Fraud Case: জ্যান্ত জ্বালিয়েছিলেন নিজের মতো দেখতে একজনকে, বাড়িতে পাঠান নিজের মৃত্যু সংবাদ, পুলিশি তদন্তে বেরলো আসল কারণ
Fake Death: শেয়ার বাজারে তিনি ৮৫ লক্ষ টাকা হারান। এরপরই তারা জীবনবিমা থেকে টাকা উদ্ধারের পরিকল্পনা করেন। সেই পরিকল্পনা অনুযায়ী, বিগত এক বছর ধরে মোট ২৫টি জীবনবিমা করান ওই ব্যক্তি। সবকটি বিমা মিলিয়ে মোট অঙ্ক ছিল ৭.৪ কোটি টাকা।
হায়দরাবাদ: পেশায় সরকারি কর্মী। হঠাৎ একদিন উদ্ধার হল তাঁর পোড়া দেহ। পুলিশের কাছ থেকে খবর পেতেই কান্নায় ভেঙে পড়ল পরিবার। তবে কীভাবে ওই সরকারি কর্মীর মৃত্যু হল, তা জানতে একদমই আগ্রহী নয় পরিবার। তাদের দাবি, চলন্ত গাড়িতে হঠাৎ আগুন লেগে গিয়েছিল। সিটবেল্ট আটকে যাওয়ায় গাড়ি থেকে বের হতে পারেননি ওই ব্যক্তি, সেই কারণেই আগুনে পুড়ে মৃত্যু হয় তাঁর। এত দ্রুত গোটা ঘটনার এই অনুমান দেখেই সন্দেহ জেগেছিল মৃতের পরিবারের প্রতি। তবে তদন্তে নেমে পুলিশ যা জানতে পারল, তাতে চক্ষু চড়কগাছ সকলের। তদন্তে জানা গেল, আদৌই ওই ব্যক্তির মৃত্যুই হয়নি। বরং জীবনবিমার প্রায় সাত কোটি টাকা হাতিয়ে নিতেই ভুয়ো মৃত্যুর খবর রটিয়েছিলেন ওই ব্যক্তি নিজে। গোটা ঘটনাটি বিশ্বাসযোগ্য বানাতে পরিবারের সাহায্য নিয়ে এক ব্যক্তিকে খুন করেন। তাঁর দেহই উদ্ধার করে পুলিশ। ঘটনাটি ঘটেছে তেলঙ্গানার মেদাক জেলায়।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, অভিযুক্ত ব্যক্তি তেলঙ্গানা সরকারের এক আধিকারিক। ওই ব্য়ক্তি বিশাল অঙ্কের জীবনবিমা করিয়েছিলেন নিজের জন্য, তিনি মারা গেলে তাঁর পরিবার পেত ৭ কোটি টাকা। মৃত্য়ুর আগেই সেই টাকা হাতাতে ওই ব্যক্তি তাঁর পরিবারের সঙ্গে ভুয়ো মৃত্যুর ছক কষেন। পরিকল্পনা অনুযায়ী, অভিযুক্ত ব্যক্তির মতো দেখতেই এক ব্যক্তিকে তারা হায়দরাবাদের নিজামাবাদ স্টেশনের কাছে ফাঁকা একটি জায়গায় নিয়ে যান। সেখানে ওই ব্যক্তিকে জীবন্ত জ্বালিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেন। ওই ব্যক্তি নিজের প্রাণ বাঁচানোর চেষ্টা করলেও, অভিযুক্তরা কুঠার দিয়ে তাঁর গলায় ও ঘাড়ে আঘাত করেন। এরপরে গাড়ির চালকের আসনে বসিয়ে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়।
জানা গিয়েছে, ওই ব্যক্তি তেলঙ্গানা রাজ্য সরকারের অ্যাসিস্টেন্ট সেকশন অফিসার। শেয়ার বাজারে তিনি ৮৫ লক্ষ টাকা হারান। এরপরই তারা জীবনবিমা থেকে টাকা উদ্ধারের পরিকল্পনা করেন। সেই পরিকল্পনা অনুযায়ী, বিগত এক বছর ধরে মোট ২৫টি জীবনবিমা করান ওই ব্যক্তি। সবকটি বিমা মিলিয়ে মোট অঙ্ক ছিল ৭.৪ কোটি টাকা।
চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে পুলিশ মেদক জেলা থেকে একটি গাড়ির ভিতর থেকে পোড়া দেহ উদ্ধার করে। এরপরই তদন্ত শুরু করা হয়। গাড়ি থেকে একটি ব্যাগ উদ্ধার করা হয়, তার থেকে একটি আইডি কার্ড উদ্ধার করা হয়, তাতে ৪৪ বছর বয়সী ওই ব্যক্তির নাম জানা যায়। পরিবারের তরফেও মেনে নেওয়া হয় যে আগুনে পুড়ে ওই ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। কিন্তু ময়নাতদন্তের রিপোর্টে জানা যায়, মৃত ব্যক্তির শরীরে একাধিক আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। এরপরই আরও গভীরে তদন্ত শুরু করে পুলিশ। হঠাৎ একদিন দেখা যায়, মৃত ব্যক্তি ঘুরে বেড়াচ্ছেন বাজারে। এরপরই অভিযুক্ত ব্যক্তি, তাঁর স্ত্রী ও পরিবারের দুই সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়। জেরায় খুনের কথা স্বীকার করে নেন অভিযুক্তরা।