Waqf Amendment Bill: সমর্থন দিল নীতীশ-চন্দ্রবাবু, তবু নবীন-নির্ভরতা কাটাতে পারলেন না মোদী
Waqf Amendment Bill: বৃহস্পতিবার (৯ অগস্ট), লোকসভায় ওয়াকফ সংশোধনী বিল ২০২৪ পেশ করেছেন সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী কিরণ রিজিজু। জনতা দল (ইউনাইটেড) এবং তেলেগু দেশম পার্টি সমর্থন করায় বিলটি সহজেই পাশ হবে লোকসভায়। কিন্তু, রাজ্যসভায় এই বিল পাস হওয়া নির্ভর করছে বিজেডির উপর।
নয়া দিল্লি: তৃতীয় মোদী সরকারের বড় জয় বলা যেতে পারে। বৃহস্পতিবার (৯ অগস্ট), লোকসভায় ওয়াকফ সংশোধনী বিল ২০২৪ পেশ করেছেন সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী কিরণ রিজিজু। আর এই বিলের বিষয়ে মোদী সরকার সমর্থন পেল দুই প্রধান এনডিএ শরিক, জনতা দল (ইউনাইটেড) এবং তেলেগু দেশম পার্টি। এই দুই দল সমর্থন জানানোয় লোকসভায় বিলটি সহজেই পাশ হয়ে যাবে। তবে, রাজ্যসভায় বিলটিকে পাশ করাতে সমস্যায় পড়তে হবে মোদী সরকারকে। কারণ এই মুহূর্তে, রাজ্যসভায় এনডিএ-র সংখ্যাগরিষ্ঠতা নেই। তবে, বিলটি পাশ হয়ে গেলে, এই বিল কেন্দ্রীয় সরকারকে ওয়াকফ সম্পত্তি নিয়ন্ত্রণের অধিকার দেবে। বিলটিতে ওয়াকফ বোর্ডে মুসলিম মহিলা এবং অমুসলিমদেরও অন্তর্ভুক্ত করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৮ অগস্ট), লোকসভায় বিলের বিরোধিতা করে কংগ্রেস সাংসদ কেসি বেনুগোপাল জানান, এই বিল সংবিধান বিরোধী। ভারতের মানুষ এই বিভাজনমূলক রাজনীতি মেনে নেবেন না। তিনি বলেন, “এটা ধর্মের স্বাধীনতার উপর সরাসরি আক্রমণ। এরপর আপনারা খ্রিস্টানদের বিষয়ে হস্তক্ষেপ করবেন, তারপর জৈনদের বিষয়ে হস্তক্ষেপ করবেন। ভারতের মানুষ এখন এই ধরনের বিভাজনমূলক রাজনীতি মেনে নেবে না। আপনারা বুঝতে পারছেন না, গতবার ভারতের জনগণ স্পষ্টভাবে আপনাকে একটি শিক্ষা দিয়েছে। এটি যুক্তরাষ্ট্রীয় ব্যবস্থার উপর আক্রমণ,” ” তিনি দাবি করেছেন, মহারাষ্ট্র এবং হরিয়ানার আসন্ন নির্বাচনকে মাথায় রেখেই এই বিল নকশা করা হয়েছে।
সমাজবাদী পার্টির অখিলেশ যাদবের মতে, এই বিলের মাধ্যমে হতাশ সমর্থকদের চাঙ্গা করার চেষ্টা করছে বিজেপি। তিনি বলেন, “বিলটি একটি বৃহত্তর রাজনৈতিক খেলার অংশ। স্পিকার স্যার, আমি লবিতে শুনেছি যে আপনারও কিছু কিছু অধিকার কেড়ে নেওয়া হবে। অর্থাৎ, আপনার জন্যও আমাদের লড়াই করতে হবে।” বারামতির সাংসদ এনসিপি (শরদ)-এর সুপ্রিয়া সুলে, বিলটি সম্পূর্ণরূপে ফিরিয়ে নিতে বা লোকসভার স্ট্যান্ডিং কমিটিতে পাঠানোর দাবি জানান।
তবে, সরকারের পক্ষ থেকে বিলটির পক্ষে কথা বলেন জেডি(ইউ) এবং টিডিপির সাংসদ। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তথা জেডি(ইউ)-এর বিশিষ্ট নেতা, রাজীব রঞ্জন সিং বলেন, “স্বচ্ছতা আনার জন্যই এই আইন করা হচ্ছে। বিরোধীরা একে মন্দির কমিটির সঙ্গে তুলনা করছে। তারা মূল ইস্যু থেকে সরে যাচ্ছে। কীভাবে হাজার হাজার শিখকে হত্যা করা হয়েছিল তার ব্যাখ্যা দেওয়া উচিত কেসি বেনুগোপালের। এখন তারা সংখ্যালঘুদের কথা বলছে।” তিনি আরও দাবি করেন,মন্দিরের বোর্ড এবং ওয়াকফ বোর্ডের মধ্যে পার্থক্য রয়েছে। অন্যদিকে টিডিপি বলেছে, সংস্কার করা সরকারের দায়িত্ব। টিডিপি আরও জানিয়েছে, সিলেক্ট কমিটিতে বিলটি পাঠাতে সরকারের কোনও সমস্যা নেই।
শুধু টিডিপি এবং জেডি(ইউ) নয়, এনডিএ-র আরেক প্রধান সহযোগী, শিবসেনাও বিলটিকে সমর্থন করে বলেছে, বিলটিতে মুসলিম মহিলাদের প্রতিনিধিত্ব দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। শিবসেনা আরও অভিযোগ করেছে, ভোট ব্যাঙ্ক বাঁচাতে বিরোধীরা এই বিলের বিরোধিতা করছে। তারা আরও জানিয়েছে, ওয়াকফের প্রায় ৮৫,০০০টি মামলা বিচারাধীন রয়েছে।
লোকসভায় বিলটি পাশ হওয়া নিশ্চিত হলেও, নবীন পট্টনায়কের বিজেডি সমর্থন না করলে রাজ্যসভায় ওয়াকফ বিল পাশ করাতে পারবে না মোদী সরকার। বিজেপির হাতে প্রয়োজনীয় সংখ্যা নেই। অতীতে রাজ্যসভায় বিজেপির সংখ্যার ঘাটতি মেটাত বিজেডি এবং জগনমোহন রেড্ডির ওয়াইএসআরসিপি। ওয়াইএসআরসিপি ইতিমধ্যেই বলে দিয়েছে, তারা ওয়াকফ বিলের বিরোধিতা করবে। এই অবস্থায় বিজেডি-র ৮ সাংসদের সমর্থন দরকার মোদী সরকারের। তবে, লোকসভা ও বিধানসভা নির্বাচনে পরাজয়ের পর, নবীন পট্টনায়ক কিন্তু স্পষ্ট বলে দিয়েছেন, এখন থেকে তাঁরা প্রতিটি বিষয়েই সরাকারের বিরোধিতা করবে।