Bihar Spurious Liquor: একের পর এক মৃত্যুতেও হুঁশ নেই বাসিন্দাদের, বিষ মদ খেয়ে মৃত আরও ৮
8 more dead after consuming Spurious Liquor: নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক গ্রামের এক বাসিন্দা জানান, বুধবার রাতে অনেকেই মদ্যপান করেছিলেন। এর কিছুক্ষণ পর থেকেই তারা অসুস্থ বোধ করেন। পরে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে বৃহস্পতিবার সকালে আটজনের মৃত্যু হয়।
পটনা: বিষমদ কাণ্ডে (spurious liquor) বাড়ছে মৃতের সংখ্যা। চলতি সপ্তাহের বৃহস্পতিবার সকালেই বিহার(Bihar)-র পশ্চিম চম্পারণে বিষমদ খেয়ে আরও আটজনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। অসুস্থ হয়ে পড়েছেন আরও কয়েকজন। বিহারে ২০১৬ সাল থেকে মদের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি থাকলেও বিগত এক সপ্তাহেই বিষমদ খেয়ে কমপক্ষে ৫০ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানা গিয়েছে।
চলতি সপ্তাহের শুরু থেকেই রাজ্যের একাধিক জায়গায় মদ্যপান করার পর অসুস্থ হয়ে পড়া ও মৃত্যুর খবর মিলছে। ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করে মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার (Nitish Kumar) হুঙ্কার দিয়ে জানিয়েছেন, যারা এই বিষমদ কাণ্ডের জন্য দায়ী, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। একইসঙ্গে বিহার জুড়ে ফের মদ্যপান বিরোধী প্রচার অভিযান শুরু করার কথাও বলেন তিনি।
গতকালই জানা যায়, তেলহুয়া গ্রামের আটজন বাসিন্দাও গত বৃহস্পতিবার আচমকা অসুস্থ হয়ে পড়েন এবং পরে তাদের মৃত্যু হয়। স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, তারা সকলেই মদ্যপান করেছিলেন। সেখান থেকেই বিষক্রিয়া হয়ে মৃত্যু হয়েছে। এখনও অসুস্থ অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন গ্রামের বেশ কয়েকজন বাসিন্দা। তারা সকলেই বুধবার বিকেল ও রাতে চামারতোলি এলাকা থেকে মদ কিনে খেয়েছিলেন বলে জানা গিয়েছে। যদিও পুলিশের তরফে এই বিষয়ে নিশ্চিতভাবে কিছু জানানো হয়নি।
পুলিশ সুপার উপেন্দ্র নাথ ভর্মা এই বিষয়ে বলেন, “অস্বাভাবিক মৃত্যুর খবর এসেছে। মৃত আটজনকেই চিহ্নিত করা গিয়েছে। বিষমদ খেয়েই তাদের মৃত্যু হয়েছে কিনা, তা এখনও নিশ্চিতভাবে বলা যাচ্ছে না। প্রাথমিক তদন্ত শেষ হওয়ার পরই এই বিষয়ে কিছু বলা যাবে।”
এ দিকে, নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক গ্রামের এক বাসিন্দা জানান, বুধবার রাতে অনেকেই মদ্যপান করেছিলেন। এর কিছুক্ষণ পর থেকেই তারা অসুস্থ বোধ করেন। পরে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে বৃহস্পতিবার সকালে আটজনের মৃত্যু হয়। একাধিক স্থানীয় হাসপাতালে এখনও বেশ কয়েকজন চিকিৎসাধীন রয়েছেন বলে জানা গিয়েছে।
বিগত তিন দিনে বিহারে বিষমদ খেয়ে প্রায় ৪০ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। মুজফ্ফরপুর, গোপালগঞ্জ, বেতিয়া জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে এই ধরনের অস্বাভাবিক মৃত্যুর খবর সামনে এসেছে। বিষমদ কাণ্ড সামনে আসার পরই মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার বলেন, “আপনি যদি খারাপ জিনিস পান করেন, তাহলে আপনি মারা যাবেনই।”
এই মন্তব্য ঘিরেই উঠেছে সমালোচনার ঝড়। আরজেডি প্রধান তথা বিহার বিধানসভা বিরোধী দলনেতা তেজস্বী যাদব অভিযোগ জানান, মুখ্যমন্ত্রী ঘটনায় দায় নেওয়া কিংবা মদ মাফিয়াদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার বদলে বিহারবাসীকেই ভয় দেখাচ্ছেন।
২০১৬ সালেই বিহারে মদ্যপানের উপর যে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছিল। নীতীশ কুমারের আমলে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত বলে গণ্য করা হয় এটিকে। মদের উপর নিষেধাজ্ঞা জারির প্রসঙ্গে তিনি যুক্তি দিয়েছিলেন যে, মদের জন্য ব্যয় করা অর্থ পরিবারের কল্যাণে ব্যয় করা যেতে পারে।
নীতিটি প্রাথমিকভাবে তাঁকে ভোটবাক্সে প্রচুর সুবিধা দিয়েছিল। বিশেষ করে বিহারে জাত-পাতের সীমানা পেরিয়ে তাঁর এই নীতি বিহারের মহিলাদের কাছে প্রচুর সমর্থন আদায় করতে সক্ষম হয়েছিলেন। কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে, বিহারে এই মদ নিষিদ্ধ করার প্রক্রিয়ার বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে অনেক ফাঁক থেকে গিয়েছিল। আর সেই কারণে মদ মাফিয়াদের উত্থান হয়েছে।