কলকাতা: বাংলাদেশের তপ্ত পরিস্থিতি। আর এই পরিস্থিতিতে ভারতেও বাাড়ছে উৎকন্ঠা। বাড়ছে অনুপ্রবেশের আশঙ্কা। তার মধ্যেও আরও একটি বিষয় নিয়ে উদ্বিগ্ন লালবাজার। রমরমিয়ে জাল বিস্তার করছে একটা চক্র। আর সে চক্র, প্রথমেই খুঁজে বার করছে ভারতের মৃত ব্যক্তিদের, বিশেষত বাংলার। কেন? তার পিছনেও গহীন কারণ। গোয়েন্দাদের দাবি, বাংলাদেশিরা ভারতে ঢুকে খুব সহজেই বানিয়ে ফেলছেন ভারতীয় পাসপোর্ট। সেই পাসপোর্ট ব্যবহার করেই আবার বিদেশে পাড়ি দিচ্ছেন তাঁরা। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, কীভাবে ভারতে ঢুকে পাসপোর্ট বানাচ্ছেন বাংলাদেশিরা?
কীভাবে জালিয়াতি বাংলাদেশিদের?
সূত্রের খবর, ভারতীয় পাসপোর্ট পেতে মৃত ব্যক্তির রেশনকার্ড ব্যবহার করছে বাংলাদেশিরা। আর তাতে মদত দিচ্ছে ভারতেরই জন প্রতিনিধি কিংবা আধিকারিকরা। এর নেপথ্যে কাজ করছে একটা বড় সিন্ডিকেট। সেই সিন্ডিকেটে পঞ্চায়েত, পুরসভা, খাদ দফতরের নীচু স্তরের জন প্রতিনিধিরা জড়িত। পুলিশেরও একাংশের যোগ থাকতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।
প্রথম ধাপ
সূত্রের খবর, প্রথমে বৈধ নথি নিয়ে এদেশে আসার পরে তাঁদেরকে দিয়ে কোনও স্থানীয় থানায় রেশন কার্ড হারিয়ে যাওয়ার জেনারেল ডায়েরি করানো হচ্ছে। এরপর স্থানীয় জন প্রতিনিধির শংসাপত্র ও সুপারিশ নিয়ে থানায় গিয়ে জেনারেল ডায়েরি হচ্ছে। এই চক্রের সঙ্গে জড়িত দালালরা আগে থেকেই মৃত ব্যক্তির রেশন কার্ডের নম্বর আগাম জোগাড় করে রাখছে। তার মধ্যে থেকে নিষ্ক্রিয় যে কোনও একটি রেশন কার্ডের নম্বর দিয়ে জিডি করা হচ্ছে। এক্ষেত্রে থানা কোনও কিছু যাচাই না করেই জেনারেল ডায়েরি নিচ্ছে। থানার দেখানো জিডি নিয়ে নতুন রেশন কার্ডের আবেদন জানানো হচ্ছে। কোনও কিছু যাচাই না করেই নিষ্ক্রিয় রেশন কার্ডের নম্বরে নতুন রেশন কার্ড ইস্যু হয়ে যাচ্ছে।
দ্বিতীয় ধাপ
আর নতুন রেশন কার্ড পেয়ে গেলেই ভোটার কার্ডের জন্য আবেদন করা হচ্ছে। এটা দ্বিতীয় পর্যায়। এরপর তৃতীয় পর্যায়। সেই ভোটার কার্ড দেখিয়ে আধার কার্ডের আবেদন করাই হল তৃতীয় পদক্ষেপ।
তৃতীয় ধাপ
ভোটার ও আধার কার্ড তৈরি হয়ে গেলেও পাসপোর্ট তৈরির জন্য আবেদন করছেন বাংলাদেশিরা। সেখানেও গোটা বিষয়টি ভালো ভাবে যাচাই হচ্ছে না।
সূত্রের খবর, এই ভাবেই ভারতের নাগরিক না হয়েও সরকারি সমস্ত নথি জোগাড় করছেন বাংলাদেশিরা। কিন্তু এভাবে জাল পোসপোর্টকাণ্ডে ফের কেন্দ্রের ঘাড়েই দায়
ঠেলেছে তৃণমূল। তৃণমূল নেতা শান্তনু সেনের বক্তব্য, পাসপোর্ট ইস্যু করে কেন্দ্র, দায় তাদেরই নিতে হবে। এদিকে, এই বিষয়টি নিয়ে ইতিমধ্যে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহর কাছে চিঠি করেছেন বিজেপি বিধায়ক শঙ্কর ঘোষ।