহ করেছে ফরেন্সিক পরীক্ষার জন্য।