Anubrata Mondal On Mukul Roy: একবার একান্ত আলাপচারিতায় মুকুলের একটি কথায় বিস্মিত হয়েছিলেন অনুব্রতও! এবার সামনে এল সেই প্রসঙ্গ
Anubrata Mondal On Mukul Roy: মুকুল রায় যে মাঝেমধ্যেই অনেক কিছু 'ভুল' বলে ফেলছেন, তার দৃষ্টান্ত তুলে ধরতে পুরনো একটি প্রসঙ্গও এদিন শেয়ার করেন অনুব্রত মণ্ডল।
কলকাতা: “এই মুকুল দা আর সেই মুকুল দা নেই।” শুক্রবার শান্তিনিকেতনে অনুব্রত মণ্ডলের পাশে দাঁড়িয়ে যে অসংলগ্ন কথা মুকুল রায় বলেছিলেন, তাতে অস্বস্তিতে পড়েছে ঘাসফুল শিবির। ড্যামেজ কন্ট্রোলে এবার ময়দানে নাম অনুব্রত মণ্ডল।
অনুব্রত মণ্ডলের প্রতিক্রিয়া
TV9 বাংলাকে অনুব্রত মণ্ডল বলেন, “এই মুকুল দা সেই মুকুল দা নয়। ভারসাম্য নেই। মুকুল দা সত্যিই অসুস্থ। কখন কী বলে ফেলছেন, নিজেই জানেন না। ওঁ যা বলেছেন সেগুলো দলের কথা নয়। ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করি মুকুল দা দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠুন।”
মুকুল রায় যে মাঝেমধ্যেই অনেক কিছু ‘ভুল’ বলে ফেলছেন, তার দৃষ্টান্ত তুলে ধরতে পুরনো একটি প্রসঙ্গও এদিন শেয়ার করেন অনুব্রত মণ্ডল। তিনি বলেন, “মুকুল দা বোলপুরে এসে আমাকে বললেন কেষ্ট তুই কি এই মাঠটা কিনে নিয়ে মেলা করছিস? অথচ এই মাঠে মুকুল দা কত সভা করেছেন!”
কী বলেছিলেন মুকুল রায়?
মুকুল রায় শান্তিনিকেতনে দাঁড়িয়ে শুক্রবার বলেছেন, এই পুরসভা নির্বাচনে সারা বাংলায় বিপুল ভাবে ভারতীয় জনতা পার্টি জয়ী হবে।’ কথাগুলি যখন বলেছেন, পাশে দাঁড়ানো সকল তৃণমূল কর্মী-নেতা তখন স্তম্ভিত, বিস্মিত। তাঁদের মধ্যে কয়েকজন তাঁকে ‘তৃণমূল’ বলে ভুল ধরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন। সে সময় তিনি সংযোজন করেন আরও একটি উক্তি। বলেন, “হ্যাঁ, ভারতীয় জনতা পার্টি মানেই তৃণমূল।” তাতে বিভ্রান্তি, জটিলতা বাড়ে আরও।
মুকুলের বিভ্রান্তিমূলক মন্তব্য
প্রসঙ্গত, এর আগেও কৃষ্ণনগরের তৃণমূলের সাংগঠনিক সভায় গিয়ে বলেছিলেন, “ভারতীয় জনতা পার্টির পক্ষ থেকে আমি বলতে পারি তৃণমূল পর্যুদস্ত হবে। এই কৃষ্ণনগরে স্বমহিমায় নিজেদের প্রতিষ্ঠা করবে বিজেপি। নিজের ক্ষমতায় নিজেদের প্রতিষ্ঠা করবে বিজেপি।” পরক্ষণেই তিনি ভুল বুঝতে পারেন। তবে মুখ থেকে বেরিয়ে ‘বাণ’ তখন বেরিয়ে গিয়েছে। আর তার সাতদিন পরই আবার ‘ভুল’! তিনি বলেছিলেন, কৃষ্ণনগর উত্তর কেন্দ্রে ফের প্রার্থী হলে তিনিই জিতবেন বিজেপির টিকিটে। তৃণমূলের হয়ে দাঁড়ালে কী হবে তা মানুষ ঠিক করবে! এই কথাটি আবার বলেছিলেন বিধানসভার বাইরে দাঁড়িয়েই।
মুকুল রায় একজন বিচক্ষণ রাজনীতিবিদ। তাতে রাজনীতির বিশ্লেষকরা চাণক্য উপাধি দিয়েছেন। তাই চাণক্যর মস্তিষ্কপ্রসূত বিভিন্ন রাজনৈতিক ‘পাজল গেম’ তাঁর অবস্থান নিয়েই ধন্দ তৈরি করছে! ধোঁয়াশা নাকি বিভ্রান্তি নাকি না বুঝে ভুল বুঝছেন না ভুল করে বলছেন? এসব একাধিক প্রশ্ন ঘোরাফেরা করছে রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মাথায়।
ছেলে শুভ্রাংশুর মতে
মুকুল রায়ের শারীরিক অবস্থা যে ভালো নয়, তা স্বীকার করে নিয়েছেন ছেলে শুভ্রাংশু রায়ও। TV9 বাংলাকে শুভ্রাংশু রায় বলেছেন, “বাবা সত্যি শারীরিক ভাবে অসুস্থ। ওঁ বিভিন্ন রকম কথা বলে ফেলছেন। পার্টি যা সিদ্ধান্ত নেবে তাই হবে।”
দলের বিবৃতি
প্রসঙ্গত, মুকুলের বক্তব্য নিয়ে এই প্রথম প্রতিক্রিয়া দেয় তৃণমূলও। দলের তরফে পার্থ চট্টোপাধ্যায় বিবৃতি দিয়ে জানান, “বোলপুরে মুকুল রায় যা বলেছেন, তাঁকে দল অনুমোদন দেয় না। ওঁ শারীরিক ভাবে সুস্থ নন। ভারসাম্যহীন। শারীরিক সুস্থতার কামনা করি । তাঁর কথার অনুমোদন দেয় না দল। শারীরিক অবস্থা খারাপ হলে উনি পাবলিক অ্যাকাউন্টস কমিটিতে না থাকতে চাইলে দল বিচার করবে।”
পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের কথায় জল্পনা তুঙ্গে । তবে কি এবার মুকুল রায়কে পাবলিক অ্যাকাউন্টস কমিটি থেকে সরাতে চলেছে তৃণমূল? এর আগে যখন মুকুল রায় বিতর্কিত মন্তব্য করেছিলেন, তখন কিন্তু তৃণমূল শীর্ষ নেতৃত্ব কোনও প্রতিক্রিয়া দেননি বলেই মনে করছেন বিশ্লেষকরা। এবার সেটাই দিলেন। সুতরাং মুকুল রায়ের এই বক্তব্যকে একেবারেই হেলায় উড়িয়ে দিতে চাইছেন না শীর্ষ নেতৃত্ব।