MK Stalin Letter : ‘সমতা’ প্রতিষ্ঠার ডাক তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রীর, সাহায্য চেয়ে চিঠি ৩৭ বিরোধী নেতাদের
MK Stalin : বুধবার ৩৭ জন বিরোধী নেতা চিঠি লিখলেন তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী এম কে স্ট্যালিন। সমাজে সমতা প্রতিষ্ঠা করতে তাঁদের সাহায্য চেয়েই এই চিঠি।
চেন্নাই : ‘বিবিধের মাঝে দেখো মিলনও মহান…’ এই মর্মে ভর করেই ভারতে বিভিন্ন ধর্মাবলম্বী ও ভাষাভাষির মানুষ বসবাস করেন। ধর্মনিরপেক্ষতাকে ভারতীয় সংবিধানে একটি গুরুত্বপূর্ণ মর্যাদা দেওয়া হয়েছে। তবে এই ভারতেই বিভিন্ন ধর্মাবলম্বীদের মধ্যে হিংসা, বিদ্বেষ দেখা যায়। এর আগেও এই কারণকে কেন্দ্র করে আগুন জ্বলতে দেখেছে ভারতবাসী। এইবার এই একই বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে চিঠি লিখলেন তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী এম কে স্ট্যালিন। বুধবার তিনি “ধর্মান্ধতা এবং ধর্মীয় আধিপত্য”কে ভারতের বৈচিত্র্যময় এবং বহুসাংস্কৃতিক ফেডারেশনের জন্য একটি হমকি হিসেবে উল্লেখ করেছেন এই চিঠিতে। এর বিরুদ্ধে যৌথভাবে লড়াই করার জন্য এই চিঠির মাধ্যমে ৩৭ জন বিরোধী নেতার সমর্থন চেয়েছেন স্ট্যালিন।
কংগ্রেসের অন্তর্বর্তীকালীন প্রধান সনিয়া গান্ধী, রাষ্ট্রবাদী কংগ্রেস পার্টি (NPP) নেতা শরদ পাওয়ার, মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকরে এবং পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রয়েছেন সেই চিঠি প্রাপকদের তালিকায়। স্ট্যালিন এই ৩৭ জন নেতা নেত্রীকে লেখা চিঠিতে উল্লেখ করেছেন, “সমতা, আত্মমর্যাদা এবং সামাজিক ন্যায়বিচারে বিশ্বাসী সকলে ঐক্যবদ্ধ হলেই এই শক্তিগুলির বিরুদ্ধে লড়াই করা যেতে পারে। এটা রাজনৈতিক প্রাপ্তির প্রশ্ন নয় কিন্তু আমাদের প্রজাতন্ত্রের বহুত্ববাদী পরিচয়কে পুনঃপ্রতিষ্ঠিত করা, যেমনটি আমাদের সংবিধান প্রণেতারা কল্পনা করেছিলন।”
তিনি চিঠিতে স্ট্যালিন লিখেছেন যে, “দমনকারী শক্তি” সামাজিক ন্যায়বিচারের ফ্রন্টের অগ্রগতিকে চ্যালেঞ্জ করছে। তিনি আরও বলেন, নিপীড়িতদের স্বার্থ রক্ষায় সকল প্রগতিশীল শক্তির হাত মেলানো অত্যাবশ্যক। স্ট্যালিন বলেছেন, “সামাজিক ন্যায়বিচার একটি আদর্শ হিসাবে সহজ – ‘সবার জন্য সবকিছু'”। তিনি আরও বলেন, প্রত্যেকেই সমান অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক ও সামাজিক অধিকার ও সুযোগ পাওয়ার যোগ্য। স্ট্যালিন জানিয়েছেন যে তামিলনাড়ুর “প্রতিটি বালির দানা” সামাজিক ন্যায়বিচার বিপ্লবের যুক্তিবাদী ই ভি রামসামির কথা বলে। যিনি দ্রাবিড় আন্দোলনের জনক পেরিয়ার হিসাবে সম্মানিত। তিনি আরও বলেছেন, “এই অদম্য দর্শনই তামিল সমাজের ভিত্তি তৈরি করেছে এবং গত আট দশকে রাজনীতিকে রূপ দিয়েছে। সামাজিক ন্যায়বিচারের উপর আমাদের জোর দেওয়ার কারণেই আমরা বৃহত্তর পরিমাণে বৈষম্য দূর করতে এবং সমস্ত ক্ষেত্রে রাষ্ট্রের উন্নয়ন করতে সক্ষম হয়েছি।” তিনি লিখেছেন, শুধুমত্র সংরক্ষণের ব্যবস্থা এই পরিস্থিতি ঠিক করতে পারবে না। তিনি জাতপাত এবং লিঙ্গের ভিত্তিতে বৈষম্য দূর করতে “অতিরিক্ত পদক্ষেপ” নেওয়ার ডাক দিয়েছেন এই চিঠিতে।
স্ট্যালিন ১৯৯০ এর দশকে অন্যান্য অনগ্রসর শ্রেণির জন্য কোটার জন্য মণ্ডল কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়নের জন্য একইরকম ঐক্য এবং প্রত্যয় চেয়েছিলেন। গতকাল স্ট্যালিন ব্যবসা করার সহজতার জন্য কেন্দ্রীয় বাজেট এবং “এক জাতি, এক রেজিস্ট্রেশন” এর সমালোচনা করার পরেই আজ এই চিঠি লেখেন। তিনি ভারতীয় জনতা পার্টির নেতৃত্বাধীন কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে রাজ্যগুলির অধিকার কেড়ে নেওয়ার এবং রাজ্য়ের বিষয়ে হস্তক্ষেপ করার অভিযোগ করেছেন। স্ট্যালিনের দ্রাবিড় মুনেত্রা কাজগাম (DMK) সরকার গত বছর ক্ষমতায় আসার পর থেকে ক্ষমতার কেন্দ্রীকরণ এবং রাজ্যগুলির স্বায়ত্তশাসনের বিরোধিতা করে আসছে।
২৬ শে জানুয়ারি, তিনি সামাজিক ন্যায়বিচার প্রচারের জন্য অল-ইন্ডিয়া ফেডারেশন ফর সোশ্যাল জাস্টিস নামে একটি প্ল্যাটফর্ম চালু করেন। রাজ্য জুড়ে অভিন্নভাবে গৃহীত হওয়ার জন্য একটি সাধারণ ন্যূনতম কর্মসূচি নিয়ে আসেন। তিনি মুখ্যমন্ত্রী ও রাজনৈতিক নেতাদের ফেডারেশনে প্রতিনিধি মনোনীত করতে বলেছেন।