উপনির্বাচন করাই যাবে না! ৮ কারণ দেখিয়ে চিঠি পদ্মের, স্নায়ুর চাপ বাড়তেই কমিশনে তৃণমূলও

বর্তমান পরিস্থিতির মধ্যে কোনও ভাবেই রাজ্যে উপনির্বাচন সম্ভব নয়। ৮ টি কারণের কথা উল্লেখ করে রাজ্য বিজেপির পক্ষ থেকে এমনটাই জানানো হয়েছে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বকে।

উপনির্বাচন করাই যাবে না! ৮ কারণ দেখিয়ে চিঠি পদ্মের, স্নায়ুর চাপ বাড়তেই কমিশনে তৃণমূলও
উপনির্বাচন নিয়ে স্নায়ুর লড়াই চরমে
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Aug 25, 2021 | 7:52 PM

কলকাতা: মুখ্যমন্ত্রিত্বের মেয়াদ ফুরিয়ে আসছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। কিন্তু উপনির্বাচন নিয়ে নির্বাচন কমিশনের কোনও হেলদোলই নেই। এই অবস্থায় ক্রমশ স্নায়ুর চাপ বাড়ছে রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেসের উপর। সূত্রের খবর, ঠিক সেই কারণেই চলতি সপ্তাহে দিল্লিতে নির্বাচন কমিশনের কাছে দরবার করতে চলেছে এ রাজ্যের শাসকদল। যদিও পদ্মশিবির মনে করছে, বর্তমান পরিস্থিতির মধ্যে কোনও ভাবেই রাজ্যে উপনির্বাচন সম্ভব নয়। ৮ টি কারণের কথা উল্লেখ করে রাজ্য বিজেপির পক্ষ থেকে এমনটাই জানানো হয়েছে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বকে। এমনটাই খবর বিজেপি সূত্রে।

কিন্তু কেন এখন উপনির্বাচনের আয়োজন করা যাবে না? এর পিছনে মূলত ৮ টি তত্ত্ব খাড়া করেছ বঙ্গ বিজেপি। ৮ দফা যুক্তি দেখিয়ে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বকে চিঠি দিয়েছেন রাজ্য নেতৃত্ব। যে যে কারণে উপনির্বাচন করার বিরুদ্ধে বিজেপি, রইল তারই তালিকা।

১. রাজ্যে করোনা পরিস্থিতি চলছে ২. রাজ্যে লোকাল ট্রেন বন্ধ, বাস চলছে কম লোক নিয়ে ৩. সেপ্টেম্বর-অক্টোবর মাসের মধ্যেই তৃতীয় ঢেউ আসার আশঙ্কা রয়েছে ৪. অক্টোবর মাস হল পুজো এবং উৎসবের মাস ৫. পশ্চিমবঙ্গ সরকারই এখানে কোভিড সংক্রান্ত বিধিনিষেধ লাগু করে রেখেছে। বিজেপিকে যে কোনও কর্মসূচিতে বাধা দেওয়া হচ্ছে ৬. দিলীপ ঘোষ, শুভেন্দু অধিকারী, দেবশ্রী চৌধুরী-সহ শীর্ষ বিজেপি নেতাদের পুলিশ গ্রেফতার করেছিল জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা আইন প্রয়োগ করে ৭. করোনার দোহাই দিয়ে রাজ্য সরকার নিজেই ১২২টি পুরসভার নির্বাচন আটকে রেখেছে ৮. রাজ্যে যে সরকার চলছে, তার পূর্ণ সংখ্যাগরিষ্ঠতা রয়েছে, ৭ টি বিধানসভা আসনে উপনির্বাচন না হলেও সরকারের কোনও সংকট নেই, সুতরাং উপনির্বাচন এখন অপরিহার্য নয়।

মূলত এই আটটি বিষয় তুলে ধরে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বকে চিঠি দিয়েছে রাজ্য বিজেপি। চলতি মাসেই উপনির্বাচনের বিষয়ে বিভিন্ন দলের মতামত জানতে চেয়ে চিঠি দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। সূত্রের খবর, বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্বই কমিশনে যাবেন মতামত জানাতে। তবে তার আগেই রাজ্য বিজেপির তরফ থেকে এই চিঠি পৌঁছল দিল্লিতে। বিজেপি সূত্রে খবর, শিবপ্রকাশ এই চিঠি দিয়ে নিয়ে দিল্লি পৌঁছে যাচ্ছেন। নির্বাচন কমিশনকেও এই বিষয়গুলিই জানানো হবে।

চলতি সপ্তাহেই দ্রুত উপনির্বাচনের দাবিতে কমিশনে যাবে তৃণমূলও। সূত্রের খবর, তৃণমূলের সাংসদদের এক প্রতিনিধিদল ৭ বিধানসভা কেন্দ্রের কোভিড সংক্রমণের রিপোর্ট সঙ্গে নিয়ে কমিশনে যাবেন। যেখানে কমিশনের কাছে আবেদন জানানো হবে, যেহেতু এই কেন্দ্রগুলি-সহ বাকি রাজ্যের কোভিড পরিস্থিতি স্বাভাবিক, তাই দ্রুত উপনির্বাচনের আয়োজন করা হোক। নিজেদের দাবি আরও মজবুত করতে গত বিধানসভা নির্বাচন চলাকালীন রাজ্যের করোনা পরিস্থিতির সঙ্গে বর্তমান পরিস্থিতির তুলনামূলক চিত্রও পেশ করা হবে তৃণমূলের পক্ষ থেকে।

উল্লেখ্য, গত ৬ মে তৃতীয়বার মুখ্য়মন্ত্রীর পদে শপথ নিয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। যেহেতু তিনি ভোটে পরাজিত, তাই নিয়ম অনুযায়ী আগামী ৬ মাস, অর্থাৎ ৫ নভেম্বরের মধ্যে তাঁকে নির্বাচনে জয়ী হতে হবে মুখ্যমন্ত্রীর চেয়ার টিকিয়ে রাখতে। উপনির্বাচন নিয়ে তাই স্বাভাবিকভাবেই তৃণমূলের তৎপরতা বোধগোম্য। পক্ষান্তরে বিজেপি যেভাবে হোক উপনির্বাচন আটকে দিতে চাইছে। যাতে সরকার না ফেলতে পারলেও কমপক্ষে মুখ্যমন্ত্রীকে গদিচ্যুত করা হয়। এই অবস্থায় কেন্দ্রীয় নেতৃত্বকে দেওয়া বঙ্গ বিজেপির এই চিঠি যে তৃণমূলের উপর চাপ কিঞ্চিৎ হলেও বাড়াবে, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। আরও পড়ুন: ‘মুখ্যমন্ত্রী থাকার জন্য মমতা পাগল হয়ে যাচ্ছেন,’ উপনির্বাচন প্রসঙ্গে কটাক্ষ দিলীপের