মেয়েকে ‘খুন’ করে কাটা মুণ্ড নিয়ে রাস্তায় হাঁটছে বাবা, যোগী রাজ্যে জোর আতঙ্ক
রাস্তায় এহেন ব্যক্তিকে দেখে সঙ্গে সঙ্গে পুলিশকে (Uttar Pradesh Police) খবর দেন স্থানীয়রা। তারপর ছুটে আসেন ২ পুলিশ আধিকারিক।
লখনউ: ফের সংবাদ শিরোনামে যোগী রাজ্য (Uttar Pradesh)। গত কয়েক দিন ধরে ক্রমাগত ধর্ষণ ও মহিলাদের শারীরিক হেনস্থার খবর এসেছে উত্তর প্রদেশ থেকে। এ বার হাতে কাটা মুণ্ড নিয়ে থানার উদ্দেশে রওনা দিলেন এক ব্যক্তি। যা দেখে চোখ কপালে উঠেছে এলাকাবাসীর। বুধবার দুপুরে হারদৌই (Hardoi) জেলার পন্দেতারা (Pandetara) অঞ্চলের এক ব্যক্তিকে দেখা যায় অত্যন্ত স্বাভাবিক ভাবেই হাতে কাটা মুণ্ড নিয়ে হেঁটে যাচ্ছেন।
রাস্তায় এহেন ব্যক্তিকে দেখে সঙ্গে সঙ্গে পুলিশকে খবর দেন স্থানীয়রা। তারপর ছুটে আসেন ২ পুলিশ আধিকারিক। মোবাইল বের করে ভিডিয়ো করতে করতে ওই ব্যক্তিকে নাম জিজ্ঞাসা করেন। ওই ব্যক্তি জানান, তাঁর নাম সরবেশ কুমার। এরপর কাটা মুণ্ডের বিষয়ে জিজ্ঞাসা করলে, ওই ব্যক্তি কোনও দ্বিধা না করেই সাফ জানিয়ে দেন, এটি তাঁর মেয়ের মুণ্ড।
সরবেশের সাফ কথা, মেয়ের এক পুরুষের সঙ্গে সম্পর্ক ছিল। তা অপছন্দ তাঁর। তাই তিনি মেয়ের কেটে থানার উদ্দেশে যাচ্ছেন। জঘন্য অপরধারে পরও মুখে-চোখে কোনও অপরাধ বোধের প্রতিফলন ছাড়াই সরবেশ জানান, মেয়ের মৃতদেহ পড়ে আছে বাড়িতেই। এরপর পুলিশ আধিকারিকরা ওই ব্যক্তিকে কাটা মুণ্ডটি পাশে রেখে রাস্তার ধারে বসতে বলেন। সরবেশও রাস্তার ধারে গিয়ে বসেন।
এরপর ওই ব্যক্তিকে থানায় নিয়ে এসে গ্রেফতার করে পুলিশ। সবার সামনে কাটা মুণ্ড নিয়ে রাস্তায় হেঁটে যাওয়ার জন্য এক পুলিশ আধিকারিককেও সাসপেন্ড করেছে হারদৌই থানা। পুলিশ আধিকারকি কপিল দেও সিং বলেন, “সরবেশ নামে এক ব্যক্তিকে তাঁর মেয়ের কাটা মুণ্ড হাতে রাস্তায় দেখা গিয়েছে। আমরা ঘটনার কথা জানতে পেয়েই ওই ব্যক্তিকে আটকাই ও পুলিশি হেফাজতে নিয়েছিলাম। এক পুলিশ আধিকারিককেও কাটা মুণ্ড নিয়ে রাস্তায় দেখা গিয়েছে। তাঁকে সাসপেন্ড করা হয়েছে।”
গত কয়েক মাসে ধর্ষণ, খুন মিলিয়ে একাধিক ঘটনা ঘটেছে যোগী রাজ্যে। গত সেপ্টেম্বরেই হাথরসে চার উচ্চবর্ণের যুবকের গণধর্ষণের শিকার হন সেখানকারই এক দলিত মহিলা। ঘটনার ১৫ দিন পর দিল্লির সফদরজং হাসপাতালে মৃত্যু হয় তাঁর। তা নিয়ে তোলপাড় হয়েছিল গোটা দেশ। চলতি সপ্তাহেই মেয়ের যৌন হেনস্থার প্রতিবাদ করায় গুলি করে বাবাকে খুনের অভিযোগ ওঠে উত্তর প্রদেশে।
২০১৯ সালের ন্যাশনাল ক্রাইম ব্যুরোর তথ্য অনুযায়ী, মেয়েদের বিরুদ্ধে সবচেয়ে বেশি অপরাধ হয়েছে উত্তর প্রদেশে। ২০১৯ সালে পকসো আইনে সে রাজ্যে মামলা রুজু হয়েছে ৭,৫৭০ জনের বিরুদ্ধে। শ্লীলতাহানির মামলা হয়েছে ৪,৬২৫টি, ধর্ষণ হয়েছে ৩,১৩১টি।
আরও পড়ুন: ধর্ষণ, খুন, অপহরণ… অপরাধে কোথায় দাঁড়িয়ে বাংলা? বাকিরা কোথায়?