নারদ মামলায় অন্তর্বর্তী জামিন পেলেন ফিরহাদ, সুব্রত, মদন, শোভন

গত ১৭ মে নাটকীয়ভাবে বিনা নোটিসে গ্রেফতার করা হয় চার নেতাকে। যাঁদের মধ্যে ছিলেন রাজ্যের দুই মন্ত্রীও।

নারদ মামলায় অন্তর্বর্তী জামিন পেলেন ফিরহাদ, সুব্রত, মদন, শোভন
অলংকরণ: অভীক দেবনাথ
Follow Us:
| Updated on: May 28, 2021 | 1:35 PM

কলকাতা: গত কয়েকদিন ধরে চলা নারদ নাটকে অবশেষে স্বস্তি পেল তৃণমূল (Narada Case)। কলকাতা হাইকোর্টে (Calcutta Highcourt) জামিন পেলেন  নারদ মামলায় গ্রেফতার হওয়া চার নেতা। আজ বৃহত্তর বেঞ্চে সেই মামলার শুনানিতে জামিন দিল আদালত। ‘গ্রেফতার না করেও তদন্ত হতে পারে’ বলে মন্তব্য করলেন বিচারপতি। তবে জামিন পেলেও কোনও সাক্ষাৎ দিতে পারবেন না এই চার নেতা। আদালতের তরফ থেকে এই শর্ত দেওয়া হয়েছে। নিম্ন আদালতের অন্তবর্তী জামিনের নির্দেশই বহাল রাখল হাইকোর্ট। ২ লক্ষ টাকার বন্ডে জামিন দেওয়া হয়েছে।

গত ১৭ মে রাজ্যের পরিবহন মন্ত্রী  ফিরহাদ হাকিম, পঞ্চায়েত মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়, বিধায়ক মদন মিত্র ও আর এক নেতা শোভন চট্টোপাধ্যায়কে গ্রেফতার করে সিবিআই। পরে আদালতের নির্দেশে তাঁদের গৃহবন্দি করার কথা বলা হয়। বৃহত্তর বেঞ্চে চলছিল সেই মামলার শুনানি। এই মামলায় সিবিআই-এর পক্ষে সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা দুটি শর্ত রেছিলেন। দুটিই শর্তই মেনে নেওয়া হয়েছে। সলিসিটর জেনারেলের পক্ষ থেকে শর্ত রাখা হয়েছিল, যাতে জামিন দেওয়া হলেও অভিযুক্তরা টিভি বা সংবাদপত্রে কোনও সাক্ষাৎকার দিতে না পারেন। এছাড়া, পরবর্তীকালে জামিন খারিজ হয়ে গেলে ফের চারজনকে গ্রেফতার করা হতে পারে বলেও শর্ত রাখা হয়েছিল।

মামলা ঠাণ্ডা ঘরে যাবে না:

এ দিনও কেন্দ্রের সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা অভিযুক্তদের জামিন না দেওয়ার আর্জি জানান। তিন বলেন, ‘চার নেতা প্রভাবশালী। জামিন দেওয়া হলে সাধারণ মানুষের ভাবাবেগকে ব্যবহার করার সুযোগ পেয়ে যাবেন এরা।’ জামিন হলে ‘মূল মামলা ঠান্ডা ঘরে চলে যাবে’ বলেও বিচারপতিদের বলেন তিনি। তাঁকে আশ্বস্ত করে ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি জে বিন্দল বলেন, ‘বিষয়টি পরেও শুনব। ঠান্ডা ঘরে যাবে না। নিশ্চিন্তে থাকুন।’

‘এরা কোথাও পালিয়ে যাবে না’

‘এই চার জন এখন কোথাও পালিয়ে যাবেন না’, নারদ মামলার শুনানিতে এমনটাই বলেন ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি জে বিন্দল। তিনি বলেন, ‘এরা প্রভাবশালী। কিন্তু গৃহবন্দি অবস্থা উঠে গেলেও এরা পালাতে পারবেন না।’ তুষার মেহতা দাবি করেন, এরা ছাড়া পেল প্রভাব খাটাতে পারেন। মামলা বন্ধও হয়ে যেতে পারে। কিন্তু তাঁকে আশ্বস্ত করে ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি বলেন, মামলা চলবে।

‘এখন কেন গ্রেফতার করা হল?’

‘চার নেতা-মন্ত্রীকে এত দিন কেন সিবিআই গ্রেফতার করেনি?’ বিচারপতি অরিজিৎ মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘এই চার জন আগেও প্রভাবশালী ছিলেন। এখন কেন গ্রেফতার করা হল। সাধারণত তদন্তের স্বার্থেই অভিযুক্তদের গ্রেফতার করা হয়ে থাকে। আগেও তো এঁরা প্রভাবশালীই ছিলেন। তবে এখন চার্জশিট জমা দেওয়ার পর গ্রেফতার করা হল কেন?’

কী বললেন আইনজীবী তথা তৃণমূল সাংসদ কল্যান বন্দ্যোপাধ্যায়?

পুনর্বিবেচনার যে আবেদন জানানো হয়েছিল সেটার প্রথমে শুনানি হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু মূল মামলার সঙ্গে পয়েন্টগুলির মিল থাকায় একসঙ্গে শোনা হয় সেই আবেদন। আমরা বলেছিলাম, ‘এত দিন ধরে গৃহবন্দি করে রাখা যায় না।’ তুষার মেহতা সেই আবেদনের বিরোধিতা করেন। পরে বিচারপতিরা জামিনের পক্ষেই রায় দেন। তবে কয়েকটি শর্ত দেওয়া হয়েছে।