Indian Military: সন্ত্রাসবিরোধিতা থেকে আত্মনির্ভরতা, ২৫-এ ভারতের প্রতিরক্ষায় নয়া দিগন্ত
২০২৫ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে সেনাবাহিনী প্রথম ১০০ শতাংশ দেশীয় AK-203 রাইফেল পাবে, যা আমেঠিতে তৈরি। আগামী বছরের জানুয়ারিতে একইসঙ্গে একটি ডেস্ট্রয়ার, একটি ফ্রিগেট ও একটি সাবমেরিন যুক্ত করা হয়েছে। সেপ্টেম্বরে ভারত রেল-ভিত্তিক লঞ্চার থেকে অগ্নি প্রাইম ক্ষেপণাস্ত্রের সফল পরীক্ষা চালায়।

নয়া দিল্লি: ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা নীতিতে এক নতুন সংজ্ঞা তৈর হয়েছে ২০২৫-এ। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী কার্যত স্পষ্ট করে দিয়েছেন যে তার দেশের নাগরিকদের উপর আক্রমণ হলে কেবল সংযম দেখিয়ে থেমে থাকা হবে না, দ্রুত সিদ্ধান্ত নিয়ে দেওয়া হবে জবাবও। মূলত যে নীতিগুলিতে জোর দেওয়া হয়েছে, সেগুলি হল- সন্ত্রাসী হামলার কঠোর জবাব দেওয়া হবে, পারমাণবিক ব্ল্যাকমেইলের প্রতি জিরো টলারেন্স নীতি নেওয়া হবে, সন্ত্রাসী ও তাদের পৃষ্ঠপোষকদের মধ্যে কোনও পার্থক্য করা হবে না, যে কোনও আলোচনায় সন্ত্রাসবাদই গুরুত্ব পাবে, সার্বভৌমত্বের প্রশ্নে কোনও আপোস করা যাবে না।
অপারেশন সিঁদুর: সন্ত্রাসবিরোধিতায় এক নতুন দৃষ্টান্ত
৭ মে ২০২৫। অপারেশন সিঁদুর অভিযান চালায় ভারত। সাম্প্রতিক ইতিহাসে ভারতের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সামরিক অভিযান এটি। পহেলগাঁওতে হামলার জবাবে এই অভিযান চালানো হয়। গত পাঁচ দশকেরও বেশি সময়ের মধ্যে এটি পাকিস্তানের চালানো সবচেয়ে বড় সামরিক অভিযান। ১৯৭১ সালের পর এই প্রথম ভারত পাকিস্তানের পঞ্জাব প্রদেশের ভিতরে গিয়ে আঘাত হানে এবং প্রায় ১০০ জন সন্ত্রাসীকে নিকেশ করে। এই অভিযানে দেশীয় প্রযুক্তির উপর নির্ভর করেছিল ভারত। ব্রহ্মোস সুপারসনিক ক্রুজ মিসাইল বিশেষভাবে নজর কাড়ে। এছাড়াও ময়দানে ছিল রাফাল যুদ্ধবিমান।
ভারতের নতুন প্রতিরক্ষা নীতি: আত্মনির্ভরতা
প্রধানমন্ত্রী মোদীর নেতৃত্বে ভারতের প্রতিরক্ষা ২০২৫ সালে নতুন উচ্চতায় পৌঁছয়। ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’ উদ্যোগে প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে উৎপাদন ২০১৪ সালে ছিল ৪০,০০০ কোটি টাকার, তা আজ বেড়ে হয়েছে ১.৫৪ লক্ষ কোটি টাকারও বেশি।
২০১৩–১৪ সালে যেখানে প্রতিরক্ষা বাজেট ২.৫৩ লক্ষ কোটি টাকা ছিল, সেচা বেড়ে ২০২৫–২৬ সালে হয়েছে ৬.৮১ লক্ষ কোটি টাকা। বর্তমানে ভারত আমেরিকা, ফ্রান্স ও আর্মেনিয়াসহ ১০০টিরও বেশি দেশে প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম রফতানি করছে।
রেকর্ড প্রতিরক্ষা ক্রয়: তিন বাহিনীর শক্তি বৃদ্ধি
২০২৫ সালে প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে আধুনিকীকরণে এক অভূতপূর্ব গতি দেখা গিয়েছে। বছরে মোট ৪.৩০ লক্ষ কোটি টাকারও বেশি পণ্য ক্রয় করার প্রস্তাব অনুমোদিত হয়েছে। ৫৪,০০০ কোটি টাকার ক্রয়ের প্রস্তাব অনুমোদন করা হয় গত মার্চে। তার মধ্যে ছিল টি-৯০ ট্যাংকের জন্য ১,৩৫০ এইচপি ইঞ্জিন, দেশীয় টর্পেডো এবং উন্নত এয়ারবর্ন আর্লি ওয়ার্নিং সিস্টেম। এছাড়া HAL থেকে ১৫৬টি লাইট কমব্যাট হেলিকপ্টার কেনার ৬২,০০০ কোটি টাকার ঐতিহাসিক চুক্তি অনুমোদিত হয়েছে।
এপ্রিলে নৌবাহিনীর জন্য ফ্রান্সের সঙ্গে ৬৩,০০০ কোটি টাকার রাফাল-এম যুদ্ধবিমান চুক্তি স্বাক্ষর করা হয়েছে। জুলাই, অগস্ট ও অক্টোবরে পর্যায়ক্রমে আরও ১.০৫ লক্ষ কোটি, ৬৭,০০০ কোটি ও ৭৯,০০০ কোটি টাকার প্রতিরক্ষা পণ্য ক্রয় অনুমোদিত হয়েছে।
২০২৫ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে সেনাবাহিনী প্রথম ১০০ শতাংশ দেশীয় AK-203 রাইফেল পাবে, যা আমেঠিতে তৈরি। আগামী বছরের জানুয়ারিতে একইসঙ্গে একটি ডেস্ট্রয়ার, একটি ফ্রিগেট ও একটি সাবমেরিন যুক্ত করা হয়েছে। সেপ্টেম্বরে ভারত রেল-ভিত্তিক লঞ্চার থেকে অগ্নি প্রাইম ক্ষেপণাস্ত্রের সফল পরীক্ষা চালায়।
