জ্যান্ত পুঁতে দেওয়া ও বস্তাবন্দি করে রেললাইনে ফেলে আসা- দুই ধর্ষণের ঘটনায় ফের লজ্জার মুখে মধ্য প্রদেশ

একদিকে বেতুলে ১৪ বছরের এক কিশোরীকে ধর্ষণ করে জ্যান্ত পুঁতে দেওয়ার চেষ্টা, অন্যদিকে ১৯ বছরের এক তরুণীকে গণধর্ষণ করে বস্তাবন্দি করে রেললাইনে ফেলে দেওয়া- প্রতিটি ঘটনাতেই নৃশংসতার নতুন নজির গড়েছে মধ্য প্রদেশ।

জ্যান্ত পুঁতে দেওয়া ও বস্তাবন্দি করে রেললাইনে ফেলে আসা- দুই ধর্ষণের ঘটনায় ফের লজ্জার মুখে মধ্য প্রদেশ
প্রতীকী চিত্র।
Follow Us:
| Updated on: Jan 21, 2021 | 11:24 AM

ইন্দোর: রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী নারীদের প্রতি হওয়া অত্যাচার সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি করতে “সম্মান” অনুষ্ঠানের আয়োজন করলেও মধ্য প্রদেশ (Madhya Pradesh)-র বাস্তব চিত্র অন্য কথা বলছে। একইদিনে ফের দুটি ধর্ষণের ঘটনা সামনে আসায় প্রশ্নের মুখে শিবরাজ সিং চৌহান (Shivraj Singh Chouhan)-র সরকার। একদিকে বেতুলে ১৪ বছরের এক কিশোরীকে ধর্ষণ করে জ্যান্ত পুঁতে দেওয়ার চেষ্টা, অন্যদিকে ১৯ বছরের এক তরুণীকে গণধর্ষণ করে বস্তাবন্দি করে রেললাইনে ফেলে দেওয়া- প্রতিটি ঘটনাতেই নৃশংসতার নতুন নজির গড়েছে মধ্য প্রদেশ।

প্রথম ঘটনাটি ঘটে বেতুল জেলার একটি গ্রামে। জানা গিয়েছে, ১৪ বছরের ওই কিশোরী পাম্প বন্ধ করতে খামারে গিয়েছিল। আশেপাশে কেউ না থাকায় সেই সুযোগেই কিশোরীকে ধর্ষণ করে ৩৫ বছরের এক ব্যক্তি। অপরাধ লুকোতে করতে জীবন্ত অবস্থাতেই নির্যাতিতা কিশোরীকে পাশের একটি নালায় ফেলে দিয়ে উপর দিয়ে পাথর চাপা দিয়ে দেয় অভিযুক্ত। দীর্ঘক্ষণ কেটে গেলেও মেয়ে ঘরে না ফেরায় পরিবারের লোকজন তাঁকে খুঁজতে বের হয়, সেইসময়ই নালা থেকে কিশোরীর ক্ষীণ আর্তনাদ শুনতে পান তাঁরা।

কোনওমতে কিশোরীকে উদ্ধার করে নাগপুর মেডিক্যাল কলেজে নিয়ে যাওয়া হয় চিকিৎসার জন্য। প্রাথমিক চিকিৎসার পর চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, নির্যাতিতার গোপনাঙ্গে একাধিক আঘাতের প্রমাণ মিলেছে। এছাড়াও তাঁর চোয়ালেও আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।

থানায় অভিযোগের কিছুক্ষণের মধ্যেই অভিযুক্ত গ্রেফতার হয়। তদন্তকারী পুলিস অফিসার মহেন্দ্র সিং বলেন, “ঘটনায় অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ভারতীয় দণ্ডবিধি অনুযায়ী ধর্ষণ ও তফশিলি জাতি/উপজাতির প্রতি অপরাধ (দমন) ধারায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।”

আরও পড়ুন: ১৮ মাসের জন্য কৃষি আইন স্থগিতের প্রস্তাব কেন্দ্রের! ‘সমঝোতা’য় ভরসা নেই অন্নদাতাদের

দ্বিতীয় ধর্ষণের ঘটনাটি ঘটেছে ইন্দোর (Indore) শহরে। পুলিসি অভিযোগ অনুযায়ী, ১৯ বছরের এক তরুণীকে তাঁর প্রাক্তন প্রেমিক ও বন্ধুরা মিলে নন্দীগ্রামের একটি ফ্ল্যাটে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করে। মেয়েটি পুলিসে সমস্ত ঘটনা জানানোর কথা বললে তাঁকে একাধিকবার ছুরি দিয়ে আঘাত করা হয় এবং বস্তায় ভরে ভাগীরথপুরার একটি রেললাইনে ফেলে দিয়ে আসে অভিযুক্তরা।

ট্রেন আসার আগেই ওই তরুণী কোনওমতে বস্তা থেকে বেরিয়ে আসে। স্থানীয় বাসিন্দারা তাঁকে দেখতে পেয়ে এমআই হাসপাতালে নিয়ে যান চিকিৎসার জন্য। ঘটনার তদন্তকারী অফিসার শশীকান্ত কোঙ্কনে বলেন, “রাতের দিকে কন্ট্রোলরুমে একটি কবর আসে যে, একজন আহত তরুণীকে এমআই হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে চিকিৎসার জন্য। তাঁর শরীরে দুই জায়গায় ছুরির আঘাত রয়েছে।”

তরুণীকে জিজ্ঞাসাবাদ করে জানা যায়, সে পাটনিপুরায় কোটিং সেন্টার থেকে বাড়ি ফিরছিল। এমন সময় বাইকে করে অভিযুক্ত যুবক ও তাঁর বন্ধুরা রাস্তা আটকে দাঁড়ায়। জোর করে তাঁকে তুলে নিয়ে গিয়ে নন্দীগ্রামের একটি ফ্ল্যাটে নিয়ে যায় তাঁরা এবং সেখানেই ধর্ষণ করে। ইতিমধ্যেই প্রধান অভিযুক্তকে গ্রেফতার করেছে পুলিস এবং তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করে বাকিদের খোঁজ চালানো হচ্ছে।

এর আগে গত সপ্তাহেই ১৩ বছরের এক কিশোরীকে পাঁচদিনে নয়জন ব্যক্তির গণধর্ষের ঘটনা সামনে আসে। ৯ জানুয়ারি এক মধ্যবয়সী মহিলাকে পাঁচজন যুবক গণধর্ষণ করে এবং যৌনাঙ্গে রড ঢুকিয়ে দেয়। এরপর ১১ জানুয়ারি ১৩ বছরের আরেক কিশোরীকে অপহরণ করে প্রথমে ধর্ষণ এবং পরে খুন করে তারই প্রতিবেশী। একের পর ধর্ষণের ঘটনায় পুলিস-প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। তবে সরকারের তরফে এই বিষয়ে মুখে তালা ঝোলানো হয়েছে।

আরও পড়ুন: ‘আমজনতার সমস্যা মেটাতে হবে’, বাইডেনের সঙ্গে কাজ করার বার্তা নমোর