কলকাতা: ২০২৬ সালের ভোট প্রচারের রোড ম্যাপ কি হবে, তার দিশা কি দেখিয়ে দিল বঙ্গ বিজেপি? ছবি দেখে রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের প্রশ্ন, বিজেপি নেতারা কী একপ্রকার বুঝিয়ে দিতে চাইছেন হিন্দু প্রবণ এলাকায় জয়ের চেষ্টাই বেশি করে করতে চলেছেন তাঁরা? আর সংখ্যালঘু অধ্যুষিত এলাকায় নমো নমো করে প্রচার সারবেন? যেন এ লাইনের সঙ্গে সাযুজ্য রেখেই উপভোটের প্রচার করলেন বঙ্গ বিজেপির নেতৃত্ব। মাদারিহাট, তালডাংরা, মেদিনীপুর আর নৈহাটিতে প্রচারে দেখা গেল শুভেন্দু অধিকারী, সুকান্ত মজুমদার, দিলীপ ঘোষ, শমীক ভট্টাচার্যদের। কিন্তু, বিজেপির প্রচারে ব্রাত্য থাকল দুই সংখ্যালঘু অধ্যুষিত বিধানসভা।
সংখ্যালঘু এলাকায় দলের সংগঠন নড়বড়ে। সেখানে ভাল ভোট পাওয়ার আশা কি কম? তাই কি সংখ্যালঘু অধ্যুষিত হাড়োয়া বিধানসভার প্রচারে নেই দলের শুভেন্দু অধিকারী, সুকান্ত মজুমদার, দিলীপ ঘোষের মতো বঙ্গ বিজেপির শীর্ষ নেতারা? তাই কি সিতাইয়ে নৈব নৈব চ করে অল্প সময়ের জন্য দিলীপ ঘোষ প্রচার সারলেও বাকি কোনও নেতার দেখা পাওয়া যায়নি উপভোটের প্রচারে। ঘনিষ্ঠ মহলে এ রাজ্যের বিজেপির প্রধান এক মুখ বলেছেন, হাড়োয়া আর সিতাইয়ে বিজেপি কিছু করার নেই। সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন হলেও ওই দুটি আসনে কিছুই করা যাবে না। ফলে সেখানে বাড়তি গুরুত্ব দেওয়া অর্থহীন। নড়বড়ে অবস্থার মধ্যে শক্তিহীন এলাকায় শক্তি ক্ষয় করার কোনও অর্থ হয় না।
শুধুই কি তবে হিন্দুত্বের ধ্বজা উড়িয়ে এ রাজ্যে ভোটে সাফল্য পেতে চান শুভেন্দু অধিকারী, সুকান্ত মজুমদাররা। তাই কি উপভোটে সংখ্যালঘু অধ্যুষিত দুই বিধানসভাকে গুরুত্ব দিলেন না তাঁরা? প্রশ্ন ক্রমেই জোরাল হচ্ছে। জুলাই মাসে দলের বর্ধিত কার্যকারিণী বৈঠকে শুভেন্দু অধিকারী স্পষ্টই বলেছিলেন দলে সংখ্যালঘু মোর্চার দরকার নেই। সবার বিকাশের কথা বলার পরিবর্তে যাঁরা বিজেপির সঙ্গে আছেন, বিজেপি তাঁদের সঙ্গে থাকবে। তা নিয়ে বিতর্ক হয়েছিল। সরাসরি আর সেই ধরনের কোনও মন্তব্য না করলেও গত কয়েক মাস ধরে বাংলাদেশের হিন্দুদের উপর আক্রমণ কিংবা বঙ্গে পুজোকে কেন্দ্র করে অশান্তির ঘটনায় নানা কর্মসূচি নিয়েছেন শুভেন্দু অধিকারী, সুকান্ত মজুমদাররা। কখনও তা দলের ব্যানারে, কখনওবা আবার অন্য কোনও সংগঠনের নামে।
এহেন আবহেই রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, উপভোটের প্রচারেই স্পষ্ট এ রাজ্যে কিভাবে, কোন পথে রাজনীতি করতে চান পদ্ম শিবির, তা একবারেই স্পষ্ট। সে কারণেই হাড়োয়া, সিতাইয়ের মতো বিধানসভায় প্রচারে গেলেন না বঙ্গ বিজেপির হেভিওয়েট নেতারা।